ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০৭ জুলাই ২০২৫, ২৩ আষাঢ় ১৪৩২

ক্রিকেটে পরিবর্তনের আভাস, কী বলছেন তারা...

প্রকাশিত: ০০:৪৩, ১৩ মে ২০২০

ক্রিকেটে পরিবর্তনের আভাস, কী বলছেন তারা...

করোনায় থমকে আছে বিশ্ব ক্রিকেট। এরই মধ্যে কয়েক মাস কেটে গেছে। মাঠে খেলা ফেরানোর উপায় খুঁজছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসিসহ অনেক দেশ। শারীরিক দূরত্ব, সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মেনে দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে হলেও খেলা শুরুর বিষয়ে অনেক বোর্ড একমত। তবে সাবেক-বর্তমান অনেক তারকার মতে, দর্শকশূন্য গ্যালারিতে খেলায় আসলে প্রতিযোগিতা থাকবে না, প্রাণ থাকবে না। সুইং বাড়াতে আগের মতো বলের ওপর লালা বা থুথু দেয়া যাবে না, উদ্যাপনে থাকবে না হাইফাইভ, এমনি আরও অনেক প্রস্তাব বাস্তবায়ন হলে করোনপরবর্তী সময়ে ক্রিকেটের চেহারাটাই বদলে যেতে পারে। এরই মধ্যে নতুন উদ্ভাবিত বস্তু দিয়ে বল চকচকে করার প্রস্তাব রেখেছে কুকাবুরা। গ্রেট শেন ওয়ার্ন আবার একাপাশ ভারী রেখে বল তৈরির পরামর্শ দিয়েছেন। আছে টেম্পারিংকে বৈধতা দেয়ার আলোচনাও। ক্রিকেটে আলোচিত এসব ইস্যু নিয়েই কথা বলেছেন মিসবাহ উল হক, বিরাট কোহলি, জো রুট, বেন স্টোকসের মতো তারকা। সুপার বিরাট কোহলি বলেন,‘খেলা হয়তো শুরু হবে। কিন্তু ভরা মাঠে, দর্শকদের সামনে খেলা হলে ব্যাপারটা অন্য রকম হয়। একটা মোহময় পরিবেশ তৈরি হয়। মনের মধ্যে যে জাদুর একটা অনুভূতি হয়, সেটা আর হবে না। যেভাবে খেলা উচিত, আমরা সে-ভাবেই খেলব। কিন্তু সেই জাদুর মুহূর্তগুলো তৈরি হওয়া কঠিন।’ তবে পরিস্থিতি বিবেচনায় দর্শকশুন্য গ্যালারিতে খেলা হতে পারে বলেও মনে করেন ভারত অধিনায়ক,‘দর্শকশূন্য অবস্থায় খেলা হতেই পারে। তবে এ রকম হলে জানি না আমরা কী ভাবে ব্যাপারটা গ্রহণ করব। আমরা সবাই তো দর্শকদের সামনে খেলতে অভ্যস্ত। আমি জানি, দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে ম্যাচ হলেও ক্রিকেটারদের খেলার তীব্রতা কমবে না। সবাই নিজের সেরাটা দিতেই উদগ্রীব হয়ে থাকবে। কিন্তু ম্যাচ চলাকালীন গোটা স্টেডিয়ামে জুড়ে যে টেনশনের একটা আবহ তৈরি হয়, তার কী হবে? এই আবেগ, এই অনুভূতিগুলো তো আর কৃত্রিম ভাবে তৈরি করা যায় না।’ সাবেক পাকিস্তান অধিনায়ক ও দলটির বর্তমান প্রধাণ কোচ মিসবাহ বলেন,‘করোনাভাইরাসের কারণে বর্তমান সময়টা মোটেও সুখকর নয় এবং অবশ্যই সকলের স্বাস্থ্য ও সুস্থতা আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার হওয়া উচিত। কিন্তু সব সুরক্ষা মেনে ফাঁকা স্টেডিয়ামে খেলা হয়, তবে এতে আমার কোন সমস্যা নেই।’ করোনাভাইরাসের প্রার্দুভাবের দুই মাস ধরে ক্রিকেটাররা গৃহবন্দী, ‘প্রত্যেকেই আবদ্ধ হয়ে আছে এবং আমি মনে করি, এ অবস্থায় যদি কোন ক্রিকেট ম্যাচ কিছু মানুষের জন্য আনা সম্ভব হয়, তবে ঘরে বসে থাকা মানুষদের তা খুবই ভাল হবে।’ যোগ করেন তিনি। মিসবাহ আরও বলেন, ‘যখন কারও কিছু করার থাকে না এবং কোভিড-১৯ এর খবর শুনতে শুনতে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। তাই এই পরিস্থিতিতে আবারও যদি খেলাধুলা শুরু করা যায় তবে মানুষ ঘরে বসে দেখার সুুযোগ পাবে। খেলোয়াড়, ম্যাচ অফিসিয়াল ও স্টেক হোল্ডারদের জন্য যদি সঠিক সুরক্ষা ও সতর্কতা অবলম্বন করা হয়, তবে ক্রিকেট বোর্ডগুলো সামনে এগিয়ে যেতে পারবে।’ বিশ্বকাপজয়ী ইংলিশ অলরাউন্ডার স্টোকসও খেলা শুরুর পক্ষে,‘চিন্তা করুন আমরা দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে মাঠে নেমেছি, আমাদের জার্সির বুকে রয়েছে তিন সিংহ বিশিষ্ট দেশের লোগো। এই অবস্থায় আমরা তো জয়ের কথাই চিন্তা করব। আমি মনে করি না দর্শক থাকুক আর ফাঁকা মাঠ থাকুক এটাতে ম্যাচে কেন প্রভাব পড়বে। এটা সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি প্রেক্ষাপট। সমর্থকদের টিভির দিকে আকর্ষণ ফিরিয়ে ক্রিকেট ফেরাতে আমাদের সবকিছুই করতে হবে। যদি ফাঁকা মাঠে খেলতে হয় তবে সেটাই করতে হবে।’ তবে ইংল্যান্ড টেস্ট অধিনায়ক জো রুট চিন্তিত বল টেম্পারিংকে বৈধতা দেয়ার বিষয় নিয়ে। বিশেষ করে সাদা পোশাকে ঐতিহ্যের টেস্ট ক্রিকেটের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি আরও যোগ করেন,‘এই খেলাটার একটা নিজস্বতা আছে। খেলার মধ্যে উদ্যম থাকতে হয়। যদি সেরাটা দিয়ে টেস্ট ক্রিকেট খেলা না যায়, মনের মধ্যে খুতখুতে ভাব থাকে, তবে আমাদের খেলাই উচিত নয়। এতে তো খেলাটার আসল চেহারা ফুটে উঠবে না।’ এত হ্যাপার মধ্যে খেলার কোন মানেই খুঁজে পাচ্ছেন না রুট। তবে পাকিস্তান গ্রেট মিসবাহ উল হকের মতে, দর্শকবিহীন মাঠে ক্রিকেট আয়োজনে আপত্তি নেই।
×