
ছবি: দৈনিক জনকন্ঠ।
শ্রীবরদী উপজেলার রানীশিমুল ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাঘহাতা থেকে হাসধরা পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা দীর্ঘদিন ধরে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে আছে। প্রতিদিন এই রাস্তায় প্রায় দুই হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েন। রোগী, শিক্ষার্থী, কৃষকসহ সব শ্রেণিপেশার মানুষের নিত্যদিনের যাতায়াত এই রাস্তার উপর নির্ভরশীল হলেও নেই কোনো দৃশ্যমান উন্নয়ন।
এই রাস্তাটির দুই পাশে রয়েছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ব্র্যাক স্কুল, কওমি মাদ্রাসাসহ একাধিক ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। রাস্তা ভেঙে কাঁদা-পানিতে একাকার হওয়ায় শিক্ষার্থীদের সময়মতো স্কুলে পৌঁছানো যেমন দুরূহ, তেমনি কৃষকদের ক্ষেতের ফসল বাজারে নিতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নেয়। এমতাবস্থায় এলাকার সাধারণ মানুষ দ্রুত রাস্তা পাকা করার দাবি জানিয়েছেন।
বাঘহাতা গ্রামের শিক্ষক সবুজ মিয়া বলেন, এই রাস্তা দিয়ে আমরা কত বছর ধরে চলি, কিন্তু আজও উন্নয়নের কোনো ছোঁয়া লাগেনি। রোগী নিয়ে হেঁটে যেতে হয় হাসপাতাল পর্যন্ত, গাড়ি তো ঢুকতেই পারে না। এই রাস্তা এখন আর চলার উপযোগী নাই। আমরা বারবার আবেদন করেছি, কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না।
হাসধরা গ্রামের খাইরুল ইসলাম বলেন, রাস্তাটার পাশে স্কুল, মসজিদ সবই আছে। অথচ আমাদের সন্তানরা কাদা মাড়িয়ে স্কুলে যায়। বিশেষ করে বৃষ্টি হলে হাঁটাও যায় না, পা ধসে যায় কাঁদায়। একটা ছোট অ্যাম্বুলেন্সও এই রাস্তা দিয়ে যেতে পারে না। এইটা কি মানুষ চলার রাস্তা।
বাঘহাতা গ্রামের জায়েদ বলেন, আমরা কৃষক, ফসল উঠানোর সময় হলে এই রাস্তা দিয়ে কিছুই নিতে পারি না। গরুর গাড়ি চলে না, ভ্যান চলে না আমাদের কষ্ট কেউ দেখে না। রাস্তা ঠিক না হলে আমাদের জীবিকাও থেমে যাবে।
স্থানীয় শিক্ষার্থী রাধিব, জিহাদ, জোবাইল, নাহিদ ও জোবায়ে বলেন, স্কুল, কলেজে যাওয়ার সময় আমরা অনেক সময় পড়ে যাই। জামা-কাপড় নষ্ট হয়। অনেকে স্কুলে আসতে চায় না এই কারণে। আমাদের খুব কষ্ট হয়, আমরা চাই রাস্তাটা পাকা করে দেওয়া হোক।
এলাকার বাসিন্দারা মানবিক দিক বিবেচনায় শীঘ্রই রাস্তা পাকা করার জন্য উপজেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। তাঁরা মনে করেন, এ ধরনের অবহেলা উন্নয়ন থেকে এলাকাকে পিছিয়ে দিচ্ছে। স্থানীয় প্রতিনিধিরা বিষয়টি নিয়ে আশ্বাস দিলেও এখনো দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি।
এ বিষয়ে শ্রীবরদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শেখ জাবের আহম্মেদ বলেন, পরবর্তীতে বরাদ্দ পেলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে রাস্তাটি সংস্কার ও পাকাকরণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
মিরাজ খান