ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১০ মে ২০২৫, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২

অদম্য রুবিনা চোখ হারালেও হারাননি মনের জোর

নিজস্ব সংবাদদাতা, নান্দাইল, ময়মনসিংহ

প্রকাশিত: ২১:৪৩, ৯ মে ২০২৫

অদম্য রুবিনা চোখ হারালেও হারাননি মনের জোর

শ্রুতি লেখকের মাধ্যমে দিচ্ছেন পরীক্ষা

২০২৩ সালে বিদ্যালয়ে আসার পথে ইজিবাইক দুর্ঘটনায় প্রাণে বেঁচে গেলেও দুইটি চোখ হারান সানজিদা আক্তার রুবিনা (১৮)। তখন পাগলের মতো হয়ে গিয়েছিলেন। পরে শিক্ষক ও প্রতিবেশীদের সাহসে পড়া লেখা চালিয়ে যেতে সাহস পায় সে। চোখে দেখতে না পেলেও হার মানতে রাজি নয় রুবিনা। তাইতো সকল প্রতিকূলতাকে পেছনে ফেলে এবার নান্দাইল উপজেলার মুশুলি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মানবিক বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। আর তার হয়ে শ্রুতি লিখনের কাজ করছে ৮ম শ্রেণিতে পড়ুয়া রাইফা ইসলাম (১৫)।
মুশুলি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে অবস্থিত কেন্দ্রের ১০৫ নম্বর কক্ষে অনেকের সঙ্গে বেঞ্চে বসে পরীক্ষায় দিচ্ছে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী রুবিনা। প্রশ্নের উত্তরে মৃদু কণ্ঠে রুবিনা বলে দিচ্ছে আর তা শুনে খাতায় লিখে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া রাইফা ইসলাম। রাইফা জানায়, শ্রুতি লিখনের কাজ করতে পেরে বেশ আনন্দ লাগছে। সে মুশুলি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। রুবিনা আপু বলে দেন আর আমি খাতায় লিখি। আপু এসএসসিতে ভালো রেজাল্ট করলে আমার খুব ভালো লাগবে। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী রুবিনা বলেন, বিদ্যালয়ে আসার পথে যে দুর্ঘটনায় আমি চোখ হারিয়েছি, সে সময় একজন মারা যায়। পরিবার, প্রতিবেশী এবং শিক্ষকদের সহযোগিতায় পড়া লেখা চালিয়ে যেতে সাহস পাই। চোখ হারালেও মনের জোর হারাইনি। মুশুলি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাজাহান ভূঁইয়া বলেন, রুবিনা আমার বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। একটি সড়ক দুর্ঘটনায় সে দুটো চোখ হারিয়েছে। পরে তার পড়ার প্রতি আগ্রহ দেখে ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডে আবেদন করলে বোর্ড একজন শ্রুতি লিখনের অনুমতি দেয়। নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার সারমিনা সাত্তার বলেন, রুবিনা যে কেন্দ্রে পরীক্ষা দিচ্ছে সেখানে গিয়ে মেয়েটার খোঁজ নিয়েছি। অদম্য সাহস তার। রুবিনা যাতে স্বাচ্ছন্দে পরীক্ষা দিতে পারে সেজন্য সবাইকে সহযোগিতা করতে বলেছি।

প্যানেল

×