ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৪ জুলাই ২০২৫, ২০ আষাঢ় ১৪৩২

যেভাবে আকাশ থেকে মাটিতে পড়লো রংপুর  রাইডার্স

প্রকাশিত: ১৯:২০, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

যেভাবে আকাশ থেকে মাটিতে পড়লো রংপুর  রাইডার্স

ছবিঃ সংগৃহীত।

রংপুর রাইডার্স-এর এবারের বিপিএল অভিযান ছিল স্বপ্নের মতো, তবে শেষ পর্যন্ত তাদের পারফরম্যান্সে বিপর্যয়ের চিত্র ফুটে উঠেছে। টানা ৮ ম্যাচ জিতে তারা সবার আগে প্লে অফ নিশ্চিত করেছিল, যা ছিল দলটির জন্য বড় একটি অর্জন। তাদের শুরু ছিল প্রত্যাশার চেয়েও অনেক ভালো। সবাই ভাবছিল, এবার হয়তো রংপুর আবারও চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথে। তবে, এই স্বপ্নের মতো শুরুর পর শেষের বাস্তবতা ছিল একেবারে বিপরীত।

গ্রুপ পর্বের শেষের দিকে তাদের পারফরম্যান্স নাটকীয়ভাবে পরিবর্তিত হয়। চারটি টানা হার দলের অগ্রযাত্রাকে থামিয়ে দেয় এবং তাদের এলিমিনেটরে জায়গা পেতে হয়। এলিমিনেটর মানে 'ডু অর ডাই' (জীবন-মৃত্যু) ম্যাচ, যেখানে পরাজয় মানে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায়। এই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের জন্য রংপুর তাদের স্কোয়াড শক্তিশালী করার সিদ্ধান্ত নেয় এবং তিন বিদেশি তারকাকে অন্তর্ভুক্ত করে — আন্দ্রে রাসেল, টিম ডেভিড এবং আরও একজন। এই পরিবর্তনের মাধ্যমে তারা নিজেদের ফেভারিট হিসেবে দাবি করে মাঠে নামে, কিন্তু মাঠে তাদের পারফরম্যান্স সে অনুযায়ী ছিল না।

রংপুর রাইডার্সের ব্যাটাররা খুলনা টাইগার্সের স্পিন আক্রমণের বিপক্ষে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছেন। নাসুম আহমেদ ও মেহেদি হাসান মিরাজের ঘূর্ণিতে রাইডার্সদের জন্য অবস্থা ছিল একেবারে শোচনীয়। দলের প্রথম পাঁচ ব্যাটারের মধ্যে কেউই দুই অঙ্কের রান ছুঁতে পারেননি, এবং পুরো ইনিংসে মাত্র দুই ব্যাটারই এই কৃতিত্ব অর্জন করতে সক্ষম হন। ব্যাটিং বিপর্যয়ে রংপুর রাইডার্স এলিমিনেটর ম্যাচে বিদায় নিতে বাধ্য হলো, আর খুলনা টাইগার্স ৯ উইকেটের দাপটের সঙ্গে জয় পেয়ে কোয়ালিফায়ারে জায়গা করে নিল।

৮৬ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে খুলনা প্রথমে মেহেদি হাসান মিরাজের উইকেট হারালেও, সেই ব্যর্থতার পরও খুব বেশি বেগ পেতে হয়নি। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে অ্যালেক্স রসের সঙ্গে নাঈম শেখ দাপটের সঙ্গেই বাকিটা পাড়ি দেন। নাঈম শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেন, আর রসও তাকে সমর্থন দেন। অবিচ্ছিন্ন ৮৭ রানের জুটিতে নাঈম অপরাজিত ৩৩ বলে ৪৮ রান করেন, আর রস ২৭ বলে ২৯ রান করেন।

এর আগে, টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন রংপুর অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান। ব্যাটিং করতে নেমে রংপুর বেশ বিপদে পড়ে। ইনিংসের দ্বিতীয় বলে সিঙ্গেল নিতে গিয়ে ভুল বুঝাবুঝির কারণে রান আউট হয়ে যান সৌম্য সরকার। পরের ওভারে নাসুম আহমেদের বলে আউট হয়ে ফেরেন জেমস ভিন্স, যিনি ৭ বলে মাত্র ১ রান করেন।

এই দুই ওপেনারের বিদায়ের পর রংপুরের বাকি ব্যাটাররা পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ হন। সাইফ হাসান এবং শেখ মেহেদীও বড় স্কোর করার সুযোগ পাননি। মেহেদীকে নাসুম আহমেদ দারুণ এক ডেলিভারিতে স্ট্যাম্প করেন, এবং পরের ওভারে মেহেদী হাসান মিরাজের বলে মোহাম্মদ নেওয়াজের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাইফও ফিরেন। সাজঘরে ফেরার আগে সাইফের ব্যাট থেকে এসেছে মাত্র ১০ বলে ৪ রান।

রংপুর রাইডার্সের ব্যাটিং ব্যর্থতার কারণে তাদের জন্য এলিমিনেটর ম্যাচে থামতে হলো, এবং খুলনা টাইগার্স ৯ উইকেটের দাপটে জয়ী হয়ে কোয়ালিফায়ারে চলে যায়।

 

মুহাম্মদ ওমর ফারুক

×