
উপজেলা হারুয়ালছড়িতে বড়বিল নয়াহাট সড়কে সেতুর সংযোগ সড়কের মাটি নেই
উপজেলার হারুয়ালছড়িতে বড়বিল-নয়াহাট সড়কে ফটিকছড়ি খালের ওপর একটি সেতুর সংযোগ সড়কের অভাবে ৬ গ্রামের হাজারো মানুষের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ফটিকছড়ি খালের হারুয়ালছড়ি ১নং ওয়ার্ডের ওজানপাড়া ত্রিপুরা পাড়ার অংশে ৩৬ ফুটের সেতুটি খালের এক অংশে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে নির্মাণ করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর। বিশাল এ খালের ওপর ছোট্ট এ সেতুটি যেন এক পাশেই দাঁড়িয়ে আছে। যার কারণে সেতুটি নির্মাণের পর বছর না যেতেই পানির তীব্র স্রোতে সেতুর এক পাশ ভেঙে সড়ক তলিয়ে যায়। খালের এক অংশে সেতুর বাকিটা ফাঁকা। বর্তমানে সেতুর একপাশে কোনো সড়ক নেই। সড়ক থেকে সেতুর দূরত্ব প্রায় ৫০ থেকে ৬০ ফুট। সাধারণ মানুষ খালের পানি পাড় হয়েই পায়ে হেঁটে যাতায়াত করছে।
স্থানীয়রা জানান, বর্ষা মৌসুমে এ খালের পানি বেড়ে যায়। এত বেশি স্রোত থাকে নৌকা দিয়েও পারাপারের ঝুঁকি বেড়ে যায়। কত মানুষ যে এ খাল দিয়ে ভেসে গেছে তার কোনো হিসাব নেই। সেতুটি নির্মাণের পরের বছরে সেতুর উভয় পাশে ভেঙে যায়। ২-৩ বার ঠিক করা হলেও পানির তীব্র স্রোতে ছোট্ট এ সেতুর সড়কের এক পাশ ভেঙে গিয়ে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। খরা মৌসুমে খালের পানি কমে গেলে খাল পার হয়ে যাতায়াত করা গেলেও বর্ষায় এ গ্রামগুলোর মানুষ যাতায়াতে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। জানা যায়, উজানপাড়া, টিলাপাড়া, ডেবিলিখুল, পিনপিনিয়া ও ২টি চা বাগানের শ্রমিকসহ ৬ গ্রামের মানুষ চলাচল করে এ সেতু দিয়ে। বর্ষার সময় সব ধরনের যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়। বন্ধ হয়ে যায় শিক্ষার্থীদের স্কুল/কলেজে যাওয়া-আসা। কেউ অসুস্থ হলে হাসপাতাল, ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া যায় না। ১০ থেকে ১৫ দিন পর্যন্ত যাতায়াত বন্ধের কারণে ওই এলাকার মানুষের রুজি-রোজগার সম্পুর্ণ বন্ধ হয়ে পড়ে। বর্তমানে ওই খালের ওপর যেখানে শতফুট দীর্ঘ সেতুর প্রয়োজন, সেখানে নির্মাণ করা হয়েছে ৩৬ ফুট। যার কারণে বর্ষায় পাহাড়ি ঢলের তোড়ে ওই সেতুর পাশের সড়কের মাটি পানির স্রোতে চলে যায়। ফলে সেতু থেকে সড়ক বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০১৫/১৬ অর্থবছরে বড়বিল নয়াহাট-সড়কে ফটিকছড়ি খালের ওপর (আরসিসি বক্স কালভার্ট) সেতুটি প্রায় ২৯ লাখ ৫৮ হাজার টাকা প্রাক্কলিত অর্থের পরিমাণে নির্মাণ করা হয়।
ঐ এলাকার সচিন্দ্র লাল ত্রিপুরা বলেন, আমাদের এখানে সবাই শ্রমিক। দিন এনে দিন খায়। কাজ করতে না পারলে উপবাস থাকে। এমনকি, বর্ষা মৌসুমে খালটি পার হতে গিয়ে এ যাবৎ অনেক প্রাণহানি ঘটেছে। এলাকাবাসীর দাবি, বর্তমান সেতুর পাশে আরও একটি সেতু নির্মাণ জরুরি হয়ে পড়েছে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাব্বির রাহমান সানিকে অবগত করানো হলে তিনি বিষয়টি দেখবেন বলে জানান।