ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৭ জুলাই ২০২৫, ২ শ্রাবণ ১৪৩২

ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী একটি খুনি বাহিনীতে পরিণত হয়েছে: নাহিদ ইসলাম

এম রায়হান, ঝিনাইদহ

প্রকাশিত: ২২:০০, ৯ জুলাই ২০২৫

ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী একটি খুনি বাহিনীতে পরিণত হয়েছে: নাহিদ ইসলাম

বিচার, সংস্কার ও নতুন সংবিধানের দাবিতে জাতীয় নাগরিক পার্টির ৯ম দিনের পদযাত্রা হয়েছে ঝিনাইদহে। বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ঝিনাইদহ শহরের পায়রা চত্বরে পথসভা করে দলটি। পথসভায় ভারত সীমান্তরক্ষী বাহিনীর তীব্র সমালোচনা করেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। বলেন, সীমান্ত হত্যার কারণে বাহিনীটি মানবতাবিরোধী খুনি বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। আর দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ অভিযোগ করেন, শেখ হাসিনাকে যারা আশ্রয় দিচ্ছে তারা সেফ হাউজ অব টেরোরিস্ট। দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সবাইকে সচেতন থাকার পাশাপাশি দেশ সংস্কারে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান নেতাকর্মীরা।

ঝিনাইদহ শহরের পায়রা চত্বরে এনসিপি আয়োজিত জুলাই পদযাত্রা পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী একটি খুনি বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশে গত ২৫ বছরে ১২শ’র অধিক মানুষ হত্যা করা হয়েছে। এই বিএসএফকে বলা হয় ‘ট্রিগার হ্যাপি’। যে ট্রিগার টিপতে চায় সে খুন করতে চায়। এই বিএসএফ বাহিনী একটি মানবাধিকারবিরোধী সংগঠন। যদি সীমান্ত হত্যা বন্ধ না হয় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের দাঁড়াতে হবে। তিনি ভারত সরকারকে বলেন, বাংলাদেশের মানুষের সাথে মর্যাদার আচরণ করুন।


পথসভায় এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মারা ভারতে বসে, লন্ডনে বসে, বাংলাদেশ নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে। শেখ হাসিনা খুনি। যারা হাসিনাকে আশ্রয় দিয়েছে তারা সেফ হাউজ অব টেরোরিস্ট। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যতই ষড়যন্ত্র করুক ‘আওয়ামী লীগ উইল নেভার কাম ব্যাক’। তিনি শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, আওয়ামী লীগকে যারা আশ্রয় প্রশ্রয় দিচ্ছে, এই মধ্য এশিয়ায় যারা অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করছে, ভারত আমাদের শঙ্কার জায়গা। এই মধ্য এশিয়ায় অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করছে ভারত। ভারত ইতোমধ্যে সেফ হাউজ অব টেরোরিস্ট হিসেবে পরিচিত হয়েছে। তিনি বলেন, হাসিনা একটা টেরোরিস্ট, ছাত্রলীগ টেরোরিস্ট, সুতরাং যাঁরা তাদের আশ্রয় দিবে তারা সেফ হাউজ অব দ্য টেরোরিস্ট। তিনি ভারতকে বলেন, আপনারা যদি টেরোরিস্টদের সেফ হাউজ না হয়ে থাকেন তাহলে শেখ হাসিনাকে পুশইন করুন। বাংলাদেশের জনগণ তাকে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করবে।
 

এনসিপির উত্তরাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, খুনি হাসিনার নির্দেশে বাংলাদেশে ছাত্রজনতাকে খুন করা হয়েছে, তাকে অবিলম্বে ফাঁসির মঞ্চে দাঁড় করিয়ে মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করতে হবে।
বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করেই জাতীয় নাগরিক পার্টির ৯ম দিনের পদযাত্রায় দুপুরের পর থেকেই ঝিনাইদহ শহরের পায়রা চত্বরে হাজির হয় নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। ছোট ছোট মিছিলে মিছিলে বিকেল হতেই জনসমুদ্রে পরিণত হয় শহর। সন্ধ্যা ৭টার দিকে শহরের চুয়াডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড থেকে শুরু হয় পদযাত্রা। পদযাত্রাটি শেষ হয় শহরের পায়রা চত্বরে। পরে নেতৃবৃন্দ পথসভায় অংশ নেন।

 

সমাবেশে দলটির সদস্য সচিব আক্তার হোসেন, নাসির উদ্দিন পাটোয়ারীসহ নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। ঝিনাইদহ সমাবেশ শেষে শৈলকুপা ও হরিণাকুণ্ডুতে নিহত সাব্বির ও রাকিবের কবর জিয়ারত করেন তারা।

পথসভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব তারেক রেজা, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী, এডভোকেট মনোয়ারা মৌ, ঝিনাইদহের নিহত রাকিবের বাবা আমোদ আলী মণ্ডল, নিহত রাকিবের মা হাফিজা খাতুন, সাইদুর রহমানসহ এনসিপির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন এনসিপি নেতা ডা. তাসনিম জারাসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। সময়ের স্বল্পতার কারণে অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বক্তৃতা করতে পারেননি।
ঝিনাইদহ শহরের পথসভা শেষে নেতৃবৃন্দ শেখপাড়ায় এক পথসভায় যোগদান করবেন। এরপর ফিরে এসে ঝিনাইদহ ড্রিম ভ্যালি পার্কের রেস্ট হাউজে রাত্রিযাপন করবেন। ১০ জুলাই সকালে নেতৃবৃন্দ ঝিনাইদহ থেকে মাগুরার উদ্দেশ্যে রওনা দিবেন বলে জানা গেছে

আফরোজা

আরো পড়ুন  

×