
ছবি- দৈনিক জনকণ্ঠ
ময়মনসিংহের গৌরীপুরের জলাতঙ্কে আক্রান্ত ষাঁড় গরু জবাই করে গোপনে মাংস ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করে দেয় সোলায়মান নামে এক গরু মালিক। পরে ওই ব্যবসায়ী সেই মাংস প্রতি কেজি ৭৮০ টাকা দরে গ্রাহকের কাছে বিক্রি করছিলেন। এ ঘটনাটি ঘটে আজ বুধবার ময়মনসিংহের গৌরীপুরের অচিন্তপুর ইউনিয়নের শাহগঞ্জ বাজারে। খবর পেয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত ওই মাংস ব্যবসায়ীর দোকানে অভিযান চালায়। মাংস বিক্রেতাকে না পেয়ে দোকানটি সিলগালা করে দেয় ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুনন্দা সরকার প্রমা।
অভিযুক্ত মাংস ব্যবসায়ীর নাম রানা আহমেদ কদ্দুস। গরুর মালিক সোলায়মানের বাড়ি উপজেলার বোকাইনগর ইউনিয়নের ইয়ারপুর গ্রামে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বোকাইনগর ইউনিয়নের ইয়ারপুর গ্রামের সোলায়মান নিজ বাড়িতেই একটি শাহীওয়াল জাতের ষাঁড় গরু লালন-পালন করছিলেন। সম্প্রতি গরুটি অসুস্থ হলে গরুর মালিক উপজেলা প্রাণিসম্পদ ও ভেটেরিনারী হাসপাতালে যোগাযোগ করেন। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. শিহাব উদ্দিন গরুটির চিকিৎসার জন্য ইয়ারপুর গ্রামে তার বাড়িতে যান। অসুস্থ গরুটির শারীরিক লক্ষণ দেখে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা গরুর মালিককে জানান গরুটি জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এসময় তিনি গরুর মালিককে টিকা দেয়ার পাশাপাশি অন্যান্য গবাদি পশু থেকে আক্রান্ত গরুটি আলাদা রাখার পরামর্শ দেন। মালিককে গরুটি বিক্রি কিংবা জবাই করতেও নিষেধ করে আসেন প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা।
মঙ্গলবার রাতে সোলায়মান গোপনে গরুটি উপজেলার অচিন্তপুর ইউনিয়নের শাহগঞ্জ বাজারের বিসমিল্লাহ মাংসের দোকানের মালিক রানা আহমেদ কদ্দুসের কাছে বিক্রি করে দেন। বিষয়টি জানাজানি হলে বুধবার দুপুরে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুনন্দা সরকার প্রমার নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত কদ্দুসের মাংসের দোকানে অভিযান চালায়। এসময় কদ্দুস পালিয়ে গেলে দোকানটি সিলগালা করে দেয়।
গরুর মালিক সোলয়মান বলেন, আমার গরু বাতছে (বাত রোগে আক্রান্ত)। আমি পাইকারের কাছে বিক্রি করে দিছি।
রানা আহমেদ কদ্দুস বলেন, গরুটি জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত বিষয়টি আমার জানা ছিল না। গরুর মালিক আমাকে বলেছে গরুটি অসুস্থ। তিনদিন ধরে খাওয়া-দাওয়া করেনা। আমি ২৫ হাজার টাকা দিয়ে গরু কিনেছি। স্থানীয় চেয়ারম্যান মহোদয় গরুর মাংস বিক্রি করতে নিষেধ করায় আমি মাংস বিক্রি থেকে বিরত থাকি।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. শিহাব উদ্দিন বলেন, আমি আক্রান্ত গরুটির মালিককে গরু বিক্রি কিংবা জবাই করতে নিষেধ করেছিলাম। পরে শুনি গরুটি জবাই করে বিক্রি করে দিয়েছেন। মাংসের দোকানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে দোকান সিলগালা করা হয়েছে। আমাদের আসার খবর পেয়ে মাংস বিক্রেতা পালিয়ে যান। বিক্রিত গরুর মাংস জনসাধারণকে না খেতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এলাকায় প্রচারণা চালানো হয়েছে। দুজন গ্রাহক ক্রয়করা মাংস ফেরত দিয়ে গেছেন। এই বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার প্রস্তুতি চলছে।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুনন্দা সরকার প্রমা বলেন, অসুস্থ গরুর মাংস বিক্রির খবর পেয়ে আমরা মাংস বিক্রেতার দোকানে অভিযান চালাই। কিন্ত দোকানে তাকে পাওয়া যায়নি। এই বিষয়ে নিয়মিত মামলা করার জন্য উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
নোভা