
দৈনিক জনকণ্ঠ
স্বাদে গুনে অনন্য মিন্নাতের হাতে তৈরি বিখ্যাত কান পাড়ার সন্দেশ। মিষ্টান্নের সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে দেশের গণ্ডি ছেড়ে বিদেশে। বিখ্যাত এই সন্দেশের স্বাদ গ্রহণে ঘড়ির কাটা ১ বাজার পূর্বে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ছুটে আসেন ভোজন রসিকেরা।
অতিরিক্ত চাহিদা থাকা সত্ত্বেও গুণগত মান ধরে রেখে প্রতিদিন মাত্র ২০ কেজি সন্দেশ তৈরি করেন মিন্নাত আলী।
রাজশাহী জেলার দুর্গাপুর থানার কানপাড়া বাজারে গত ২০ বছর ধরে ছোট্ট চায়ের দোকানে বিক্রি বিখ্যাত এই সন্দেশ বিক্রি করে আসছেন মিন্নাত আলী। যুগের পালাবদলে ভেজালমুক্ত খাবার পাওয়াটা দুঃসাধ্য সেখানে এখনো সততা ধরে রেখে স্বাদ, গন্ধ একই রেখেছেন দোকানি।
দুর্গাপুরে বাজারের বাসিন্দা আল আমিন জানান, আমি ছাত্র থাকা অবস্থায় চাচার তৈরি এই সন্দেশ প্রথম খেয়েছিলাম। অনেক বছর পেরিয়ে গেলো ৬ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে কানপাড়া তে চাচার হাতের সন্দেশ খেতে।
সবকিছুর স্বাদ পরিবর্তন হলেও তার সন্দেশের স্বাদ অপরিবর্তিত। আমি কোথাও বেড়াতে গেলে এই সন্দেশ নিয়ে যাই এটি আমাদের ঐতিহ্য যে একবার খাবে সারাজীবন খেতে চাইবে।
নওগাঁ থেকে আগত রাকিব জানান, আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই সন্দেশের অনেক রিভিউ দেখেছিলাম। আমার মিস্টি জাতীয় খাবার খুবই পছন্দ তাই সকাল সকাল ছুটে এসেছি। এত্তো স্বাদের এই সন্দেশ প্রতি পিস মাত্র ১০ টাকা। ১ কেজি নিলাম বাড়ির বাকি সদস্যদের জন্য।
প্রবাসী সাকিব জানান, দেশে থাকতে নিয়মিত মিন্নাত চাচার সন্দেশ খেতাম জীবিকার সন্ধানে বিদেশে এসেছি। পরিচিত কোনো প্রবাসী ছুটিতে বাড়ি ফিরলে আসার সময়ে সঙ্গে সন্দেশ আনতে বলী এর স্বাদ অতুলনীয় আমার বিদেশি বন্ধুদের খাটিয়েছি তারা-ও বেশ পছন্দ করেছে।
দোকানি মিন্নাত আলী জানান, আমি আমার কাজকে সম্মান, শ্রদ্ধা, করি আল্লাহ যেন মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সততা ধরে রাখার তৌফিক দান করে। আমি নিজে দোকান বন্ধ রেখে বিভিন্ন বাজার থেকে দেখে খাটি দুধ কিনে ছানা কাটি।
ছানা, চিনি দীর্ঘ সময় চুলাতে তাপ দিয়ে তাক বুঝে সন্দেশ তৈরি করী। যা দোকানে নিলে তিন চার ঘণ্টার মাঝেই বিক্রি হয়ে যায়। বয়স হয়েছে আগের মতো পরিশ্রম করতে পারি না হাতে অনেক ব্যথা। কারিগর রেখে তৈরি করালে মানসম্মত মান মত তৈরি করতে পারবে না।
তাই যতদিন বেঁচে আছি এভাবে করে যেতে চাই। আমার তৈরি খাবার খেয়ে মানুষের তৃপ্তি ও দোয়াই আমার সবচেয়ে বড়ো সম্বল।
হ্যাপী