ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১০ আগস্ট ২০২৫, ২৫ শ্রাবণ ১৪৩২

সঠিক পরামর্শের অভাবে পথে বসেছেন আঙুর চাষী সাব্বির 

নিজস্ব প্রতিবেদক, গোদাগাড়ী, রাজশাহী 

প্রকাশিত: ১২:৪২, ৭ আগস্ট ২০২৫; আপডেট: ১২:৪৫, ৭ আগস্ট ২০২৫

সঠিক পরামর্শের অভাবে পথে বসেছেন আঙুর চাষী সাব্বির 

বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। এ দেশে কৃষিতে সম্ভাবনা আকাশচুম্বী। দেশে দেশি ফলের চাষই বেশি করেন চাষিরা। ফলনও ভালো। তবে এখন বিদেশি ফল চাষেও সম্ভাবনা দেখছেন কৃষকেরা। তেমনি রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী উপজেলায় বিদেশি ফলের পরীক্ষামূলক চাষে সম্ভাাবনা দেখছিলেন সাব্বির শাকিল নামের এক তরুণ উদ্যোক্তা। পরিমাণে কম হলেও এবার সম্ভাবনার তালিকায় নাম লিখিয়েছিলেন সাব্বির। এখানে চাষ হওয়া আঙুরের স্বাদ,  ফলন ও বৈশিষ্ট্য উচ্চ মানের। সুস্বাদু এই ফলের ফলন দেখে এই  উপজেলার কৃষকরাও উদ্বুদ্ধ হতে চেয়েছিলেন। 

গোদাগাড়ী উপজেলার উদ্যোক্তা সাব্বির শাকিল তার বাড়ির পাশে ১০ কাঠা জমিতে গড়ে তুলেছেন আঙ্গুর ফলের বাগান। এই বাগানে রয়েছে বিভিন্ন জাতের আঙুর, মাল্টা, আনারসহ দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ধরনের ফলের গাছ। বাগানের ভেতরে ঢুকতেই চোখে পড়ে ব্ল্যাক ম্যাজিক, ব্ল্যাক জাম্বু, ব্ল্যাক রুবি, ক্রিমশন, সুপার সনাকা, এ্যাকোলো, ডিএসডি, জয়শীডলেস, রেডরোজ, হ্যালোইন, বৈকানুর, গ্রিন লং, আইসবার্গ, সুপারনোভাসহ উন্নত জাতের বাহারি রঙের আঙুরের থোকা লতায় লতায় ঝুলছে। তিনি পরীক্ষামূলকভাবে ২০২২ সালে এই জমিতে আঙুরের চাষ শুরু করেন। পরে ফলন ভালো হওয়ায় এ বছর ৩ বিঘা জমি আঙুর চাষের জন্য লীজ নেন। ইতোমধ্যে আঙুরের ১০ টিরও বেশি জাত থেকে ফলন পেতে শুরু করেছিলেন। আঙুরের চারা বিক্রি করার প্রস্তুতিও নিচ্ছিলেন সাব্বির। 

এ অবস্থায় আঙ্গুর চাষে স্বপ্ন দেখছিলেন এই তরুন উদ্যোগতা। কিন্তু অতিবৃষ্টি ও সুপরামর্শের অভাবে স্বপ্ন ভাঙতে বসেছে সাব্বিরের। অতিবৃষ্টিতে আঙ্গুরে পচন ধরেছে, দাগও পড়েছে গায়ে। আঙ্গুরের সাইজও হয়েছে তুলনামূলক ছোট। এতে হতাশ হয়ে পড়েছেন সাব্বির। 

সাব্বির শাকিল জানান, বাংলাদেশে অনেকগুলো আঙ্গুরের জাত পাওয়া যায়। তবে বৈকানুর এবং এ্যাকোলোতে ফলন ভাল হয়। বছরের ফেব্রুয়ারিতে গাছে কাটিং করতে হয়। এরপর মুকুল আসতে শুরু করে।  হার্ভেস্টিং হতে ৩ থেকে সাড়ে ৩ মাস সময় লাগে। একটি বৈকানুর জাতের গাছে প্রথম পর্যায়ে ১০ থেকে ১৫ কেজি। পূর্ণ বয়সী গাছে ৪০ কেজিরও বেশি আঙ্গুর পাওয়া সম্ভব। 

তিনি আরও বলেন, আমি সঠিক পরামর্শ এবং দিকনির্দেশনা পেলে আঙ্গুর চাষে আরও ভালো করতে পারবো। গ্রীনহাউজ তৈরী করে বৃষ্টির পানি রক্ষা করা গেলে বর্ষার সিজনেও আঙ্গুর পাওয়া সম্ভব। তাই উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতা পেলে আমি সারাবছরই আঙ্গুর উৎপাদনে সক্ষম হবো।

গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জনাব মরিয়ম আহমেদ বলেন, আসলে নতুন কোন কিছু করতে হলে কৃষি বিভাগের সাথে পরামর্শ করা দরকার। আমরা এ ধরনের নতুন তরুণ উদ্যোগতাদের সর্বোচ্য পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করে থাকি। তাদের জন্য ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থাও আছে।চাইলে ট্রেনিং নিতে পারেন তারা।এছাড়াও  আমাদের রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প থেকে পলিনেট হাউস ইতিমধ্যে ৩ জনকে আমরা দিতে পেরেছি। আঙ্গুর যেহেতু খুব সেন্সেটিভ একটি ফল সেহেতু বৃষ্টির সিজনে পলিনেট হাউস জরুরি। আমি আমার সহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে সেখানে পাঠিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।আমরা তরুণ উদ্যোক্তাদের পাশে আছি।

নোভা

×