ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৪ জুন ২০২৫, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ছেঁড়া দ্বীপে একটিই পরিবার, যাদের জীবন চলে পর্যটকের দয়ায়

ইমতিয়াজ মাহমুদ ইমন, কন্ট্রিবিউটিং রিপোর্টার কক্সবাজার

প্রকাশিত: ০১:২৫, ১৪ জুন ২০২৫

ছেঁড়া দ্বীপে একটিই পরিবার, যাদের জীবন চলে পর্যটকের দয়ায়

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের মানচিত্রে দক্ষিণের সর্বশেষ বিন্দু- এই ছেঁড়া দ্বীপ  দক্ষিণ দিকে এর পরে বাংলাদেশের আর কোনো ভূখণ্ড নেই। সেন্ট মার্টিন থেকে বিচ্ছিন্ন কয়েকটি দ্বীপ রয়েছে, যেগুলোকে প্রাকৃতিকভাবে ছেঁড়া -দিয়া  বলা হয়। এই দ্বীপে যাতায়াতের একমাত্র বাহন টমটম কিংবা ভ্যানগাড়ি।

ছেঁড়া দ্বীপ বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণের ভূখণ্ড। প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন থেকে ৫ কিলোমিটার দক্ষিণে ছেঁড়া দ্বীপ অবস্থিত। দ্বীপটি ছেঁড়া নামে পরিচিত হলেও স্থানীয় মানুষের কাছে দ্বীপটি 'সিরাদিয়া ' নামে পরিচিত।

ছেঁড়া দ্বীপ সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক পাথর, প্রবাল এবং নারিকেল গাছে পরিপূর্ণ। জোয়ারের সময় ছেঁড়া দ্বীপের এক-তৃতীয়াংশ সাগরের পানির নিচে তলিয়ে  যায়। সাগরের নীল ঢেউ যখন পাথরের গায়ে আঁছড়ে পড়ে তখন এক মোহনীয় দৃশ্যের অবতারণা হয়।

সুনীল সাগর আকাশ আর সূর্যাস্তের মিতালী দেখতে প্রতি বছর হাজার হাজার পর্যটক ছেঁড়া দ্বীপে বেড়াতে আসে। এছাড়া ছেঁড়া দ্বীপে চাঁদের আলোয় জাদুকরী মুগ্ধতার সৃষ্টি হয়। তাই অনেকে পূর্ণিমা রাতে ক্যাম্পিং করতে চলে আসে এই দ্বীপে।

সেন্টমার্টিন ভ্রমণের মূল আকর্ষণ এই ছেড়াদ্বীপ। কেয়াবন বেষ্টিত মনোরম এ দ্বীপটির চারদিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে প্রবাল পাথর। এখানে পানিতে নামতে হলে ধারালো প্রবাল থেকে আপনার পা রক্ষা করতে হলে অবশ্যই আপনাকে প্লাস্টিকের স্যান্ডেল পরতে হবে।

গত একযুগ ধরে নির্জন এ দ্বীপে বাস করছেন রহিমা খাতুন নামে এক নারী। স্বামী মারা যাওয়ার পর সন্তানদের ভরণপোষণের জন্য তাদের যেটুকু জমি ছিল তা বিক্রি করে নিঃস্ব হয়ে যান তিনি। পরে সরকারি অনুমতি নিয়ে বসবাস করছেন এখানে।

ছেলে সাদ্দাম ও পুত্রবধূকে নিয়ে জনমানবহীন এ দ্বীপের বাসিন্দা বলতে তিনি এবং তার পরিবার। প্রতিদিন সকালে নিয়ম করে বাংলাদেশের পতাকা তোলেন এবং সন্ধ্যায় নামিয়ে রাখেন। এখানে বেড়াতে আসা পর্যটকরাই একমাত্র তাদের আয়ের উৎস। এক যুগেরও বেশি সময় ধরে এভাবেই চলছে তার জীবনসংগ্রাম। সরকারি কোনো সাহায্য-সহযোগিতা তো পানই না, সমুদ্র উত্তাল থাকলে ঠিকমতো তিনবেলা খাবার জোটেনা বাংলাদেশের শেষ সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরীদের। এ বছর থেকে কেবল পর্যটন মৌসুমে তাদেরকে সেখানে থাকার অনুমতি দেয়া হচ্ছে। সেন্টমার্টিনে পর্যটক নিষিদ্ধ হওয়ার পর মানবেতর জীবনযাপন করছে পরিবারটি।

Mily

×