ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

পুরুষ ফুটবল ধ্বংস করার পাশাপাশি নারী ফুটবলের ক্ষতির দায় এড়াতে পারবেন না তিনি, অভিমত সাবেক জাতীয় ফুটবলার শেখ মোহাম্মদ আসলামের

ফুটবলের বারোটা বাজিয়েছেন সালাউদ্দিন

রুমেল খান

প্রকাশিত: ২৩:৪৫, ৩ জুন ২০২৩

ফুটবলের বারোটা বাজিয়েছেন সালাউদ্দিন

শেখ মোহাম্মদ আসলাম

‘সাম্প্রতিক সময়ে মহিলা ফুটবলে যা ঘটেছে, তা খুবই দুঃখজনক। পুরুষ ফুটবল তো বহু আগেই শেষ হয়ে গেছে। দেশের ফুটবল বলতে এখন একমাত্র নারী ফুটবলকেই বোঝায়। মেয়েরাই বাঁচিয়ে রেখেছে এই খেলাটাকে। 
যেখান পুরুষদের ফুটবল ব্যর্থতার একেবারে চরম শিখরে, সেখানে সাম্প্রতিক সময়ে যে ফুটবলে উত্থান, সেটা একমাত্র নারী ফুটবলের মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে। মেয়েরা যে ঝলকে দেখেছে, তাতে তারা প্রমাণ করেছে যে তারা ভালো ফুটবল খেলতে পারে। অথচ সে জায়গায় যদি মেয়েরা অলিম্পিকের বাছাইপর্ব খেলতে মিয়ানমারে যেতে না পারে, ফ্রাঞ্চাইজি লিগ খেলতে না পারে, আট মাস পরে কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে না পারে, কোচ গোলাম রব্বানী ছোটনের আকস্মিক পদত্যাগ... এসব ঘটনা অনেকটাই থমকে দিয়েছে নারী ফুটবলের অগ্রযাত্রা।

এর একমাত্র পরিত্রাণের উপায় হলো সালাউদ্দিন সাহেব তার যেটুকু ইজ্জত অবশিষ্ট আছে, তা নিয়ে সম্মানে সরে যান। তাহলে অন্য যে আসবেন, তিনি সালাউদ্দিনের চেয়ে বাফুফে ভালোভাবে চালাতে পারবেন, এটুকু জোর দিয়ে বলতে পারি। বাফুফে সভাপতির পরিবর্তন হচ্ছে সময়ের দাবি। এজন্যই তার এখন নীরবে সরে যাওয়া উচিত।’ কথাগুলো শেখ মো. আসলামের। সাবেক তারকা জাতীয় এই ফুটবলার জনকণ্ঠের সঙ্গে একান্ত আলাপনে জানিয়েছেন সাম্প্রতিক সময়ে নারী ফুটবলে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনায় তার প্রতিক্রিয়া।
বাফুফে সভাপতি কাজী মো. সালাউদ্দিন ছোটন নন, বরং পল স্মলিকেই নারী ফুটবলের সাফল্যের কারিগর মনে করেন। আরও মনে করেন, পল চলে গেলে নারী ফুটবল নাকি ধ্বংস হয়ে যাবে। এ প্রসঙ্গে আসলামের ভাষ্য, ‘এটা একটা ঢাহা মিথ্যা কথা। সালাউদ্দিন কি ১১ নারী ফুটবলারের নাম বলতে পারবেন? ছোটন যেখানে বছরের পর বছর এই মেয়েদের নিজের মেয়েদের মতো গড়ে তুলেছেন, লালন-পালন করেছেন। তাদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিয়ে নারী ফুটবলটাকে এ পর্যন্ত টেনে নিয়ে এনেছেন। যেখানে এখন ছোটন পদত্যাগ করেছেন। তার এই চলে যাওয়াতে বরং মহিলা ফুটবল ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং চরম অধপতনে পতিত হবে! কেননা ছোটন খুব ভালো করেই মেয়েদের আদ্যোপান্ত জানতেন।’ 
আসলাম আরও যোগ করেন, ‘একটা ধারলো ছুরিকে ধার দিয়ে সেটাকে যদি মাসের পর মাস ফেলে রাখেন, তাহলে অটোমেটিক সেটাতে জং ধরে যাবে। তেমনি আট-নয় মাস ধরে প্র্যাকটিস করেই যাচ্ছে, অথচ কোন ম্যাচ খেলতে পারছে না, তাহলে মেয়েদের সামনে কোন আশা-ভবিষ্যৎই নেই! সেখানে একরাশ হতাশা থেকেই কয়েকটা মেয়ে ক্যাম্প ছেড়ে চলে গেছে এবং অবসরও নিয়ে ফেলেছে। হয়তো বিয়ে করে সংসারী হয়ে যাবে। ফুটবল তাদের জীবন থেকে হারিয়ে যাবে। এর ফলে নারী ফুটবলের যে ক্ষতি হচ্ছে, তার দায় কোনোমতেই এড়াতে পারেন না সালাউদ্দিন।’ 
আরেক প্রশ্নের উত্তরে বাংলাদেশের ফুটবল লিগের ইতিহাসের সর্বোচ্চ গোলদাতা (১৭৭ গোল) আসলাম বলেন, ‘নারী ফুটবলের সাফল্যের মূল কারিগর কোচ ছোটনের বেতন নাকি খুবই অল্প ছিল শুনেছি। এক লাখের কিছু বেশি। অথচ টেকনিক্যাল ডিরেক্টর পল স্মলির বেতন নাকি ২০ লাখ টাকা! এখানে বেতনের এত বৈষম্য হবে কেন? শুনেছি পলের মাধ্যমে নাকি সালাউদ্দিন অনেক বেনিফিটেড হন। তাকে দিয়ে ফিফা-এফসি থেকে অনেক প্রজেক্ট পাস করিয়ে অনেক অর্থ আনান। এতে পলও নাকি কমিশন-টমিশন পান। কিন্তু ছোটনকে বছরের পর বছর ঠকিয়ে পলকে এভাবে অনেক বেশি বেতনে রাখাটা কোনমতেই সমর্থন করতে পারছি না।’

×