ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

অযত্নে পড়ে আছে বেগম রোকেয়া স্মৃতিকেন্দ্র

নিজস্ব সংবাদদাতা, রংপুর

প্রকাশিত: ২৩:১০, ৯ ডিসেম্বর ২০২৩

অযত্নে পড়ে আছে বেগম রোকেয়া স্মৃতিকেন্দ্র

বেগম রোকেয়া স্মৃতিকেন্দ্র আজও পড়ে আছে অবহেলায়

শনিবার নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়ার ১৪৩তম জন্মদিন ও ৯১তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। নারী জাগরণের এই পথিকৃৎ ১৮৮০ সালের আজকের এই দিনে রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার পায়রাবন্দ গ্রামে জন্ম নেন এবং ১৯৩২ সালের ৯ ডিসেম্বর দিনটিতেই মৃত্যুবরণ করেন। 
প্রতি বছরই ৯ ডিসেম্বর বেগম রোকেয়ার জন্ম ও মৃত্যু দিবস পালনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রোকেয়াকে নিয়ে যত আয়োজন। এর বেশি কিছু নয়।  নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের স্মৃতিবিজড়িত ভিটেমাটি অযতœ-অবহেলায় পড়ে আছে। তার জীবনকর্ম নিয়ে গবেষণায় চালু থাকা স্মৃতিকেন্দ্রটিতে নেই ন্যূনতম উপকরণ। কলকাতা থেকে পায়রাবন্দে রোকেয়ার দেহাবশেষ আনার উদ্যোগটিও লাল ফিতায় বন্দি। ৯ ডিসেম্বর এই মহীয়সী নারীর জন্মদিন ও মৃত্যুবার্ষিকী। দিনটি কেবলই আনুষ্ঠানিকতা আর নানা আশ্বাসে কেটে যায়।
বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন উপমহাদেশের নারী সমাজকে কুসংস্কারের দেওয়াল ছেদ করেছিলেন। গৃহবন্দি নারীদের হাতে তুলে দিয়েছিলেন আলোর মশাল। 
সেই মহীয়সী নারীর স্মৃতিবিজড়িত জন্মস্থান আজও পড়ে আছে অবহেলায়। উদ্যোগের অভাবে এখানে রোকেয়া চর্চা ও পর্যটন কেন্দ্রের দ্বারও রুদ্ধ। নারী মুক্তির আলোর দিশারী বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের জন্মভিটায় ১৯৯৭ সালে স্থাপিত হয় একটি স্মৃতিকেন্দ্র। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করা এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যথাযথ তদারকির অভাবে স্মৃতিকেন্দ্রটির অবস্থা এখন শোচনীয়। ২২ বছরেও আলোর মুখ দেখেনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক ইচ্ছায় গড়ে তোলা বেগম রোকেয়া স্মৃতিকেন্দ্রটি। আইনি জটিলতা কাটলেও সরকারি উদ্যোগের অভাবে এটি পড়ে আছে অবহেলায়।
১৯৯৭ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পায়রাবন্দে বেগম রোকেয়া স্মৃতিকেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

২০০১ সালে তিনি এটি উদ্বোধন করেন। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রথমে কেন্দ্রটির দায়িত্বভার নিলেও তিন বছর পর দায়িত্ব পায় এ মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাংলা একাডেমি। ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে বাংলা একাডেমির অধীনে স্মৃতিকেন্দ্রটি হস্তান্তরের দাবি জানিয়ে উচ্চ আদালতে রিট করা হয়। তারপর বাংলা একাডেমির কাছে হস্তান্তর করা হয়।
বাংলা একাডেমির মানব সম্পদ উন্নয়ন ও পরিকল্পনা বিভাগের পরিচালক কেএম মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে প্রকল্পটি পরিকল্পনা কমিশনের সবুজ পাতায় তালিকাভুক্ত হয়েছে। ২০২৩ থেকে ২০২৬ অর্থবছরের মধ্যে এটি বাস্তবায়নের কথা রয়েছে। স্থাপত্য অধিদপ্তর স্মৃতিকেন্দ্রের নকশা প্রণয়ন করবে।
রোকেয়া স্মৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম দুলাল বলেন, সবশেষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে স্মৃতিকেন্দ্রটি বিকেএমই গার্মেন্টস প্রশিক্ষণকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার হয়। এরপর দখলমুক্ত করে রোকেয়া চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করার দাবি থাকলেও বাস্তবে তেমন কিছু হয়নি। বাংলা একাডেমি নতুন করে এ বিষয়ে পরিকল্পনা নিয়েছে।

×