
ছবি: সংগৃহীত
চব্বিশ ঘণ্টা না কাটতেই ভারতে ফের বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বিশিষ্ট পাকিস্তানি ব্যক্তিদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাকাউন্টগুলো। আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে পাকিস্তানি অভিনেতা-অভিনেত্রী, খেলোয়াড়সহ বেশ কিছু সংবাদমাধ্যমের ইউটিউব চ্যানেল আর দেখা যাচ্ছে না। গতকাল বুধবার এসব চ্যানেলের ওপর জারি হওয়া নিষেধাজ্ঞা সাময়িকভাবে শিথিল করা হলেও, আজ সকাল থেকেই সেগুলো আবার অদৃশ্য হয়ে গেছে।
বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জনপ্রিয় এসব অ্যাকাউন্ট সরকারিভাবে আবার নিষিদ্ধ করা হয়েছে কি না, সে বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনো তথ্য এখনো জানা যায়নি। তবে চ্যানেলগুলো খুলতে গেলে তাতে লেখা দেখাচ্ছে—'আইনগত দাবির দরুন এই অ্যাকাউন্ট ভারতে বন্ধ রাখা হয়েছে।'
এর আগে 'পেহেলগাম হত্যাকাণ্ড' এবং 'অপারেশন সিঁদুরের' ঘটনার পর ভারতে এসব পাকিস্তানি চ্যানেল ও অ্যাকাউন্টের সম্প্রচার নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। অভিযোগ ছিল, ওই চ্যানেলগুলো ভারতের বিরুদ্ধে নানা ধরনের প্ররোচনামূলক খবর ও অভিমত প্রচার করছে।
আজ সকাল থেকে পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার শোয়েব আখতার, শাহিদ আফ্রিদি, অভিনেত্রী মাহিরা খান, হানিয়া আমির, মাওরা হোসেন, ইয়মুনা জায়েদি, অভিনেতা ফাওয়াদ খানের ইউটিউব চ্যানেল, ইনস্টাগ্রাম কিংবা 'এক্স' অ্যাকাউন্ট আর দেখা যাচ্ছে না। এক মাস বন্ধ থাকার পর গত বুধবার যখন মনে করা হচ্ছিল নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছে, তখন নতুন করে তা অদৃশ্য হওয়ার মধ্য দিয়ে মনে করা হচ্ছে চ্যানেলগুলো আবার নিষেধাজ্ঞার আওতায় চলে গেছে। গতকাল বুধবার ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতামতের ভিত্তিতে কিছু অ্যাকাউন্ট চালু হয়েছিল। চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে এই মতবদল নিয়ে সরকারিভাবে অবশ্য এখনো কিছু জানানো হয়নি।
ভারতের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক প্রচারের অভিযোগে বন্ধ করে দেওয়া চ্যানেলগুলোর মধ্যে ছিল ডন নিউজ, সামা টিভি, বোল নিউজ, রফতার, জিয়ো নিউজ, সুনো নিউজ, এআরওয়াই নিউজ, দ্য পাকিস্তান এক্সপেরিয়েন্সের মতো জনপ্রিয় নিউজ পোর্টালের ইউটিউব চ্যানেল। এছাড়াও, আরজু কাজমি, ওয়াসে হাবিব, আলী জাফর, মুনিব ফারুক, উমর চিনাদের মতো জনপ্রিয় ইউটিউবারদের ইনস্টাগ্রাম চ্যানেলও 'অপারেশন সিঁদুরের' পর ব্লক করে দেওয়া হয়েছিল।
বুধবার কিছু চ্যানেল 'আনব্লক' হওয়ার পর অল ইন্ডিয়ান সিনে ওয়ার্কার্স অ্যাসোসিয়েশন (এআইসিডবলিউএ) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে অনুরোধ করেছিল, পাকিস্তানের সব শিল্পীর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের চ্যানেল ভারতে নিষিদ্ধ করা হোক। হিন্দুত্ববাদী শিল্পী ও বিনোদনজগতের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের অনেকে পাকিস্তানি শিল্পীদের ভারতীয় সিনেমায় অংশগ্রহণেরও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। 'পেহেলগাম-কাণ্ড' ও 'অপারেশন সিঁদুরের' আগে তৈরি হয়ে যাওয়া দিলজিৎ দোসাঞ্জের সিনেমা 'সর্দারজি ৩'-এর মুক্তিও স্থগিত রাখা হয়েছে, কারণ ওই সিনেমায় পাকিস্তানি অভিনেত্রী হানিয়া আমির অভিনয় করেছেন। জাভেদ আখতার, নাসিরুদ্দিন শাহের মতো বিশিষ্ট ব্যক্তি দিলজিৎ দোসাঞ্জের পাশে দাঁড়ানোয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিন্দিত হচ্ছেন এবং তাঁদের 'পাকিস্তানের দালাল' বলা হচ্ছে। এই ঘটনা দুই দেশের মধ্যে প্রযুক্তি ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রে চলমান উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস
সাব্বির