ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৬ জুলাই ২০২৫, ১১ শ্রাবণ ১৪৩২

কোটি টাকা ব্যয়ে বেড়িবাঁধ মেরামতের ছয় মাসেই বিলীন

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, পটুয়াখালী

প্রকাশিত: ০৯:৩৩, ২৬ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ০৯:৩৪, ২৬ জুলাই ২০২৫

কোটি টাকা ব্যয়ে বেড়িবাঁধ মেরামতের ছয় মাসেই বিলীন

ছবি: জনকণ্ঠ

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় রাবনাবাদ নদীর তীব্র ভাঙনের কবল থেকে করমজাতলায় বেড়িবাঁধ সংস্কারের ছয় মাসেই ফের নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনরোধে দেড় কোটি টাকা ব্যয় করে নেওয়া পদক্ষেপ ভেস্তে যেতে বসেছে। প্রায় চার শ’ ফুট মূল বাঁধসহ রিভার সাইট নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। স্থানীয়রা জানান, গত মে মাসে জিওব্যাগ ও টিউব ধসে গেছে। গতকাল শুক্রবারের (২৫ জুলাই) জলোচ্ছ্বাসে ডেউয়ের তাণ্ডবে মূল বাঁধসহ রিভার সাইট নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এখন গোটা এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তারা আছেন চরম ঝুঁকিতে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও দোকানি মো. রেজাউল জানান, শুক্রবারের জলোচ্ছ্বাসে জিও টিউব, জিওব্যাগসহ প্রায় চার শ’ ফুট বাঁধের টপসহ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ঢেউয়ের ঝাপটায় সব শেষ, এখন বাঁধের মধ্যে পানি ঢুকছে। মেরামতের ছয় মাসেই এই দশায় সবাই আতঙ্কে আছেন। বাঁধের যতটুকু আছে, তাও আবার জলোচ্ছ্বাস হানা দিলে সব ভেসে যাবে। ফলে তাঁদের বসতিও টিকবে না। বাঁধের পাশের বাসিন্দারা এও জানান, বছরের পর বছর রাবনাবাদ নদী থেকে অসংখ্য ড্রেজারের বালু কাটায় এখানটায় ভাঙনের ঝুঁকি বহুগুণে বেড়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড, কলাপাড়ার নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তরের দেওয়া তথ্যমতে, কলাপাড়া উপজেলার ৫৪/এ পোল্ডারের ১৩ দশমিক ০০ কিলোমিটার থেকে ১৪ দশমিক ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত এক হাজার এক শ’ ২০ মিটার বেড়িবাঁধের ভাঙনরোধে জরুরি প্রটেকশন দেওয়ার জন্য জিওটিউব ও জিওব্যাগ স্থাপন করা হয়। এজন্য প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয় করা হয়। স্থানীয়ভাবে এটিকে করমজাতলা বলা হয়।

তবে এ কাজের মনিটরিংয়ে নিয়োজিত পানি উন্নয়ন বোর্ড, কলাপাড়ার উপসহকারী প্রকৌশলী বিদ্যা রতন সরকার জানান, ওই জায়গায় রাবনাবাদের উত্তাল ঢেউয়ের কবল থেকে বেড়িবাঁধের ভাঙনরোধে ইমার্জেন্সি প্রটেকশন দেওয়ার জন্য জিওটিউব ও জিওব্যাগ স্থাপন করা হয়েছে। মাটির সংকট ছিল। অনেক দূর থেকে মাটি সংগ্রহ করতে হয়েছে। তারপরও সুন্দরভাবে করা হয়েছে। প্রায় সাত মাস আগে কাজটি করা হয়েছে। তিনি জানান, মূলত করমজাতলার ওই স্পটটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা। এজন্য ব্লক দিয়ে স্থায়ী প্রটেকশন দেওয়া প্রয়োজন। বর্তমানে তারা খোঁজখবর নিচ্ছেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহ আলম জানান, মূলত ওই জায়গাটা ক্রিটিক্যাল জায়গা। ভেতরে জায়গা নেই। মাটি ও প্রয়োজনীয় জায়গা পাওয়া গেলে ওখানটায় স্থায়ী প্রটেকশনের জন্য বিকল্প বেড়িবাঁধ করতে হবে। নইলে ভাঙন স্থায়ীভাবে রোধ করা সম্ভব নয়। তারপরও দ্রুত খোঁজখবর নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনামতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানালেন তিনি। তবে ওখানটায় স্থায়ী প্রটেকশন দরকার রয়েছে বলেও জানান এই প্রকৌশলী।

মুমু ২

×