সেরেনা উইলিয়ামস
ক্যারিয়ারের গোধূলী লগ্নে সেরেনা উইলিয়ামস। দুদিন আগেই টেনিসকে বিদায় জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন আমেরিকান টেনিসের এই জীবন্ত কিংবদন্তি। ফলে চলতি মৌসুমের শেষেই বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের ইতি টানবেন তিনি। তার আগেই চোখের জলে ভাসলেন সেরেনা উইলিয়ামস। কানাডা ওপেন থেকে বিদায় নেয়ার পর আবেগ চেপে রাখতে পারেননি ২৩টি গ্র্যান্ডস্লামের মালিক।
বৃহস্পতিবার কানাডা ওপেনের দ্বিতীয় পর্বে বেলিন্ডা বেনচিচের মুখোমুখি হয়েছিলেন সেরেনা উইলিয়ামস। ভক্ত-অনুরাগীদের প্রত্যাশা ছিল জয় নিয়েই হয়তো কোর্ট ছাড়বেন তাদের প্রিয় তারকা। কিন্তু সেই স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার করে দিয়েছেন সুইজারল্যান্ডের বেলিন্ডা বেনচিচ। টোকিও অলিম্পিকের স্বর্ণপদকজয়ী তারকা এদিন ৬-২ এবং ৬-৪ গেমে পরাজিত করেন বিশ্ব টেনিস র্যাঙ্কিংয়ের সাবেক নাম্বার ওয়ান সেরেনা উইলিয়ামসকে।
যার ফলে কানাডা ওপেনের দ্বিতীয় রাউন্ড থেকেই বিদায় নিলেন উইলিয়ামস পরিবারের ছোট মেয়ে। প্রকৃতপক্ষে এদিন ম্যাচের শুরু থেকেই সেরেনাকে কোণঠাসা করে ফেলেছিলেন ২৫ বছরের প্রতিপক্ষ বেনচিচ। কোর্টেই হতাশা প্রকাশ করতে দেখা যায় ৪০ বছরের টেনিস তারকাকে। একটা সময় কোর্টের মধ্যেই বসে পড়েন সেরেনা। ম্যাচ শেষে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তিনি।
নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে সেরেনা উইলিয়ামস বলেন, ‘কানাডা ওপেনে খেলতে ভালবাসি। তাই আবেগতাড়িত হয়ে পড়েছি। ভেবেছিলাম ভাল ফলাফল হবে। কিন্তু বেনচিচ দুর্দান্ত খেলেছে। বিদায় বেলায় কী বলতে হয় আমি জানি না। ঠিকমতো বিদায় জানাতেও পারি না। কিন্তু বাই বাই টরন্টো।’ বেনচিচের কাছে হারের পর কানাডিয়ান ওপেনের দর্শকদের শেষবারের মতো বিদায় জানান সেরেনা। এরপর সিনসিনাত্তি মাস্টার্সে খেলবেন তিনি।
বছরের শেষ গ্র্যান্ডস্লাম ইউএস ওপেন খেলেই টেনিস ক্যারিয়ারের সমাপ্তি ঘোষণা করবেন মেয়েদের টেনিসের এই জীবন্ত কিংবদন্তি। আগামী ২৯ আগস্ট থেকে শুরু হবে মৌসুমের শেষ মেজর টুর্নামেন্ট। যেখানে ছয়বার শিরোপা উঁচিয়ে ধরেন সেরেনা। শুধু তাই নয়? জীবনের প্রথম এই গ্র্যান্ডস্লাম টুর্নামেন্টেই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছিলেন আগামী মাসেই ৪১ বছরে পা দিতে যাওয়া এই তারকা। ১৯৯৯ সালে তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১৭।
সেরেনার মতো কিংবদন্তিকে হারিয়ে অভিভূত বেলিন্ডা বেনচিচ, ‘সত্যিই আমি অভিভূত। তার সঙ্গে আবারও কোর্টে থাকাটা নিশ্চিতভাবেই আমার জন্য স্পেশাল।’ শেষ ষোলোর ম্যাচে আজ আবারও কোর্টে নামবেন সুইস তারকা। যেখানে তার প্রতিপক্ষ স্পেনের গারবিন মুগুরুজা। যিনি কাইয়া কানেপিকে হারিয়ে শেষ ষোলোর টিকেট নিশ্চিত করেন। এস্তোনিয়ার কানেপি তার প্রথম ম্যাচে নাওমি ওসাকার মুখোমুখি হয়েছিলেন।
পিঠের ইনজুরির কারণে টরন্টো মাস্টার্সের প্রথম ম্যাচ থেকেই নাম প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয়েছিলেন চারবারের গ্র্যান্ডস্লামজয়ী ওসাকা। গত এপ্রিলে মিয়ামির ফাইনালে বিশ্বের এক নম্বর তারকা ইগা সুইয়াটেকের বিপক্ষে হারের পর এখন পর্যন্ত ৬টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি। যার মধ্যে ওসাকা জিতেছেন মাত্র দুটিতে। এর আগে ইউএস ওপেনে পাচ বছর আগে একবার দেখা হয়েছিল কানেপি ও ওসাকার। ওই ম্যাচটিতে জয়ী হয়েছিলেন ৩৭ বছর বয়সী কানেপি।
বেনচিচ-মুগুরুজা ছাড়াও টরন্টো মাস্টার্সের শেষ ষোলোতে জায়গা করে নিয়েছেন কানাডিয়ান তরুণ বিয়াঙ্কা আন্দ্রেস্কু, বর্তমান বিশ্ব টেনিস র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ তারকা ইগা সুইয়াটেক, গ্রীসের মারিয়া সাক্কারি, চেক প্রজাতন্ত্রের ক্যারোলিনা পিসকোভা এবং ব্রাজিলের বিয়াত্রিজ হাদ্দাদ মাইয়ার মতো তারকারা। দ্বিতীয় পর্বে ইউএস ওপেনের সাবেক চ্যাম্পিয়ন আন্দ্রেস্কু ৬-৩, ৪-৬ এবং ৬-৩ ব্যবধানে হারান ফরাসী তারকা এ্যালিজ কোর্নেটকে। আর নাম্বার ওয়ান তারকা ইগা সুইয়াটেক ৬-১এবং ৬-২ ব্যবধানে রীতিমতো উড়িয়েই দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার এ্যাজলা টোমলজানোভিচকে।