সেঞ্চুরির আশা জাগিয়েও ৭৬ রানে আউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরছেন অধিনায়ক শান্ত
দারুণ শুরুই পেয়েছে বাংলাদেশ। টানা ব্যর্থ তানজিদ হাসান তামিমও ভালোই ব্যাট করছিলেন। কিন্তু তিনি ২৮ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়ে বিদায় নেওয়ার পর সৌম্য সরকার ও নাজমুল হোসেন শান্ত দারুণ এক জুটি গড়েন। বাংলাদেশও ভালো একটি সংগ্রহ গড়ার পথে এগিয়ে যায়। তবে ৭১ রানের সেই জুটি ভেঙে যাওয়ার পর মূলত দুর্দান্ত ব্যাট করতে থাকা শান্তর সঙ্গে বাকিরা কিছুক্ষণ সঙ্গ দিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত শান্ত নিজেও ৭৬ রানে বিদায় নিলে সমস্যায় পড়ে বাংলাদেশ। তবে শেষদিকে জাকের আলী অনিক ও নাসুম আহমেদর দারুণ ব্যাটিংয়ে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ২৫২ রান করতে পেরেছে তারা। শনিবার শারজা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজ বাঁচানোর ম্যাচে আফগানিস্তানের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। আগে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের শুরুটা ভালো হলেও পরবর্তীতে আফগান স্পিনাররা রানের গতি কমিয়েছেন।
এদিন টস জিতেই আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। ইনজুরির কারণে ছিটকে যাওয়া মুশফিকুর রহিমের পরিবর্তে অভিষেক ক্যাপ পান ১ টেস্ট ও ১৯ টি২০ খেলা উইকেটরক্ষক ব্যাটার জাকের আলী অনিক। তিনি বাংলাদেশের ওয়ানডে ইতিহাসে ১৪৯তম খেলোয়াড়। অভিজ্ঞ মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ তাকে অভিষেক ক্যাপ পরিয়ে দেন। এ ছাড়া লেগস্পিনার রিশাদ হোসেনের পরিবর্তে একাদশে নেওয়া হয় বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদকে। দীর্ঘ ১৮ বছর পর কোনো ম্যাচে সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল ও মুশফিককে ছাড়াই ওয়ানডে খেলতে নামে বাংলাদেশ দল।
তিনজনের একজনও খেলেননি এমন ঘটনা ২০০৬ সালের ৪ আগস্ট জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের চতুর্থ ওয়ানডেতে। স্কোয়াডে থাকলেও খেলার সুযোগ হয়নি অভিষেকের অপেক্ষায় থাকা এ ৩ জনের। অর্থাৎ অভিষেক হওয়ার পর বাংলাদেশের টানা ৩১০টি ওয়ানডেতেই তাদের কেউ না কেউ ছিলেন। আর ১৮০টি ওয়ানডেতে তিনজনই খেলেছেন। ২ পরিবর্তন নিয়ে এদিন বাংলাদেশ নামলেও প্রথম ম্যাচ জেতা একাদশ অপরিবর্তিত রেখেই নেমেছে আফগানিস্তান। ওপেনার তানজিদ বেশ ভালোভাবেই শুরু করেন, সৌম্য ছিলেন কিছুটা ধীরস্থির। তবে তানজিদ ১৭ বলে ৩ চার, ১ ছয়ে ২২ রান করে মোহাম্মদ গজনফরের অফস্পিনে সাজঘরে ফেরেন।
দলীয় ২৮ রানে উদ্বোধনী জুটি ভাঙলেও সৌম্য ও অধিনায়ক শান্ত পাওয়ার প্লে’র ১০ ওভারে ৫৯ রান তুলে ফেলেন। ফলে ভালো সংগ্রহের ভিত পেয়ে যায় বাংলাদেশ। দুজন দ্বিতীয় উইকেটে ৭১ রানের জুটি গড়েন। ১৯তম ওভারে সৌম্য ৪৯ বলে ২ চার, ২ ছক্কায় ৩৫ রানে বিদায় নেন রশিদ খানের লেগস্পিনে এলবিডব্লিউ হয়ে। তবে তৃতীয় উইকেটে মেহেদী হাসান মিরাজ যোগ দিয়ে আরও ৫৩ রানের জুটি গড়েন শান্তর সঙ্গে। রানের গতি কম থাকলেও এতে ক্যারিয়ারের নবম অর্ধশতক পেয়ে যান শান্ত ৭৫ বলে। মিরাজ ৩৩ বলে ২২ রানে রশিদের স্পিনে বোল্ড হলে লড়াইটা শান্তই চালিয়েছেন। কিন্তু তিনিও ১১৯ বলে ৬ চার, ১ ছক্কায় ৭৬ রানে বিদায় নেন ৪১তম ওভারে। নানজেয়ালিয়া খরোতের বাঁহাতি স্পিনে একই ওভারে বিদায় নেন মাহমুদুল্লাহও (৩)।
৬ উইকেটে ১৮৪ রান তখন বাংলাদেশের। কিন্তু জাকের-নাসুম ৪৬ রানের জুটি গড়েন মাত্র ৪১ বল থেকে। গজনফরের অফস্পিনে নাসুম ২৪ বলে ১ চার, ২ ছক্কায় ২৫ রানে ফিরে যান। কিন্তু জাকের ২৭ বলে ১ চার, ৩ ছক্কায় অপরাজিত থাকেন ৩৭ রানে। তাই ৭ উইকেটে ২৫২ রানের লড়াকু পুঁজি পায় বাংলাদেশ। খরোত ৩টি এবং রশিদ, গজনফর ২টি করে উইকেট নেন।