
নিজস্ব সংবাদদাতা, নাটোর ॥ টানা ১৬ বছর পৌরসভার দায়িত্ব পালনের পর অবশেষে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে নাটোরের বাগাতিপাড়া পৌরসভার মেয়র ও বাগাতিপাড়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোশারফ হোসেনকে। রাষ্ট্রের স্বার্থের পরিপন্থি কাজ করা, সরকারী দায়িত্ব পালন না করা, সরকারী নির্দেশনা অমান্য করা, জাতীয় দিবসে অংশগ্রহণ না করাসহ এডিপির অর্থ ব্যয়ে ব্যপক অনিয়মের অভিযোগে স্থানীয় সরকারের প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এরই মধ্য দিয়ে বাগাতিপাড়া পৌরসভার মেয়রের দায়িত্ব হারালেন বিএনপি নেতা মোশারফ হোসেন। ২০০৬ সালে তিনি পৌরসভার নির্বাচনে এক বার চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করেই টানা ১৬ বছর পৌরসভার গুরুত্বপূর্ণ এই দায়িত্বে বহাল ছিলেন। মামলা চলমান থাকায় ২০০৬ সালের পর আর এই পৌরসভায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। যেকারণে খেয়ালখুশিমত চলতো পৌরসভার কাজ। দীর্ঘদিন উন্নয়ন বঞ্চিত রয়েছেন পৌরবাসী। মোশারফ হোসেনের মেয়রপদে সাময়িক বরখাস্তের খবরে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীরাসহ পৌরবাসী অনেকেই খুশি।
সূত্রে জানা গেছে, গত ২১ জানুয়ারি স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-সচিব ফারজানা মান্নান স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, মেয়র মোশাররফ পৌর স্বার্থের পরিপন্থী কাজ করেছেন। এছাড়া তার বিরুদ্ধে সরকারী দায়িত্ব পালন না করা, সরকারী নির্দেশনা অমান্য করা, জাতীয় দিবসে অংশগ্রহণ না করা ও এডিপির অর্থ ব্যয়ে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। এগুলো ২০০৯ সালের পৌর আইনের ধারা ৩১, উপধারা ১ এর খ ও ঘ অনুসারে রাষ্ট্রের পক্ষে হানিকর ও ক্ষমতার অপব্যবহার পর্যায়ভুক্ত। অভিযোগগুলো তদন্ত করেন বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসক। তাদের সুপারিশের ধারাবাহিকতায় মন্ত্রণালয় মেয়র মোশারফকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠায়। পাঠানো জবাব সন্তোষজনক না হয়নি। উপরোন্তু মেয়র মোশাররফ এডিপির অর্থ ব্যয়ের অনিয়মের কথা স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছেন। এমন অবস্থায় পৌর আইন ২০০৯, ধারা ৩১, উপধারা ১ অনুযায়ী এই মেয়রকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
পৌরসভাটি প্রতিষ্ঠার পর ২০০৪ সালের ২৬ জুলাই প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পান মোশারফ হোসেন। এরপর ২০০৬ সালে প্রথম নিবার্চনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হন। এরই ধারাবাহিকতায় ২০০৮ সালে পদবি পরিবর্তন হয়ে মেয়র হন তিনি। এভাবেই প্রতিষ্ঠার পর থেকে এই পৌরসভার চেয়ারে তিনি আসীন রয়েছেন একটানা প্রায় ১৬ বছর।