ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

লক্ষ্য চীনের প্রভাব রোধ

প্রকাশিত: ০৩:৩৩, ১৪ মার্চ ২০১৫

লক্ষ্য চীনের প্রভাব রোধ

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির শ্রীলঙ্কা সফরকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আবারও উন্নত করার প্রয়াস হিসেবে দেখা হচ্ছে। কারণ ভারত তার দোরগোড়ায় চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব রোধ করতে চায়। খবর ইয়াহু নিউজের। ভারত মহাসাগরীয় দ্বীপ দেশ সিসেলস ও মরিশাস সফর শেষে মোদি শুক্রবার শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বো পৌঁছান। তিন দশক ধরে দুটি দেশের মধ্যে অস্থির সম্পর্ক চলার পর তিনি এ সফরে গেলেন। শ্রীলঙ্কায় জাতিগত বিচ্ছিন্নতাবাদী সংঘাতের কারণেই বহুলাংশে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহিন্দ রাজা পাকসের নয় বছরের শাসনের শেষ সময়কালে সম্পর্কের আরও অবনতি ঘটে। তাঁর চীনঘেঁষা নীতি ঐ অঞ্চলে ভারতের প্রভাবের প্রতি হুমকির সৃষ্টি করেছিল। জানুয়ারিতে মৈত্রীপালা সিরিসেনার হাতে রাজা পাকসের নির্বাচনী পরাজয় ঐ ধারাকে পাল্টে দেয়, বিশেষত যখন সিরিসেনা তাঁর প্রথম সরকারী সফরের জন্য ভারতকে বেছে নেন। শ্রীলঙ্কা সরকার চীনা অর্থপুষ্ট অবকাঠামো উন্নয়ন ও পর্যালোচনা করছে এবং ১৫০ কোটি ডলার ব্যয় সাপেক্ষ কলম্বো পোর্ট সিটি প্রকল্প স্থগিত করেছে। এর কারণ হিসেবে পরিবেশগত সমস্যা ও কথিত দুর্নীতির কথা উল্লেখ করা হয়। পশ্চিম উপকূলের অদূরে পুনরুদ্ধার করা ভূমিতে একটি শহর নির্মাণ করার ঐ প্রকল্পটিকে শ্রীলঙ্কায় চীনা প্রভাবের বহির্প্রকাশ হিসেবে দেখা হয়েছিল। সেপ্টেম্বরে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সফরকালে ঐ প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়। মোদি চলতি সপ্তাহে তার অফিসিয়াল টুইটার এ্যাকাউন্টে তার লক্ষ্য সম্পর্কের উন্নতি ঘটানো বলে জানান। তিনি বলেন, আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে প্রায়শ যোগাযোগ বজায় রাখাও এ সফরের লক্ষ্য। আমাদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী দেশ সফরের সুযোগ পেয়ে আমি আনন্দিত। মোদি তার তিন দিনের সফরকালে সিরিসেনা ও প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করবেন এবং পার্লামেন্টে ভাষণ দেবেন। তিনি শ্রীলঙ্কার উত্তরাঞ্চলীয় তামিল অধ্যুষিত জাফনায় একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্রও উদ্বোধন করবেন। দু’পক্ষ বাণিজ্য সম্প্রসারণ, শ্রীলঙ্কার যুদ্ধোত্তর পুনর্বাসন ও সমঝোতা এবং সবচেয়ে বিরোধপূর্ণ মাছ শিকারের ইস্যু নিয়ে কথা বলবেন বলে মনে হয়। শি জিনপিং তাঁর সফরকালে এক নতুন নৌ ‘সিল্ক রোড’ খোলার বিষয়ে শ্রীলঙ্কা ও প্রতিবেশী মালদ্বীপের কাছ থেকে সমর্থন লাভ করেন। একে ভারতকে ঘিরে ফেলা এবং জ্বালানি সমৃদ্ধ পারস্য উপসাগরের সঙ্গে পূর্ব চীনের অর্থনৈতিক কেন্দ্রস্থলগুলোর সংযোগ সাধনকারী সমুদ্র পথ বরাবর বন্দরগুলোতে প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণের উপায় হিসেবে দেখা হয়। চীন ও শ্রীলঙ্কা দীর্ঘদিন ধরেই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখে এসেছে। বেজিং তামিল বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে শ্রীলঙ্কার গৃহযুদ্ধকালে অস্ত্র সরবরাহ করলে ঐ সম্পর্ক আরও জোরদার হয়। চীন জাতিসংঘেও ঐ গৃহযুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘন করার অভিযোগের বিরুদ্ধে শ্রীলঙ্কাকে সব সময়েই সমর্থন দিয়ে এসেছে। চীন মহাসড়ক, সমুদ্র বন্দর, বিমানবন্দর ও বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ করে এর উপস্থিতি বাড়িয়েছে।
×