ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

যাত্রী বাঁচাতে যানবাহনে অগ্নিনির্বাপক

প্রকাশিত: ০৫:১৪, ২৬ জানুয়ারি ২০১৫

যাত্রী বাঁচাতে  যানবাহনে অগ্নিনির্বাপক

শংকর কুমার দে ॥ সর্বনাশা পেট্রোল বোমার আগুনে পুড়িয়ে মারার হাত থেকে রক্ষা করার জন্য যানবাহনে ‘অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র’ স্থাপন ও সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। প্রথম পর্যায়ে পুলিশের গাড়িতে এই যন্ত্র স্থাপনের কাজ করা হবে। পর্যায়ক্রমে বেসরকারী যানবাহনে স্থাপন করা হবে এই যন্ত্র। ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) এই ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে। ডিএমপি সূত্রে এ খবর জানা গেছে। সূত্র জানায়, বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের ২০ দিনের টানা অবরোধে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ, পেট্রোল ঢেলে যানবাহনে আগুন দেয়ায় ৩০ জন জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মারা গেছে। আহত হয়েছে শতাধিক। তিন শতাধিক যানবাহন পুড়ে গেছে। পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ ও পেট্রোল ঢেলে আগুন দেয়ার পর যাতে দ্রুত আগুন নেভানো যায় এবং আগুন নিভিয়ে যাত্রীদের রক্ষা করা যায় এ জন্য এই ধরনের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। সূত্র জানায়, গত বছর যখন যুদ্ধাপরাধীর বিচার বাধাগ্রস্ত করতে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ ও পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে যানবাহন পুড়িয়ে মানুষজনকে জীবন্ত দগ্ধ করে হত্যাযজ্ঞ শুরু হয় তখন যানবাহনে অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র স্থাপনের পরিকল্পনা করা হয়। পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ ও পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে মানুষজন পুড়িয়ে মারার কাজটি শুরু করে প্রথম জামায়াতÑশিবির। যুদ্ধাপরাধীর বিচার বাধাগ্রস্ত করতে প্রথমে আগুনে পুড়িয়ে মারার জন্য অগ্নিসংযোগ, বোমাবাজি, ককটেল নিক্ষেপের মাধ্যমে নাশকতা নৈরাজ্য শুরু করে তারা। তাদের এই নাশকতা ও নৈরাজ্য সৃষ্টির আক্রমণ থেকে রক্ষা পায়নি পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাবের সদস্যসহ বেসরকারী যানবাহনও। বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বাধীন আঠারো দলীয় জোটের হরতাল-অবরোধের সময়ে মুড়ি মুরকির মতো পেট্রোল বোমা ছুড়ে আগুন লাগিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে শতাধিক মানুষজনকে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। আগুনে পুড়ে জীবন্ত দগ্ধ হয়ে পঙ্গুত্ব ও আহত হয়েছেন কয়েক শতাধিক। সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কোটি কোটি টাকার। তখন প্রথমে পুলিশের গাড়িতে ও পরবর্তীতে বেসরকারী যানবাহনে অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র স্থাপন ও সংরক্ষণ করার উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু পরবর্তীতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসায় এই উদ্যোগটি আর বেশিদূর অগ্রসর হয়নি। সূত্র জানায়, জামায়াতÑশিবিরের পেট্রোল বোমার আগুন ও আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে মারার ঘটনাটি আবার নতুন সংস্করণের হাতিয়ার করে নেয় বিএনপিসহ তাদের ২০ দলীয় জোট। গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের বর্ষপূর্তিকে সামনে রেখে গত ৩ জানুয়ারি থেকে গুলশানের বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে ‘অবরুদ্ধ’ হয়ে অনির্দিষ্টকালের অবরোধের ডাক দেয়ার পর যানবাহনে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ, পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে মানুষজনকে জীবন্ত দগ্ধ করে পুড়িয়ে মারার ঘটনা অব্যাহত আছে। এতে প্রায় প্রতিদিনই অগ্নিদগ্ধ করে মানুষজনকে হত্যা ও গুরুতর আহত করাসহ যানবাহনের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। দুর্বৃত্তায়নের এই ধারাবাহিকতায় যানবাহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনসহ সাধারণ মানুষজন ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিরোধ শুরু করেছে। ঢাকা মহানগর পুলিশও এই ধরনের নাশকতা প্রতিরোধে যানবাহনে অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র স্থাপনের পরিকল্পনা নিয়েছে।
×