ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৬ জুলাই ২০২৫, ১১ শ্রাবণ ১৪৩২

হারিয়ে যাচ্ছে ভেষজ উদ্ভিদ, সংকটে কবিরাজি পেশা 

সোহাগ মিয়া, কন্ট্রিবিউটিং রিপোর্টার, রাজবাড়ী

প্রকাশিত: ০৯:২৫, ২৬ জুলাই ২০২৫

হারিয়ে যাচ্ছে ভেষজ উদ্ভিদ, সংকটে কবিরাজি পেশা 

ছবি: দৈনিক জনকণ্ঠ

প্রাচীনকাল থেকেই আমাদের আশেপাশে থাকা অনেক গাছপালা উদ্ভিদ ও তরুলতা না না ওষুধ কাজে মানুষজন ব্যবহার করে আসছে। বিশেষ করে আয়ুর্বেদিক ও ইউনানী ঔষধের ক্ষেত্রে এসব গাছ ও গাছের খাল ব্যাপক ব্যবহার হয়েছে। 

আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যুগে হারাতে বসেছে প্রাচীন যুগের কবিরাজি ও ভেষজ গাছ-গাছালি চিকিৎসা। তবু প্রাচীন যুগের চিকিৎসার উপাদান গাছ গাছালির খালবাখরা নিয়ে বসে আছেন গোয়ালন্দের আইনুদ্দিন কবিরাজ। 

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে বায়নাতি দোকানদার আইনুদ্দিন কবিরাজ তার দোকান সম্পর্কে জানান, গ্রাম অঞ্চলের অনেক কবিরাজ তার দোকানে এসে বিভিন্ন গাছ গাছালি ও ঔষধি উপকরণ সংগ্রহ করেন। তিনি এক হাজার প্রকার ঔষধি গাছ গাছালি তার দোকানে সংগ্রহ করেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য থানকুনি,অর্জুন, কালো মেঘ, নিম, তুলসী, ঘৃতকুমারী, সর্পগন্ধা, পুনর্নরা,ভৃঙ্গরাজ, শহমৃলী,গুলঞ্চ, ওলটকম্বল, দারুচিনি, এলাস, লবঙ্গ, আমলকি, হরতকি, বহেরা, তুকমার দানা, ইসুবগুলের ভুষি, রিটে ফল, ইত্যাদি। এসব গাছগুলোর বিভিন্ন অংশ যেমন শিকড়, পাতা, ফুল, মুল,ছাল ইত্যাদি ব্যবহার করে বিভিন্ন রোগ নিরাময়ের ওষুধ তৈরি করা হয়। 

রাজবাড়ী জেলার বিভিন্ন গ্রাম অঞ্চলে নদীর পুকুর পাড় সহ বিভিন্ন অনাবাদি জমিতে থানকুনি কালো তুলসী, নিম, চন্দন বিভিন্ন ওষুধি লতা পাতা দেখা মিলতো। কিন্তু এগুলো আর পাওয়া যায় না। জনসংখ্যা বৃদ্ধি বিভিন্ন ইটভাটা হওয়ার কারণে মানুষের থাকার নতুন নতুন ঘরবাড়ি ও জ্বালানি হিসেবে বিভিন্ন বর্ণনায়নের গাছ ধ্বংস করার কারণে এ সকল মূল্যবান উদ্ভিদ বা গাছ গাছালির ঔষধি উপকরণ এখন আর পাওয়া যায় না। তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে কবিরাজরাও আগের মত এখন ঔষধী গাছ গাছালি বিক্রি করতে পারেনা। কবিরাজি পেশা এখন হারাচ্ছে আধুনিক চিকিৎসার ছোঁয়ায়। 

আইনুদ্দিন কবিরাজ জানান, ৪০ বছরের অভিজ্ঞতা নিয়ে এ ব্যবসা করে আসছি। অনেকদিন বোনই করতে পারিনা। এই বয়সে এই পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় যেতে পারবো না। তাই ব্যবসাটি ধরে আছি। বিভিন্ন গাছ-গাছালি সংগ্রহ করতে বিভিন্ন জেলায় আমাকে এখনো যেতে হয়। আমার কাছ থেকে যে সকল কবিরাজরা এই সকল মূল্যবান গাছ সংগ্রহ করে। তারা এখন পেশা বদলাতে শুরু করেছে। কবিরাজি ভুগি কমে যাওয়ায় অনেক কবিরাজ দিনমজুরের কাজ করছে।

ফারুক

×