ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

পেকুয়ায় রাবার ড্যামে শত শত ছিদ্র

দেড় হাজার একর জমিতে বোরো আবাদ অনিশ্চিত

সংবাদদাতা, পেকুয়া, কক্সবাজার

প্রকাশিত: ২২:১৯, ৪ ডিসেম্বর ২০২২

দেড় হাজার একর জমিতে বোরো আবাদ অনিশ্চিত

কক্সবাজারের পেকুয়ায় সোনাইছড়ি রাবার ড্যামে ছিদ্র

পেকুয়া সোনাইছড়ি রাবার ড্যামের রাবারে শত শত ছিদ্র সৃষ্টি হওয়ায় দেড় হাজারের বেশি একর জমিতে বোরোর চাষাবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এ নিয়ে স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে দুশ্চিন্তা ভর করেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, টৈটং ইউনিয়নের নাপিতখালীর দক্ষিণপাড়া ও বারবাকিয়া ইউনিয়নের রাহাত আলী পাড়ার মাঝখান দিয়ে বয়ে যাওয়া টৈটং খালের ওপর সোনাইছড়ি রাবার ড্যাম প্রকল্প। এই রাবার ড্যামের উত্তর অংশের অন্তত তিনফুট রাবার ছিঁড়ে গেছে। পাশে ছোট-বড় অন্তত দেড় শতাধিক ছিদ্র। রাবার ড্যামের পাহারাদার আমান উল্লাহ বলেন, রাবারের ব্যাগ ছিঁড়ে যাওয়ায় ও ছিদ্র হওয়ায় ব্যাগ ফুলানো যায় না। ব্যাগ ফুলালে আধাঘণ্টার মধ্যে বাতাস চলে যায়। স্থানীয় লোকজন বলেন, সোনাইছড়ি রাবার ড্যাম প্রকল্পের মাধ্যমে বারবাকিয়া ইউনিয়নের নয়াকাটা, নোয়াখালীপাড়া, রাহাত আলীপাড়া, সবজীবনপাড়া, মৌলভীবাজার পাড়া, টৈটং ইউনিয়নের সোনাইছড়ি, নাপিতখালী, বটতলী, মৌলভীপাড়া, টৈটং বাজারপাড়ার অন্তত এক হাজার ৬৫০ একর জমির বোরোর চাষাবাদ নিশ্চিত হয়।
টৈটং বিলে ৩০ একর জমিতে ধানের চাষ করেন হিরাবনিয়া এলাকার নূরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ২০১০ সালের আগে মাটির ক্রস বাঁধ দিয়ে অন্তত আড়াই হাজার একর জমির বোরোর আবাদ নিশ্চিত হতো। রাবার ড্যাম হওয়ার পর প্রকল্প এলাকার দুই হাজার ৩৩৫ একর জমিতে চাষাবাদ হতো। সেচ নালা না থাকায় ও খাল খনন না হওয়ায় বর্তমানে ড্যামের সুবিধা নিয়ে এক হাজার ৬৫০ একর জমিতে চাষ হয়। এখন ড্যামের রাবার ছিঁড়ে যাওয়ায় ও ছিদ্র হওয়ায় চাষাবাদ অনিশ্চিত হয়ে গেছে। পেকুয়া উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্র জানায়, ২০০৫ সালে নেদারল্যান্ডস সরকার ও ইন্টারন্যাশনাল ফান্ড ফর এগ্রিকালচারাল ডেভেলপমেন্ট (ইফাদ) যৌথভাবে ও এলজিইডির উদ্যোগে সোনাইছড়ি রাবার ড্যাম প্রকল্পটি নির্মাণ করা হয়। পরবর্তীতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর টৈটং সোনাইছড়ি পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির কাছে হস্তান্তর করে। ২০১০ সাল থেকে এলজিইডির অধীনে এই সমিতি রাবার ড্যাম প্রকল্পটি দেখভাল করে আসছে।
সোনাইছড়ি পানি ব্যবস্থাপনা সমিতির সভাপতি নূরুল কবির বলেন, ২০২১ সাল থেকে ড্যামে নতুন রাবার ব্যাগ সংযোজনের জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরকে তাগাদা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তারা কোনো ব্যবস্থা নেননি। এখন এক হাজার ৬৫০ একর জমিতে বোরো চাষাবাদ অনিশ্চিত হয়ে গেছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর, কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী আনিসুর রহমানের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে পেকুয়া উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলী শাহ্জালাল বলেন, এই রাবার ড্যাম সংস্কারের জন্য আমরা সম্ভাব্য এক কোটি ৯০ লাখ টাকার একটি প্রকল্প পাঠিয়েছি। পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সরেজমিনে ঘুরেও গেছেন। তবে টেন্ডার হতে একটু সময় লাগবে। এই মৌসুমটা স্থানীয়ভাবে মাটির বাঁধ দিয়ে হলেও চালিয়ে নিতে হবে। চকরিয়া-পেকুয়া আসনের সংসদ সদস্য জাফর আলম বলেন, আমি চেষ্টা করছি সেচ সংক্রান্ত বিষয়টি সমাধান করার।

 

×