
ছবি- দৈনিক জনকণ্ঠ
সাগর উত্তাল থাকা অবস্থায়ও রোহিঙ্গারা তা করছে না মোটেও। সীমান্ত গলিয়ে অনুপ্রবেশ করছে বাংলাদেশে। শুক্রবার মিয়ানমারের এক পরিবারের পাঁচজনসহ ২০রোহিঙ্গা নাগরিক ভর্তি একটি ট্রলার সেন্টমার্টিন দ্বীপের সমুদ্রসৈকতের তীরে আশ্রয় নিয়েছে। ওই ট্রলারটিতে ১৬জন পুরুষ, তিনজন নারী ও একজন শিশু সন্তান রয়েছে। আবহাওয়ার অবস্থা ভালো হলে তাদেরকে পুনরায় মিয়ানমারের ফেরত পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে সীমান্তরক্ষীরা।
জানা যায়, শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে ট্রলারটি সেন্টমার্টিন দ্বীপের উত্তর সৈকতের তীরে ভিড়েছেন। এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন।
ইউএনও বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে বিষয়টি সকালে জেনেছি। সঙ্গে সঙ্গে জেলা প্রশাসককে রোহিঙ্গাদের বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। তবে যতটুকু জেনেছি স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের নিয়ে কাজ করছেন।
এ প্রসঙ্গে সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ফয়েজুল ইসলাম বলেন, শুক্রবার দুপুরের দিকে রোহিঙ্গা বোঝাই একটি ট্রলার সেন্টমার্টিন দ্বীপের উত্তর সৈকতের তীরে ভিড়েছে। ওই ট্রলারে একটি পরিবারের একজন শিশু, একজন পুরুষ ও তিনজন নারীসহ পাঁচজন সদস্য রয়েছেন। ওই ট্রলারে আরও ১৫জন পুরুষ রয়েছেন। এরমধ্যে সাতজন ওই ট্রলারের মাঝি-মাল্লা। সাগর উত্তাল হয়ে পড়ায় তারা প্রাণ বাঁচাতে সেন্টমাটিন দ্বীপে আশ্রয় নিয়েছে। আবহাওয়ার অবস্থা ভালো হলে তাদেরকে পুনরায় মিয়ানমারের ফেরত পাঠানো হবে বলে জানা গেছে।
মিয়ানমারের সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহী আরাকান আর্মির সংঘাতের কারণে সেখানকার পরিস্থিতি ভালো নয়। তাই তারা পালিয়ে ভিন্ন দেশে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। এর মধ্যে মিয়ানমারের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে কয়েকজন রোহিঙ্গা একটি ট্রলারে করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু সাগর উত্তাল হয়ে পড়ায় তারা বাধ্য হয়ে সেন্টমার্টিনের উত্তর সৈকতের তীরে আশ্রয় নেন।
পরে স্থানীয় লোকজন ট্রলারটি দেখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করেন। এরপর বিজিবির একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের একটি হোটেলের কক্ষে আশ্রয় দেয়।
সেখানে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে তাদের জন্য সকালের নাস্তা ও দুপুরের খাবার সরবরাহ করা হয়। বর্তমানে তারা বিজিবির হেফাজতে রয়েছেন।
সীমান্তের একাধিক সূত্র জানায়, ২০২৪ সালে ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে সেদেশের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সংঘাত শুরু হয়। টানা ১১ মাস যুদ্ধের পর গত বছরের ৮ডিসেম্বর আরাকান আর্মি রাখাইন রাজ্যের মংডু টাউন শীফসহ ৮০শতাংশ এলাকা নিয়ন্ত্রণে নেয়। এ সংঘাতে কারণে মিয়ানমার থেকে গত ১৮মাসে বাংলাদেশে নতুন করে প্রায় দেড় লাখ রোহিঙ্গা নাগরিক অনুপ্রবেশ করেছে বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর।
আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের নাগরিকদের প্রসঙ্গে জানার জন্য সেন্টমার্টিন বিজিবি ও কোস্টগার্ডের ষ্টেশনের সরকারি মুঠোফোন নম্বরের একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে ফোন রিসিভ না করায় কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
নোভা