ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০৪ আগস্ট ২০২৫, ২০ শ্রাবণ ১৪৩২

৬০০ বছর পর আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত, ছাইয়ের কুণ্ডলী ৬ কিলোমিটার উঁচুতে

প্রকাশিত: ১১:১২, ৪ আগস্ট ২০২৫

৬০০ বছর পর আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত, ছাইয়ের কুণ্ডলী ৬ কিলোমিটার উঁচুতে

ছবি: সংগৃহীত

রাশিয়ার কামস্কটকা উপদ্বীপে ৬০০ বছর পর হঠাৎ অগ্ন্যুৎপাত হয়েছে একটি সুপ্ত আগ্নেয়গিরিতে। গত রোববার ‘ক্রাশেনিনিকভ’ নামের ওই আগ্নেয়গিরি থেকে হঠাৎ বের হয় ছাইয়ের বিশাল কুণ্ডলী, যার উচ্চতা পৌঁছায় প্রায় ৬ কিলোমিটার পর্যন্ত।

দেশটির পূর্বাঞ্চলে শক্তিশালী ভূমিকম্পের কয়েকদিন পরই এই অগ্ন্যুৎপাত হয়। রুশ বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, সম্প্রতি আঘাত হানা ৮.৮ মাত্রার ভূমিকম্পই হয়তো এই বিস্ফোরণের মূল কারণ।

৬০০ বছরের নীরবতা ভাঙল আগ্নেয়গিরি

কামস্কটকা ভলকানিক ইরাপশন রেসপন্স টিমের প্রধান ওলগা গিরিনা রুশ রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আরআইএকে জানান, ‘৬০০ বছর পর এই প্রথমবারের মতো ক্রাশেনিনিকভ আগ্নেয়গিরিতে প্রমাণিত অগ্ন্যুৎপাত ঘটেছে। ইতিহাসে এমন ঘটনার নজির আগে নেই।’

কামস্কটকা উপদ্বীপের এই এলাকা আগ্নেয়গিরির জন্য পরিচিত হলেও ক্রাশেনিনিকভ দীর্ঘদিন ছিল সুপ্ত অবস্থায়। তবে সাম্প্রতিক ভূমিকম্প তার ঘুম ভাঙিয়েছে বলে ধারণা গবেষকদের।

গত সপ্তাহে রাশিয়ার এই অঞ্চলে ঘটে ভয়াবহ ভূমিকম্প। রিখটার স্কেলে যার মাত্রা ছিল ৮ দশমিক ৮। ১৯৫২ সালের পর এটিই সবচেয়ে শক্তিশালী কম্পন বলে জানায় দেশটির ভূবিজ্ঞান গবেষণা সংস্থা। ভূমিকম্পের প্রভাবে প্রশান্ত মহাসাগরের উপকূলীয় অঞ্চলে, এমনকি ফ্রেঞ্চ পলিনেশিয়া থেকে চিলি পর্যন্ত সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়।

ভূমিকম্পের পরপরই কামচাটকার সবচেয়ে সক্রিয় আগ্নেয়গিরি ক্লুচেভস্কয়েতেও অগ্ন্যুৎপাত দেখা দেয়। গবেষক ওলগা গিরিনা বলছেন, ‘এই দুটি ঘটনার মধ্যে যোগসূত্র রয়েছে। ক্রাশেনিনিকভে অগ্ন্যুৎপাতও ভূমিকম্প-সৃষ্ট চাপের ফল।’

রাশিয়ার জরুরি সেবা বিষয়ক মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ক্রাশেনিনিকভ আগ্নেয়গিরির উচ্চতা প্রায় ১ হাজার ৮৫৬ মিটার। অগ্ন্যুৎপাতের পর সেখানে ছাইয়ের স্তম্ভ উঠে যায় ৬ কিলোমিটার আকাশ পর্যন্ত। তবে আশেপাশে জনবসতি না থাকায় এই মুহূর্তে বড় কোনো বিপদের শঙ্কা নেই।

ছাইয়ের কুণ্ডলী পূর্ব দিকে, অর্থাৎ প্রশান্ত মহাসাগরের দিকে অগ্রসর হচ্ছে বলে জানিয়েছে রুশ কর্তৃপক্ষ।

উপদ্বীপজুড়ে বিপুল সংখ্যক সক্রিয় ও সুপ্ত আগ্নেয়গিরি থাকায় রাশিয়ার এই অঞ্চলে রয়েছে বিশেষ আগ্নেয়গিরি পর্যবেক্ষণ ইউনিট কামস্কটকা ভলকানিক ইরাপশন টিম। তারা অগ্ন্যুৎপাতের আশঙ্কায় আগেভাগেই সতর্কতা জারি ও বিপদ ব্যবস্থাপনার জন্য কাজ করে যাচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় আগাম সতর্কতা ও বৈজ্ঞানিক গবেষণাই এখন এই অঞ্চলের নিরাপত্তার বড় ভরসা।

 

সূত্র: রয়টার্স।

রাকিব

×