ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২১ মে ২০২৫, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

জমজমাট বালিগাঁও বাজার

মোঃ নাজমুল ইসলাম পিন্টু, কন্ট্রিবিউটিং রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ

প্রকাশিত: ১১:৩০, ২১ মে ২০২৫

জমজমাট বালিগাঁও বাজার

ছবি: জনকন্ঠ

এক সময় লৌহজং উপজেলার দিঘলী বাজার খুব জমজমাট ছিলো। ৯০ দশকে দিঘলী ভেঙ্গে যাওয়ার পর বালিগাঁও বাজার জমজমাট হতে থাকে। সড়ক ও নদীপথে যোগাযোগ সুবিধা থাকায় বর্তমান বালিগাঁও বাজার লৌহজং-সিরাজদিখানসহ তিন উপজেলা ও চরাঞ্চলের মানুষের ব্যপক জনপ্রিয়।

ডহরি-তালতলা খাল (ইছামতি নদীর) তীর ঘেঁষে গড়ে উঠেছে বালিগাঁও বাজার। বাজারে সপ্তাহে দুইদিন শুক্রবার ও সোমবার হাট বসে। সড়ক ও নদীপথ ধরে ব্যবসায়ীরা তাদের পসরা সাজিয়ে হাটবারে হাজির হন বালিগাঁও হাটে। মুন্সীগঞ্জ, লৌহজং, সিডারচর, সিরাজদিখানসহ বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যবসায়ীরা ছুটে আসেন এ হাটে। সময়ের পরিক্রমায় নদী পথ, সড়ক পথে বিশেষ সুবিধা থাকাই বালিগাঁও বাজারে ক্রেতার সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। হাটবারে বাজারে ঢুকতেই সড়কের দুই পাশে চোখে পড়ে দেশি বিভিন্ন মৌসুমি শাক-সবজি, ফল, গাছ, দেশি জাতের হাঁস, মুরগি, কবুতর ও লোচা।

তার পাশেই রয়েছে তালার চাবি বানানো, তালা ও ছাতা মেরামত, কবুতর, এবং হাঁস মুরগির বাঁশের তৈরি খাঁচা ও বিভিন্ন ডিজাইনের শীতল পাটি, গোগলা বিক্রির দোকান। হাটবার বালিগাঁও বাজার ঘুরতে ঘুরতে মনে হবে যেন দেশের দুষ্প্রাপ্য সব পণ্যই নিয়ে আসা হয়েছে এ হাটে। এ বাজারে রয়েছে পেঁয়াজ, রসুন আলু, আখের গুড়, খেজুরের গুড়, কাঁচা বাজারের পাইকারী আড়ৎ, সার বীজ ও মসলার দোকান।

এ বাজারের নদীর তীরে রয়েছে বাঁশ, গাছের গুড়ি ও কাঠের আড়ৎ, গাছ চেরাই করার মিল। বালিগাঁও কাঠের জন্য বিখ্যাত। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সড়ক ও নদীপথ হয়ে পাইকার ও ক্রেতা-বিক্রেতা আসে কাঠ, বাঁশ ক্রয়-বিক্রয় করতে ও করাতকলে গাছ চেরাই করতে। দেশের বরিশাল বিভাগীয় অঞ্চলের ব্যবসায়ীমনা মানুষজন দীর্ঘদিন যাবৎ এ বাজারে কাঠের ব্যবসা করে আসছেন।

এ বাজারে-পশুপাখি, মাছ-মাংস, মসলা, মাটির হাঁড়ি, লোহার দা, বটি, কোদাল, নিড়ানি, শেকল, বাঁশের চালুন, ডুলা, কুলা, সাঝি, মাছের জাল, বড়শি, রশি, কাপড়, মিষ্টিজাত খাবার, গাছের চারা, বেত, বাঁশ, নৌকা ইত্যাদি। এতসব পণ্যের মাঝে ৯০ দশকের হারিয়ে যাওয়া বিভিন্ন জিনিসপত্র স্মরণ করিয়ে দেবে পুরোনো দিনের কথা।

বালিগাঁও বাজারের ঐতিহ্যবাহী বিক্রমপুরের মিষ্টি, দই ও রসমালাই ব্যাপক সুনাম রয়েছে। হাটে আসা আমজাদ হোসেন নামে এক পাইকার ক্রেতা বলেন, বালিগাঁও বাজার তার বয়স এক শতাব্দী পার করেছে।

হাটটিকে ঘিরে টঙ্গীবাড়ি ও তার আশপাশের উপজেলা ব্যবসায়ীদের মিলনমেলা তৈরি হচ্ছে বছরের পর বছর। নদী ও সড়কপথের পাশে অবস্থিত হওয়ায় এই হাটে ক্রেতাদের সংখ্যা ব্যাপক হারে বাড়ছেই।

তবে বাজারে যত্রতত্র অটোরিক্সা পার্কিংয়ের কারণে যানজট লেগেই থাকে। রাস্তা দখল করে ট্রাক থামিয়ে মালামাল লোড আনলোড করার কারণে নিত্য যানজট লেগেই থাকে। এ সড়ক দিয়ে পদ্মাসেতু হয়ে মুন্সীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, পূর্ববঙ্গসহ প্রতিদিন এই পথে যাতায়াত করে কয়েক লাখ মানুষ। ঢাকা না গিয়ে শর্টকাট রাস্তা হিসেবে এই পথে ব্যাবহার করে থাকে। এতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে পথচারী, স্কুল শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ। তাই সড়ক প্রশস্ত করার দাবী জানিয়েছে স্থানীয়রা।

মুমু

×