ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৪ জুলাই ২০২৫, ৮ শ্রাবণ ১৪৩২

বটতলার ছায়ায় প্রশান্তি, শ্রমজীবীদের আনন্দের আশ্রয় এখন দিয়াখালী

মাসুদুর রহমান রুবেল, কন্ট্রিবিউটিং রিপোর্টার, আশুলিয়া, ঢাকা

প্রকাশিত: ১৯:৫৭, ২৩ জুলাই ২০২৫

বটতলার ছায়ায় প্রশান্তি, শ্রমজীবীদের আনন্দের আশ্রয় এখন দিয়াখালী

ঢাকার উপকণ্ঠে অবস্থিত শিল্পাঞ্চল আশুলিয়া—যা দেশের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার একটি। কাজের সন্ধানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ এখানে এসে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেছে।

এই কর্মজীবী মানুষগুলো সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে আশ্রয় নেয় আশুলিয়ার ইয়ারপুর এলাকার দিয়াখালী বটতলায়। সেখানে খোলা আকাশ, নেই কলকারখানার দূষিত বাতাস কিংবা যান্ত্রিক কোলাহল। বটতলার পাশ দিয়ে বয়ে গেছে তুরাগ নদীর একটি শাখা, যা স্থানীয়ভাবে তুরাগ নদী নামেই পরিচিত।

সেই নদীতে পরিবার নিয়ে নৌকা ভ্রমণ এক ভিন্নধর্মী অনুভূতি এনে দেয়। ফলে এটি দ্রুতই একটি জনপ্রিয় বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে শ্রমজীবী মানুষের কাছে।

আশুলিয়ার পরিচিত দর্শনীয় স্থানের মধ্যে রয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়—যা তার মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য বিশেষভাবে বিখ্যাত। এছাড়া, আশুলিয়ার নবীনগরে অবস্থিত বাংলাদেশের জাতীয় স্মৃতিসৌধও অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান। এটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে নির্মিত।

আশুলিয়ায় ফ্যান্টাসি কিংডম, নন্দন পার্কসহ বেশ কয়েকটি বাণিজ্যিক বিনোদন কেন্দ্র রয়েছে। তবে এসব জায়গায় প্রবেশের জন্য টিকিটের প্রয়োজন হয় এবং রাইডগুলোতেও খরচ থাকে। সেজন্য অনেকের পক্ষেই সেখানে যাওয়া সম্ভব হয় না।

অন্যদিকে, দিয়াখালী বটতলায় কোনো প্রবেশ মূল্য নেই, নৌকা ভ্রমণও খুব সুলভ। ফলে এটি শ্রমজীবী মানুষের কাছে সহজলভ্য বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠেছে।

হামীম গ্রুপের পোশাক শ্রমিক মনজুরুল ইসলাম স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ঘুরতে এসেছিলেন দিয়াখালী বটতলায়। তিনি বলেন, “সপ্তাহে একদিন ছুটি পাই, তখন চেষ্টা করি পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে। দূরে কোথাও ঘুরতে যাওয়ার সুযোগ হয় না। অফিসের অনেকের কাছ থেকে শুনে এখানে এলাম। অনেক ভালো লাগছে—নৌকা ঘুরে বেড়ানো, সবুজ পরিবেশ—সব মিলিয়ে দারুণ এক অনুভূতি।”

অন্যদিকে, অনন্ত গ্রুপের নারী পোশাক শ্রমিক সুমি আক্তার বলেন, “সুন্দর পরিবেশ, পরিবার নিয়ে আসার মতো জায়গা। আমরা চারজন মিলে মাত্র ২০০ টাকায় নৌকায় ঘুরলাম। খুব ভালো লাগছে।”

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিদিন বিকেল হলেই দূরদূরান্ত থেকে মানুষ এখানে আসে। তবে শুক্রবার ও অন্যান্য ছুটির দিনে ভিড় অনেক বেশি হয়।

নুসরাত

×