ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিশ্বসেরা সাকিবের বিশ্বকাপ লড়াই

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

বিশ্বসেরা সাকিবের বিশ্বকাপ লড়াই

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বিশ্বকাপ ক্রিকেট মাতাবে কারা? সাবেক গ্রেট ক্রিকেটার কিংবা যে কেউ এ বিবেচনায় বসলে একটি নাম সবার তালিকাতেই থাকছে। তিনি বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশের গর্ব সাকিব আল হাসান। সব ফরমেটেই এখন বিশ্বসেরা এ অলরাউন্ডারের বিশ্বকাপ শুরু হচ্ছে আজ। বিশ্বকাপে ব্যাট-বলের লড়াই আজ নামছে বাংলাদেশও। প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান। যে দুটি দলের বিপক্ষে বাংলাদেশ এবার বিশ্বকাপে জিততে পারে আশা করা হচ্ছে, সেই দলের একটি আফগানিস্তান। আরেকটি, স্কটল্যান্ড। এ আফগানদের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়েই আজ বাংলাদেশের বিশ্বকাপ মিশন শুরু হচ্ছে। যে মিশনে থাকছেন সাকিবও। এশিয়া কাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে হেরেছে বাংলাদেশ। সেবার ছিলেন না সাকিব। এবার থাকছেন। এ সাকিবের দিকেই এখন সবার দৃষ্টি। বাংলাদেশকে জিততে হলে যে সাকিবকেই বিশেষ কিছু করতে হবে, তা সবারই জানা। আজকের ম্যাচটিতে তো সাকিবের বিশেষ কিছু করেই দেখাতে হবে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে যে জিততেই হবে। না জিতলে যে বাংলাদেশকে নিয়ে ‘হায় হায়’ রব উঠে যাবে। সাকিব তাই যেন বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের একটু নির্ভার থাকার ইঙ্গিতই দিচ্ছেন। নিজের ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখে দিয়েছেন, ‘আমরা আমাদের জাতীয় রং অনেক গর্ব ও আশা নিয়ে পড়ি। বুক ভরা সাহস আর শক্তি নিয়ে খেলব, আপনাদের অফুরন্ত ভালবাসা এবং সীমাহীন প্রার্থনা মনে রেখে। দেশকে গর্বিত করার জন্য সেই শক্তি ও সাহস যেন খোদা আমাদের দেন।’ দেশকে অনেকবারই গর্বিত করেছেন সাকিব। এবারও সাকিবের মাধ্যমেই দল জিতুক, সেই প্রত্যাশা সবার। বাংলাদেশ কোচ চন্দিকা হাতুরাসিংহেও সেই আশাই যেন করছেন। বলেছেন, ‘আমাদের আছে সব ফরমেটেই বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। আমাদের দলের সেরা ক্রিকেটার সে। সে প্রধান ভূমিকায় এবং সামনে থেকেই দলকে নেতৃত্ব দিয়ে যাবে সেই আশা করছি। মেলবোর্ন রেনিগেডসে (বিগব্যাশে) খেলেছে সাকিব। সে অনেক ভাল ব্যাটসম্যান। চালাক বোলারও।’ বিশ্বকাপের আগে অস্ট্রেলিয়ার বিগব্যাশে খেলেন সাকিব। মনে করা হচ্ছে, বিগব্যাশে খেলে যে অভিজ্ঞতা কুড়িয়েছেন তা বিশ্বকাপেও কাজে দেবে। কিন্তু প্রস্তুতি ম্যাচগুলোতে সাকিব নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি। অস্ট্রেলিয়া একাদশের বিপক্ষে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচে ১ উইকেট ও মোট ১৬ রান করেছেন। পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে ১ উইকেট ও ৩১ রান নিয়েছেন। আর আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তুতি ম্যাচে ১ উইকেট ও ৮ রান নিয়েছেন। এখন সাকিবের সামনে মূল পর্বে খেলতে নামার পালা। সাকিব অবশ্য বলেছেন, ‘আমার সুবিধে হয়েছে ২০ দিন আগেই অস্ট্রেলিয়ায় এসেছি। ট্রেইনিং করেছি। আমি অনেক অভিজ্ঞতাও অর্জন করেছি। তবে প্রস্তুতিটাই গুরুত্বপূর্ণ। মেলবোর্ন রেনিগেডসে খেলার সময়, অনুশীলনের সময় যে অভিজ্ঞতাগুলো অর্জন করেছি তা বাংলাদেশ দলের সবাইকেই জানাব। সবাই উপকৃত হবে। আমি অনেক মাঠে খেলেছি। আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়েও নিয়েছি। আমি বিগব্যাশের অভিজ্ঞতা বিশ্বকাপেও কাজে লাগানোর চেষ্টা করব।’ সাকিব অবশ্য এখন পর্যন্ত সেই অভিজ্ঞতা প্রস্তুতি ম্যাচগুলোতে কাজে লাগাতে পারেননি। এমনকি সাকিব যে এর আগে দুইবার বিশ্বকাপ খেলেছেন, সেখানেও খুব উজ্জ্বলতা ছড়াতে পারেননি। ২০০৭ সালের বিশ্বকাপে ৯ ম্যাচ খেলে দুটি অর্ধশতক করতে পেরেছেন। আর ২০০১ সালের বিশ্বকাপে ৬ ম্যাচ খেলে একটি অর্ধশতক করতে পেরেছেন। ২০০৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজে হওয়া বিশ্বকাপে ৯ ম্যাচে ২৮.৮৫ গড়ে ২০২ রানের সঙ্গে ৭ উইকেট নিয়েছেন। আর বাংলাদেশে ২০১১ সালের বিশ্বকাপে ৬ ম্যাচ খেলে ২৩.৬৬ গড়ে ১৪২ রান করার সঙ্গে নিয়েছেন ৮ উইকেট। বিশ্বকাপের মতো বড় আসরে সাকিবের কাছ থেকে আহামরি কোন নৈপুণ্য মিলেনি। এবার সাকিব অনেক পরিণত, সব ফরমেটে বিশ্বসেরাও। আশা করা হচ্ছে, বিশেষ কিছু করে দেখাবেন। আজ থেকেই শুরু হয়ে যাচ্ছে বিশ্বসেরা সাকিবের বিশ্ব মাতানো কিছু করার মিশন। শুরু হচ্ছে সাকিবের বিশ্বকাপ মিশনও।
×