
লাওসে এশিয়ান কাপের বাছাইপর্ব সামনে রেখে অনুশীলনে ব্যস্ত সাগরিকা-মুনকিরা
দারুণ ছন্দে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২০ নারী ফুটবল দল। ১১ থেকে ২১ জুলাই ঘরের মাঠে টানা ৬ জয়ে পূর্ণ ১৮ পয়েন্ট নিয়ে সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতেছে মেয়েরা। এবার তাঁরাই লাওস যাচ্ছে এশিয়ান কাপ বাছাই খেলতে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ২ আগস্ট দেশ ছাড়ার কথা রয়েছে তাঁদের। এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার বিকেলে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) কনফারেন্স রুমে সংবাদ সম্মেলনে নিজেদের লক্ষ্যের কথা জানিয়েছেন অধিনায়ক আফঈদা খন্দকার ও কোচ পিটার বাটলার।
বাছাইপর্বে ‘এইচ’ গ্রুপে বাংলাদেশের তিন প্রতিদ্বন্দ্বী দল দক্ষিণ কোরিয়া, লাওস ও পূর্ব তিমুর। ৬ আগস্ট বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ স্বাগতিক লাওস। ৮ আগস্ট পূর্ব তিমুর আর ১০ আগস্ট দক্ষিণ কোরিয়ার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশের মেয়েরা। ৩৩ দলের বাছাইপর্বে আট গ্রুপের সেরা আট দল যাবে এশিয়া কাপে। গ্রুপের দ্বিতীয় সেরা তিন দলও পাবে থাইল্যান্ডের টিকিট। এশিয়ান বাছাইয়ে বাংলাদেশের অতীতটা অবশ্য বেশ হতাশারই। এখন পর্যন্ত ১২ ম্যাচ খেলে জয় মাত্র দুটিতে।
বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের ব্যস্ত সূচি যেন থামছেই না। মিয়ানমারে এএফসি নারী এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের কঠিন লড়াই শেষে দেশে ফিরেই দল খেলেছে ঘরের মাঠে সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপ। এবার নতুন লক্ষ্য সামনে; লাওসে অনুষ্ঠিতব্য এএফসি অনূর্ধ্ব-২০ নারী এশিয়ান কাপ বাছাই পর্ব। বাছাই পর্বে মোট আটটি গ্রুপে খেলা হবে। প্রতিটি গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন এবং সেরা তিন রানার্সআপ দল থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিতব্য মূল পর্বে খেলার সুযোগ পাবে। বাংলাদেশের ব্রিটিশ কোচ পিটার বাটলার বলেন,‘দক্ষিণ কোরিয়া এই অঞ্চলের অন্যতম শক্তিশালী দল। তাই আমরা মূলত রানার্সআপ হিসেবে জায়গা করে নেওয়ার লক্ষ্যেই নামব। তবে আমাদের প্রথম ম্যাচটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
লাওসের বিপক্ষে জয় আমাদের অনেকটা এগিয়ে দেবে।’ এই দলের একটি বড় ইতিবাচক দিক হলো, ২৩ সদস্যের স্কোয়াডটি প্রায় একই রয়েছে সাফ অনূর্ধ্ব-২০ টুর্নামেন্টে খেলা দলের মতো। এর মধ্যে রয়েছেন নয়জন ফুটবলার যারা জাতীয় দলের সদস্য এবং সম্প্রতি এএফসি নারী এশিয়ান কাপের মূল পর্ব নিশ্চিত করেছে। যেখানে মূল মঞ্চে প্রতিপক্ষ চীন, উত্তর কোরিয়া ও উজবেকিস্তানের মতো শক্তিশালী দল। এখানেও বাংলাদেশের জন্য গ্রুপটি সহজ নয়।
দক্ষিণ কোরিয়া এশিয়ার অন্যতম সেরা নারী দল, যারা ফিফা র্যাংকিংয়েও অনেক এগিয়ে। লাওসও শক্তিশালী দল এবং নিজেদের মাঠে খেলায় আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। তবে পূর্ব তিমুর তুলনামূলকভাবে সহজ। এই অনূর্ধ্ব-২০ বাছাই পর্বের ম্যাচগুলো জাতীয় দলের জন্য প্রস্তুতির কার্যকর মঞ্চ হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
আফঈদাও সেটি মনে করছেন,‘এ ম্যাচগুলো আমাদের সিনিয়র দলের জন্য খুব উপকারী হবে। কঠিন প্রতিপক্ষের বিপক্ষে খেলতে পারা মানেই উন্নতির বড় সুযোগ।’ অধিনায়ক আরও যোগ করেন ‘আমরা ভালো খেলে মূল পর্বে জায়গা করে নিতে চাই। টানা খেলার মধ্যে থাকলেও ক্লান্তি নেই। সাফে আমরা সবাই গেম টাইম পেয়েছি, আর এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের পর কিছুটা বিশ্রামও মিলেছে। ’ ছয় বছর আগে বাংলাদেশ নারী দল এএফসি অনূর্ধ্ব-১৯ বাছাই খেলেছিল।
এরপর থেকে আর এই টুর্নামেন্টে অংশ নেয়নি। বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করলে কোচ বাটলার রসিকতা করে বলেন,‘এটা ২০২৫ সাল, ২০১৯ নয়। আমরা ভবিষ্যতের দিকে তাকাতে চাই, অতীতে পড়ে থাকতে চাই না।’ বাংলাদেশ নারী ফুটবলের অগ্রযাত্রায় এই অনূর্ধ্ব-২০ দল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। কঠিন প্রতিপক্ষদের বিপক্ষে লড়াই করে জয়ের লক্ষ্যেই লাওসের উদ্দেশে রওনা হচ্ছে বাংলার কিশোরীরা।
প্যানেল হু