ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আল আমিন ফেরায় কপাল খুলল শফিউলের

প্রকাশিত: ০৬:৫৪, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

আল আমিন ফেরায় কপাল খুলল শফিউলের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ইনজুরি, ফর্মহীনতা ইত্যাদি কারণে দীর্ঘদিন দলের বাইরে ছিলেন পেসার শফিউল ইসলাম। সে কারণে তাঁর জায়গা হয়নি এবার বিশ্বকাপ দলেও। তবে স্ট্যান্ডবাই হিসেবে তাঁকে রাখা হয়েছিল। অবশেষে ভাগ্যদেবী পাশে দাঁড়িয়েছে তার। ১৫ সদস্যের বিশ্বকাপ স্কোয়াডে থাকা পেসার আল আমিন হোসেন ফিরেছেন অস্ট্রেলিয়া থেকে। শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ নিয়ে বিশ্বকাপে কোন ম্যাচ না খেলেই ফিরতে হচ্ছে তাঁকে। ২৫ বছর বয়সী শফিউল সোমবার রাতেই অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন দলের সঙ্গে যোগ দেয়ার জন্য। দারুণ ভাগ্যবান তিনি। এবার ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় বিশ্বকাপে অংশ নেয়ার সুযোগ পেলেন শফিউল। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) থেকে জানানো হয়েছে তাঁকে আল আমিনের বদলি হিসেবে পাঠানোর অনুমতি দিয়েছে আইসিসি। আল আমিনের ঘটনা তাঁর জন্য দুর্ভাগ্য বলা যাবে না। নিজের খেয়াল খুশিমতো চলতে গিয়ে নিয়ম ভঙ্গ করেছেন তিনি। রাত ১০টার পর টিম হোটেলের বাইরে যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তিনি সেটা মানেননি। বিশেষ কারণে যাওয়ার প্রয়োজন থাকলে টিম ম্যানেজমেন্টের কাছে অনুমতি নেয়া অত্যাবশ্যক সেটাও করেননি। তবে টিম ম্যানেজমেন্ট বিষয়টি ধরতে পারেনি। আইসিসির দুর্নীতি দমন বিভাগ (আকসু) জানানোর পর তৎক্ষণাৎ আল আমিনকে দেশে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কারণ রাত ১০টার পর কোথায় ছিলেন সেটার কোন সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি। নিজের ভাগ্যাকাশে নিজেই কালো মেঘে ছেয়ে দিয়েছেন তিনি। সোমবার দুপুরেই অস্ট্রেলিয়া থেকে দেশে ফেরার বিমানে ওঠেন আল আমিন। তাঁর পরিবর্তে স্ট্যান্ডবাই হিসেবে থাকা শফিউলকে স্কোয়াডে নেয়ার জন্য আইসিসির কাছে অনুমোদনের আবেদন করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। গতকাল রাতেই অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন ২০১১ বিশ্বকাপ খেলা এ পেসার। গত বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে শেষ মুহূর্তে ব্যাট হাতে ২৪ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছিলেন। তাঁর ক্ষুদ্র ওই ইনিংসটি বৃহৎ শক্তি ইংলিশদের ভরাডুবির কারণ হয়েছিল। হেরে গিয়েছিল ইংল্যান্ড। তারপর থেকেই বাংলাদেশের ক্রিকেটে একটি জনপ্রিয় নাম শফিউল। তবে দীর্ঘদিন ইনজুরির কারণে জাতীয় দলের বাইরে ছিলেন। এছাড়া ফর্মটাও পড়ে গিয়েছিল। তাঁর অনুপস্থিতিতে আল আমিন ও তাসকিন আহমেদরা আলো ছড়িয়ে জায়গা করে নেন দলে। অবশ্য গত বছরের গোড়ার দিকে এশিয়া কাপে দীর্ঘ ১১ মাস পর ফিরেছিলেন দলে। কিন্তু তেমন সুবিধা করতে পারেননি। দুই ম্যাচ খেলার পর আবার দলের বাইরে চলে গিয়েছিলেন। বছরজুড়ে বাংলাদেশ দলও খুব বাজে সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল। তবে একেবারে বছরের শেষদিকে জিম্বাবুইয়ের বিরুদ্ধে হোম সিরিজে আবারও ফেরেন শফিউল। তবে ৫ ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের তৃতীয়টিতে ফিরলেও ভাল করতে পারেননি। তাই আর খেলার সুযোগ পাননি। সিরিজ শেষে প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগে নিজেকে মেলে ধরেন। তবে ফর্মহীনতা এবং আল আমিন-তাসকিনদের উত্থানের কারণে বিশ্বকাপ দলে সুযোগ পাওয়া হয়নি। অতিরিক্ত খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপ স্কোয়াডের বাইরে ছিলেন। অবশেষে ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয়েছে তাঁর। আল আমিন শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে নিজের পায়ে নিজেই কুঠারাঘাত করেছেন। তাঁকে দেশে ফিরতে হয়েছে। আর শফিউল রওনা হয়েছেন অস্ট্রেলিয়ায়। তাঁকে দলে অন্তর্ভুক্ত করার ব্যাপারে আইসিসি অনুমতি দিয়েছে বলে জানিয়েছেন বিসিবি কর্মকর্তারা। গত বিশ্বকাপে প্রথম অংশ নিয়েছিলেন শফিউল। ৬ ম্যাচেই খেলে নিয়েছিলেন ৬ উইকেট। এর মধ্যে আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে বিধ্বংসী বোলিং করে ২১ রানে ৪ উইকেট শিকার করে তিনিই ছিলেন জয়ের নায়ক। সেটিই তাঁর ওয়ানডেতে ক্যারিয়ার সেরা বোলিং। ৫২ ওয়ানডে খেলে শফিউল ৫৮ উইকেট শিকার করেছেন ৩৬.৩৬ গড়ে।
×