
ছবি: সংগৃহীত।
কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে উঠতি বয়সের কিশোররা রাস্তায় দ্রুত বেগে মোটর সাইকেল চালিয়ে অহরহ ঘটাচ্ছে দুর্ঘটনা। দুর্ঘটনার কবলে পড়ে অনেকে আহত ও নিহত হচ্ছে। অধিকাংশ মোটর সাইকেলের নেই কোনো লাইসেন্স। এতে মোটা অঙ্কের রাজস্ব আয় থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।
সরে জমিনে দেখা যায়, ইদানীং ভারত ও চীনের তৈরি নানা রকম মোটর সাইকেলের দাপটে রাস্তা চলাই কঠিন হয়ে পড়েছে। সব শ্রেণীর মানুষ মোটর সাইকেল চালক থাকলেও উঠতি বয়সের কিশোর চালকদের দৌরাত্ম্যে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। এসব উঠতি বয়সের কিশোর চালকরা রাস্তা ঘাটে দ্রুত বেগে মোটর সাইকেল চালিয়ে অহরহ ঘটাচ্ছে দুর্ঘটনা। দুর্ঘটনার কবলে পড়ে অনেককে প্রাণ হারাতে হয়েছে। আবার আহত হয়ে কাউকে পঙ্গুত্ব জীবন যাপন করতে হচ্ছে। এসব মোটর সাইকেলের নেই কোনো লাইসেন্স। অধিকাংশ চালক প্রশিক্ষণ প্রাপ্তও নয়। উঠতি বয়সের এসব মোটর সাইকেল চালকরা নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ইচ্ছা মত অতি দ্রুত বেগে সড়কে মোটর সাইকেল চালাচ্ছেন। ফলে রাস্তাঘাটে অহরহ দুঘর্টনা ঘটাচ্ছে। অন টেস্ট লিখে বছরের পর বছর রাস্তায় মোটর সাইকেল চালাচ্ছে চালকরা। এতে একদিকে সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব অপর দিকে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে দিন দিন রাস্তায় নামছে নতুন নতুন মোটর সাইকেল। অভিযোগ রয়েছে, এসব অবৈধ মোটর সাইকেল দিয়ে মাদকদ্রব্য বেচা কেনা সহ বিভিন্ন অপরাধ মুলক কাজে ব্যবহার করছে এক শ্রেণীর উঠতি বয়সের যুবক।
উপজেলার টেঙ্গার পাড়া গ্রামের রুবেল বলেন, “তিনজন কিশোর বেপরোয়া গতিতে মোটর সাইকেল চালিয়ে তার বাবাকে ধাক্কা দিয়ে গুরুতর আহত করে। তিনি এখন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।” নাঙ্গলকোট গ্রামের সোলাইমান বলেন, “এখন কিছু কিশোর জোরে জোরে হর্ন বাজিয়ে এতো দ্রুতগতিতে মোটর সাইকেল চালায় তাতে রাস্তায় দিয়ে হাঁটাই মুশকিল হয়ে পড়েছে।” তিনি বিষয়টি প্রশাসনের দৃষ্টিতে আনার প্রয়োজন বলে মনে করেন। বক্সগঞ্জ গ্রামের জালাল বলেন, “উঠতি বয়সের ছেলেরা রাস্তায় এমনভাবে মোটর সাইকেল চালায়। যাহা কোন ভাবেই কাম্য নয়। এদের কিছু বলতে গেলে উলটো আরো তেড়ে আসে।”
নাঙ্গলকোটের পার্শ্ববর্তী চৌদ্দগ্রাম উপজেলা ভারতীয় সীমান্ত এলাকা হওয়ায় চোরাই পথে এখানে ভারতীয় অনেক মোটর সাইকেল আসছে অহরহ ভাবে। চোরাই পথে আসায় এসব মোটর সাইকেলের দাম কিছু কম হওয়ায় উঠতি বয়সের ছেলেরা এসব মোটর সাইকেল কেনার দিকে ঝুঁকে পড়ছে। একটি সংঘবদ্ধ চোরাই দলের সক্রিয় সদস্য নিয়মিত ভারত থেকে চোরাই পথে মোটর সাইকেল এনে এ দেশে বিক্রি করছে। আবার এ দলের সদস্যরা এ দেশের মোটর সাইকেল চুরি করে নিয়ে বর্ডার দিয়ে ভারতে নিয়ে বিক্রি করে দিচ্ছে।
নাঙ্গলকোট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এ কে ফজলুল হক বলেন, “এ বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষে বিভিন্ন স্থানে সচেতনতা সভার আয়োজন করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। পাশাপাশি বেপরোয়া গতিতে বাইক চালানো রোধে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে শাস্তির আওতায় আনা হবে।” তিনি কিশোরদের হাতে বাইক তুলে না দিতে অভিভাবকদের প্রতি ও আহ্বান জানান।
মিরাজ খান