ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০৫ মে ২০২৫, ২২ বৈশাখ ১৪৩২

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করাসহ ১২ দফা দাবি হেফাজতের

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২৩:০৮, ৩ মে ২০২৫; আপডেট: ২৩:১০, ৩ মে ২০২৫

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করাসহ ১২ দফা দাবি হেফাজতের

রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক (ইনসেটে)

নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিলসহ চার দফা দাবিতে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ করেছে কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম, বাংলাদেশ। সমাবেশ থেকে আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী দল হিসেবে ঘোষণাসহ ১২ দফা দাবি জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম। শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত মহাসমাবেশে এসব দাবি জানান সংগঠনটির নায়েবে আমির মাওলানা মাহফুজুল হক। 
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরীর সভাপতিত্বে মহাসমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন দৈনিক আমার দেশের সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, আলোচিত ইসলামি বক্তা ও  জৈনপুরের পীর মুফতি ড. এনায়েত উল্লাহ আব্বাসী, জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহসহ হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের শীর্ষ নেতা ও বরেণ্য ওলামায়ে কেরামগণ।
সকাল ৯টায় সমাবেশ শুরুর কথা থাকলেও ফজরের পর পর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমবেত হতে শুরু করেন বিভিন্ন মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনগণ। সমাবেশে অংশ নিতে আসা নেতা-কর্মীদের ভিড়ে ভোর থেকে শাহবাগ ও আশপাশের এলাকায় যান চলাচল সীমিত হয়ে পড়ে।
নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের কুরআন-সুন্নাহবিরোধী প্রতিবেদনসহ কমিশন বাতিল, সংবিধানে আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস পুনর্বহাল, ফ্যাসিবাদের আমলে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, শাপলা চত্বরে গণহত্যাসহ সব হত্যাকা-ের বিচার এবং ফিলিস্তিন ও ভারতে মুসলিম গণহত্যা-নিপীড়ন বন্ধের দাবিতে ঢাকায় এই মহাসমাবেশের আয়োজন করে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ।
মহাসমাবেশে জৈনপুরী দরবার শরীফের পীর ড. এনায়েত উল্লাহ আব্বাসী সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ও সামাজিক ইস্যু নিয়ে বলেন, একদিকে বিতর্কিত নারী সংস্কার কমিশন গঠন করে আমাদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়া হচ্ছে, অন্যদিকে মানবিক করিডরের সিদ্ধান্ত নিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে। এই বিতর্কিত কমিশন আমাদের দৃষ্টি সরিয়ে রেখে বাংলাদেশের স্বাধীনতা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সওদাবাজির অংশ কিনা, তা খতিয়ে দেখা উচিত।
ড. আব্বাসী আরও বলেন, হেফাজত রাজনীতিতে যাবে না, কিন্তু রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ৫৩ বছরের ইতিহাস কলঙ্কিত। আলেম-ওলামা ও মাদ্রাসা ছাত্রদের রক্তে পা রেখে যারা ক্ষমতায় গেছে, তারাই পরে ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। এবার তাদের সেই সুযোগ আর দেওয়া হবে না। নারী কমিশন ইস্যুতে তিনি বলেন, শুধু প্রস্তাব বাতিল করলেই চলবে না, যারা এই প্রস্তাব করেছে, তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।
হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির ও খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের বলেন, আমাদের দাবি স্পষ্ট, আমরা মুসলিমদের পক্ষ থেকে দাবি করছি, যে নারী সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে, তা অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। এই কমিশন রেখে কোনো সংস্কার হবে না।

আমরা দাবি করছি, এই কমিশন যে প্রস্তাব পেশ করেছে, তা প্রত্যাহার করতে হবে। জাতি তা প্রত্যাহার করেছে। আর কোনো বিকল্প নেই। মানবিক করিডরের নামে কোনো ব্যবস্থা করা যাবে না। দেশের জনগণের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। তাদেরকে এড়িয়ে গিয়ে না জানিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ জনগণ মানবে না, মানবে না।
কাদের বলেন, আমরা দাবি করেছি শাপলা চত্বরে গণহত্যার বিচার করতে হবে। আমরা দাবি করেছি, জুলাই-আগস্টে গণহত্যার বিচার করতে হবে। আওয়ামী লীগকে দল হিসেবে বিচার করতে হবে। বিচারের আগ পর্যন্ত তাদের কোনো নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কোনো সুযোগ থাকতে পারে না।
মহাসমাবেশ থেকে সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন মেনে নেওয়া হবে না। শহীদদের রক্তের ওপর দিয়ে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে আসবে না। এই সংস্কার দেশের সবচেয়ে বড় সংস্কার। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। আওয়ামী লীগ মারা গেছে বাংলাদেশে, জানাজা হয়েছে দিল্লিতে।
তিনি বলেন, ভুলে গেলে চলবে না, আওয়ামী লীগ কোনো রাজনৈতিক দল নয়। একাত্তর পরবর্তী সময়ে আপনারা দেখেছেন, শেখ মুজিব বাকশাল কায়েম করে গণতন্ত্রকে গলাটিপে হত্যা করেছেন। এই বাকশাল দিয়ে ৩০ হাজার জাসদকর্মীকে হত্যা করে সারা দেশে কসাইতন্ত্র কায়েম করেছে। তাদের লুটপাটের কারণে চুয়াত্তরের দুর্ভিক্ষে ১৫ লাখ মানুষ মারা গেছে।
খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ও হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক বলেন, বাংলার মাটিতে দাঁড়িয়ে আমরা বলতে চাই, নারী সংস্কারের নামে আল্লাহর কুরআনকে, ইসলামকে কটাক্ষ করা হয়েছে। ধর্মীয় উত্তরাধিকার বিধান, পারিবারিক বিধানকে নারী-পুরুষের বৈষম্যের প্রধান কারণ হিসেবে আখ্যায়িত করে নারী বিষয়ক কমিশন এ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত প্রদান করেছে।

ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত প্রদান করার অপরাধে তাদের বিরুদ্ধে আমরা রাষ্ট্রের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা দেখতে চাই। হেফাজতে ইসলাম বলতে চায়, এই তথাকথিত পশ্চিমা ধ্যান-ধারণায় বিশ্বাসী, বিতর্কিত নারীবাদীদের আদর্শ ও দর্শন নয় বরং হেফাজতে ইসলাম আল্লাহ ঘোষিত নারীর ন্যায্য অধিকারে বিশ্বাসী।
প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ করে মামুনুল হক বলেন, মনে রাখবেন, একাত্তর সালে মুক্তিযোদ্ধারা বলেছিল, আমরা পিন্ডির গোলামির জিঞ্জির ছিন্ন করেছি, দিল্লির দাসত্ব করার জন্য নয়। চব্বিশের জুলাইয়ের স্বাধীনতা সংগ্রামের পর আমি বলতে চাই, আমরা দিল্লির দাসত্বের শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হয়েছি, নিউইউর্কের গোলামি করার জন্য নয়। যদি বাংলাদেশকে ওয়াশিংটনের দাসে পরিণত করার কোনো চক্রান্ত করা হয়, হিউম্যানিটারিয়ান করিডরের নামে বাংলাদেশের বুকের ওপর দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব হরণ করার জন্য অপতৎপরতা চালানো হয়, তাহলে সারা দেশের মানুষের প্রতি আমার আহ্বান, যুদ্ধের প্রস্তুতি নাও, দেশের জন্য যুদ্ধের প্রস্তুতি নাও।
তিনি আরও বলেন, আমরা পরিষ্কারভাবে বলি, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫৩ বছরের মাথায় এসে সংবিধানসহ রাষ্ট্রের ব্যাপক সংস্কার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সংস্কার কার্যক্রম চলাকালে বহুত্ববাদের মতো বিতর্কিত, একত্ববাদ বিরোধী কোনো ধারণা বাংলার মানুষ গ্রহণ করবে না। আমরা সংবিধানে আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা এবং বিশ্বাস পুনর্বহালের দাবি করেছি। 
সমাবেশে আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেন, রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে ১১ বছর আগে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকা-ের শিকার সবার পক্ষে হেফাজত ইসলামকে দায়িত্ব নিয়ে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা করতে হবে। 
২০১৩ সালে শাপলা চত্বরের ঘটনার জন্য স্বৈরাচার শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলা করার আহ্বান জানিয়ে আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেন, আজকে আমি এখানে উপস্থিত হয়েছি শাপলা চত্বরে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য। একই সঙ্গে আমি জুলাই বিপ্লবের শহীদদেরও শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি। আমাদের মনে রাখতে হবে ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে গণহত্যার পর এই প্রথম স্বাধীনভাবে কোনো প্রোগ্রাম করতে পেরেছি।
মাহমুদুর রহমান বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, আমি একটা বিষয়ে অবাক হয়ে যাচ্ছি, হেফাজতের পক্ষ থেকে কেন এতদিনেও সেই দানব ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়নিই। আপনারা কেন এখনো মামলা দায়ের করেননিই, আমি জানি না। আমি মনে করি, শাপলা চত্বরে যতজন নিহত হয়েছেন তাদের সবার হয়ে গণহত্যার দায়ে হাসিনার নামে মামলা করতে হবে। এটাই আমার প্রথম দাবি। দ্বিতীয় দাবি, বিশ্বের মুসলিমদের ওপর নির্যাতনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলা।
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির মাওলানা শাহ্ মুহিব্বুল্লাহ্ বাবুনগরী বলেছেন, কুরআন-সুন্নাহবিরোধী কোনো আইন মেনে নেওয়া হবে না।  নারী সংস্কার কমিশন ভেঙে দিয়ে পুনর্গঠন করতে হবে। হেফাজতে ইসলাম নারীদের অধিকার ও মূল্যবোধের পক্ষে।
হেফাজত ইসলামের আমির বলেন, ভারতীয় ফ্যাসিবাদ ও আওয়ামী দালালদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। দেশে কোনো ফ্যাসিস্টের ঠাঁই হবে না। সংখ্যালঘুদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
বাবুনগরী বলেন,  গত ১৫ বছর দেশের মানুষ স্বাধীনতা ভোগ করতে পারেনি। ২৪-এর জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আমাদের দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জন হয়েছে। শাপলা চত্বর  ও মোদিবিরোধী আন্দোলনে হত্যাকা-ের বিচার দাবি করেন তিনি।
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান মহাসমাবেশ থেকে নতুন দুটি কর্মসূচি ঘোষণা করেন। যার মধ্যে নারীর ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে তিন মাসের মধ্যে বিভাগীয় সম্মেলন এবং আগামী ২৩ মে বাদ জুমা চার দফা আদায়ে বিক্ষোভ মিছিল করবে সংগঠনটি।
এ সময় মহাসমাবেশ থেকে হেফাজতের ১২ দফা দাবি পেশ করেন তিনি। যার মধ্যে রয়েছে-১. নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন ও তাদের কুরআন বিরোধী প্রতিবেদন অবিলম্বে বাতিলপূর্বক আলেম-ওলামাদের পরামর্শক্রমে ধর্মপ্রাণ বৃহত্তর নারী সমাজের প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করে নতুন কমিশন গঠন করতে হবে।

নারীর সামাজিক উন্নয়নে পশ্চিমা মূল্যবোধ নয়, বরং আমাদের নিজস্ব সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধ ইতিহাস ও ঐতিহ্যের আলোকেই বাস্তবমুখী সংস্কারের দিকে যেতে হবে। ২. সংবিধানে আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস পুনঃস্থাপন করতে হবে। ধর্মপ্রাণ গণমানুষের ইমান ও আমল রক্ষার্থে বহুত্ববাদ নামক আত্মঘাতী ধারণা থেকে সরকারকে সরে আসতে হবে। এছাড়া লিঙ্গ পরিচয়, লিঙ্গ বৈচিত্র্য, লিঙ্গ সমতা, তৃতীয় লিঙ্গ বা থার্ড জেন্ডার ইত্যাদি শব্দের মারপ্যাঁচে কাউকে বাদ দিয়ে নয় এমন ধোঁয়াশাপূর্ণ স্লোগানের অন্তরালে এবং অসাম্প্রদায়িক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক শব্দের আড়ালে এলজিবিটি ও ট্রান্সজেন্ডারবাদের স্বীকৃতি ও অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে সমাজবিধ্বংসী ধর্মবিরুদ্ধ সমকামীবান্ধব সমাজ প্রতিষ্ঠার পাঁয়তারা বন্ধ করতে হবে।

৩. শাপলা চত্বর ও জুলাই গণহত্যার বিচারে গতি আনতে ট্রাইব্যুনালের সক্ষমতা আরও বৃদ্ধি করতে হবে। জাতীয় নির্বাচনের আগেই শেখ হাসিনা ও তার চিহ্নিত দোসরদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। ৪. গণহত্যাকারী ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী দল হিসেবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে বিচার নিশ্চিত করতে হবে। বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তাদের কার্যক্রম ও তৎপরতা নিষিদ্ধ করতে হবে। ৫. আল্লাহ ও তার রাসুল (সা.) এর নামে কটূক্তিকারী ও বিষোদ্গার বন্ধে কঠোর আইন করতে হবে।

গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে ধর্মীয় অবমাননা সংক্রান্ত শাস্তির আইনি ধারাগুলো বাদ দেওয়ার সুপারিশ বাতিল করতে হবে। এ ব্যাপারে কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না। ৬. চট্টগ্রামে উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের হাতে শহীদ সাইফুল ইসলাম হত্যার উসকানিদাতা চিন্ময় দাসের জামিন প্রত্যাহারপূর্বক তার দৃষ্টান্তমূলক বিচার করতে হবে। ৭. ফ্যাসিস্ট হাসিনার শাসনামলে সারা দেশে প্রতিবাদী আলেম-ওলামা ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও ইসলামমনা তরুণদের বিরুদ্ধে হওয়া মিথ্যে ও বানোয়াট সব মামলা অতিসত্বর প্রত্যাহার বা নিষ্পত্তি করতে হবে অন্তর্বর্তী সরকারকে।

সেই সঙ্গে জঙ্গি নাটক বা জঙ্গি কার্ড খেলে বাংলাদেশকে ইসলামপন্থি ও আলেম-ওলামাদের গত ১৫ বছর যারা নির্যাতন চালিয়েছিল তাদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিত করতে হবে। ৮. গাজার মুসলমানদের ওপর অবৈধ রাষ্ট্র, ইসরাইলের চলমান গণহত্যা ও ভারতে সংখ্যালঘু মুসলিম নির্যাতনের প্রতিবাদে আমাদের গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী এই সরকারকে কূটনৈতিকভাবে আরও উচ্চকণ্ঠ হতে হবে এবং দেশের সর্বস্তরের জনতাকে ইসরাইলি-ভারতীয় পণ্য বয়কট করতে হবে। ৯. ৯০ শতাংশ মুসলমানের দেশ।

শিক্ষার প্রাথমিক পর্যায়ে থেকে উচ্চ পর্যায় পর্যন্ত সর্বপর্যায়ে ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক করতে হবে। ১০. রাখাইনকে মানবিক করিডর প্রদানে সরকারের সম্মত হওয়া সম্পূর্ণরূপে আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। আমাদের ভৌগোলিক নিরাপত্তার স্বার্থে এ অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্ত থেকে সরকারকে অবশ্যই অনতিবিলম্বে ফিরে আসতে হবে। ১১. চট্টগ্রামের পার্বত্য অঞ্চলে ভিনদেশী মিশনারি অপতৎপরতা ও দৌরাত্ম্য বন্ধে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে, বাংলাদেশে ভৌগোলিক অখ-তায় ও নিরাপত্তা সংকট কমাতে আলেম সমাজের দাওয়াতি কার্যক্রমকে আরও নিরাপদ ও সুযোগ করে দিতে হবে।

সেখানে সামরিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও বৃদ্ধি করা ছাড়াও পাহাড়ি ও নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে সামাজিক ও রাজনৈতিক সমঝোতা ও স্থিতিশীলতা বিনির্মাণে রাষ্ট্রীয় তৎপরতা আরও বাড়াতে হবে। ১২. কাদিয়ানীদের বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয়ভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। সাধারণ মুসলমানদের ইমান-আকিদা রক্ষার্থে কাদিয়ানীদের অপতৎপরতা বন্ধ করতে হবে।

×