আগামী বছরের ১৪ জুন মিউনিখের ফুটবল অ্যারেনায় উদ্বোধনী
আগামী বছরের ১৪ জুন মিউনিখের ফুটবল অ্যারেনায় উদ্বোধনী ম্যাচ দিয়ে পর্দা উঠবে ২০২৪ ইউরোর। সেই হিসেবে সময় বাকি সাড়ে ছয় মাসেরও কম। তবে ইতোমধ্যেই টুর্নামেন্ট সাফল্যের সঙ্গে আয়োজন করতে প্রস্তুত বলে ঘোষণা দিয়েছে স্বাগতিক জার্মানি। মাঠসহ অন্যান্য অবকাঠামোগত প্রস্তুতিতে দারুণভাবেই এগিয়ে গেছে তারা। মূলত ২০০৬ বিশ্বকাপে আয়োজনের জন্য অবকাঠামোগত যে ভিত তৈরি করেছিল জার্মানি সেটির ওপরই আস্থা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ফুটবলের পাওয়ার হাউজ খ্যাত দেশটি। প্রায় দেড় যুগ আগে অত্যন্ত সফলভাবে বিশ্বকাপ আয়োজনের সেই দৃষ্টান্তই এবার ২০২৪ ইউরোর ব্যাপারে ব্যাপকভাবে আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে জার্মানিকে।
চলতি বছরেই জার্মানি জানিয়ে দেয় যে, তাদের স্টেডিয়ামগুলো খেলার জন্য প্রস্তুত। পরিবহনগুলোও দর্শকদের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নিয়ে যেতে অপেক্ষা করছে। দেশটির চ্যান্সেলর ওলাফ স্কোলজ তো সাফ জানিয়ে দেন, ‘ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ ইউরোপের ঘরোয়া খেলা। এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট যা অনেক লোক ইতোমধ্যে দেখার অপেক্ষা করছে? আমরা ইতোমধ্যে বিদ্যমান কাঠামোর ওপর নির্ভর করতে পারি। স্টেডিয়ামগুলো ইতোমধ্যেই রয়েছে এবং গণপরিবহনগুলোর এত বিশাল দর্শকের সমাগম মোকাবিলা করার ক্ষমতা রয়েছে।’
অনেক আগে থেকেই জার্মানিতে বিশ্বমানের অসংখ্য ভেন্যু রয়েছে। যে কারণে ২০২৪ ইউরোর জন্য নতুন স্টেডিয়াম নির্মাণ করতে হয়নি তাদের। এ প্রসঙ্গে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ স্কোলজ বলেন, ‘এটা বিশেষ ব্যাপার যে কোনো কিছুই নতুনভাবে তৈরি করতে হবে না। স্টেডিয়ামগুলো আগে থেকেই আছে।’ বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল। এরপরই চারবার করে জিতে এই টুর্নামেন্টের সফল দলের ট্যাগ মাখানো জার্মানি-ইতালির। যদিওবা ২০১৪ সালের পর বিশ্বমঞ্চে নিজেদের সেভাবে আর মেলে ধরতে পারেনি জার্মানরা। তবে চার শিরোপা জয় ছাড়াও ২০০৬ সালে বিশ্বকাপ আয়োজন করেও বাজিমাত করেছিল তারা। যা গত ১৮ বছর জার্মানিজুড়ে গর্বের প্রতীক হয়ে আছে।
এবারের ইউরো যে ১০ ভেন্যুতে হবে, এর মধ্যে ৯টিতেই ২০০৬ বিশ্বকাপ হয়েছিল। সেই ভেন্যুগুলো হলো বার্লিন, মিউনিখ, ডর্টমুন্ড, স্টুটগার্ট, হামবুর্গ, ফ্রাঙ্কফুর্ট, কোলন, গেলসেনকিরশেন ও লাইপজিগ। এর বাইরে নতুন করে যুক্ত হয়েছে ডুসেলডর্ফের ৫৪ হাজার ৬০০ আসনবিশিষ্ট মাঠ মেরকার স্পিয়েল অ্যারেনা। দুই জার্মানি একীভূত হওয়ার পর এবারই প্রথম ইউরো আয়োজন করছে জার্মানি। এর আগে ১৯৮৮ সালে পশ্চিম জার্মানি ইউরো আয়োজন করেছিল। তবে ২০০৬ সালের বিশ্বকাপের মতো এবারও জার্মানির পূর্ব অংশ থেকে শুধু দুটি শহরকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে; রাজধানী বার্লিন ও লাইপজিগ। ২০২৪ ইউরো সামনে রেখে বেশির ভাগ স্টেডিয়ামই বেশ ভালো অবস্থায় রয়েছে।
শুধু স্টুটগার্টের নেকারস্টেডিয়নে বড় ধরনের সংস্কার কাজ চলছে। জার্মানির দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের এই স্টেডিয়াম নির্মাণ করা হয়েছিল মূলত ১৯৭৪ বিশ্বকাপের জন্য। এখন ইউরো সামনে রেখে ২০২৪ সালের জানুয়ারির মধ্যেই এর সংস্কারকাজ শেষ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গত জুনে ২০২৪ টুর্নামেন্টের পরিচালক ফিলিপ লাহম বলেছিলেন, ‘বিশ্ব আমাদের কাছে, জার্মানির কাছে, ইউরোপের প্রাণকেন্দ্রে আসবে। আমি মনে করি এটি দেখানোর একটি দুর্দান্ত সুযোগ।
আমরা এই আশ্চর্যজনক ইউরোপীয় ক্রীড়া ইভেন্টের অংশ হতে পেরে খুব খুশি।’তবে ইউরোর আয়োজক জার্মানির মাঠের সময়টা অবশ্য মোটেও ভালো যাচ্ছে না। চলতি বছরে ১১ ম্যাচ খেলে মাত্র ৩টিতে জয়ের স্বাদ পেয়েছে চারবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। বাজে পারফর্ম্যান্সের কারণে কোচ হ্যানসি ফ্লিককেও বরখাস্ত করে ইউলিয়ান নাগলসম্যানের কাঁধে দায়িত্ব দেওয়া জার্মান ফুটবলের। কিন্তু তারপরও স্বরূপে ফিরতে পারেনি তারা। অনেকেই বলেছেন, স্বাগতিক না হলে জার্মানির হয়তো এবার ইউরোতেও খেলা হতো না।