ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

রোনাল্ডোর পথ ধরে কি এলএম টেনও যাচ্ছেন সৌদি ক্লাবে!

মেসির যে গুণে স্কালোনিও মুগ্ধ

জিএম মোস্তফা

প্রকাশিত: ০০:৪৫, ২৬ জানুয়ারি ২০২৩

মেসির যে গুণে স্কালোনিও মুগ্ধ

মেসির সঙ্গে বিশ্বকাপ জয়ী কোচ স্কালোনি

দীর্ঘ ৩৬ বছরের আক্ষেপ ঘুচিয়ে স্বপ্নের বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ পেল আর্জেন্টিনা। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সকে হারিয়ে গত মাসেই কাতার বিশ্বকাপের শিরোপা উঁচিয়ে ধরে আলবিসেলেস্তেরা। যার পেছনে মূল নায়কের ভূমিকায় ছিলেন আর্জেন্টিনার প্রাণভোমরা লিওনেল মেসি। আর্জেন্টিনার তৃতীয় বিশ্বকাপ জয়ের পেছনে মূল নায়ক যদি মেসি হন তাহলে নেপথ্য নায়কের ভূমিকায় ছিলেন দেশটির কোচ লিওনেল স্কালোনি।

২০২২ বিশ^কাপজয়ী সেই কোচ লিওনেল স্কালোনিই এবার দলের সুপারস্টার লিওনেল মেসির এক অসধারণ গুণের কথা উল্লেখ করেছেন। পিএসজি তারকার যে গুণে তিনি নিজেও মুগ্ধ-বিমোহিত। সেই সঙ্গে সতীর্থদের ওপর মেসির প্রভাব কতটুকু? তাও জানিয়েছেন লিওনেল স্কালোনি। 

এ প্রসঙ্গে স্কালোনি বলেন, সে একজন সত্যিকারের ফুটবল নেতা। সবাই তা দেখেছে। কিন্তু মাঠের বাইরে মেসি যখন সকলকে উদ্বুদ্ধ করতে কথা বলেন তা অসাধারণ। সকলের মধ্যে আত্মবিশ^াস জাগিয়ে তোলার এই গুণ অনেকের মাঝেই থাকে না। শুধু একজন ফুটবলার হিসেবে নয়, যেকোনো ব্যক্তির পক্ষেই এটা কঠিন। আমরা সবাই কথা বলতে পারি, কিন্তু সে আমাদের মধ্যে কি বার্তা ছড়িয়ে দিচ্ছে সেটাই গুরুত্বপূর্ণ।

যখন মেসি কথা বলে কীভাবে সতীর্থরা তার দিকে তাকিয়ে থাকে। সকলের মধ্যেই ভিন্ন এক অনুপ্রেরণার জন্ম হয়। সত্যি বলতে কি, এটা বর্ণনা করা কঠিন। কাতার বিশ্বকাপের আগে ২০২১ সালে কোপা আমেরিকার শিরোপা জিতেছিল আর্জেন্টিনা। ফাইনালে সেবার তারা চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিলকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছিল। সুদীর্ঘ ক্যারিয়ারে সেটাই ছিল লিওনেল মেসির বড় কোনো আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টের শিরোপা। যে শিরোপার নেপথ্য নায়কও ছিলেন এই ক্লালোনি। আর সেটাই এবারের বিশ^কাপে বাড়তি আত্মবিশ্বাস যুগিয়েছে বলে মনে করেন মেসি-ডি মারিয়াদের কোচ।

স্কালোনি বলেন, ব্রাজিলের কোপা আমেরিকার আসরটি মেসি দারুণভাবে উপভোগ করেছিল। কার্যত সে এই টুর্নামেন্টে অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় সতীর্থদের সঙ্গে খেলতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেছিল।
বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন পূরণ পর্বের শেষে লিওনেল মেসি এখন মাঠ মাতাচ্ছেন প্যারিস সেইন্ট জার্মেইনের জার্সিতে। কিন্তু প্যারিস জায়ান্টদের সঙ্গে এখনো চুক্তি নবায়ন করেননি এলএম টেন। আর চুক্তি নবায়ন আদৌ হবে কিনা-তা নিয়েও দেখা দিয়েছে ঘোর অনিশ্চয়তা।

বাতাসে ভেসে বেড়ানো গুঞ্জনে ইতোমধ্যেই শোনা যাচ্ছে, ফরাসিদের ঘর ছাড়তে চান আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড। হ্যাঁ, তার পরবর্তী ঠিকানা নাকি হতে যাচ্ছে সৌদি আরবেরই একটি ক্লাব! অথচ, একটা সময় তো ফুটবলবোদ্ধারা চোখ বন্ধ করে বলে দিতেন বার্সেলোনাই লিওনেল মেসির ক্লাব ফুটবলের শেষ অধ্যায়। কিন্তু সময় যে কাকে কোথায় নিয়ে দাঁড় করায় তা ইতোমধ্যেই প্রমাণ করে দিয়েছেন মেসিরই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো।
স্প্যানিশ জায়ান্ট বার্সেলোনার সঙ্গে বহু বছরের সম্পর্ক ছিন্ন করে ২০২১ সালে পিএসজিতে নতুন করে ঠিকানা গড়েন লিওনেল মেসি। আর্থিক সংকটের কারণে তার বিশাল বেতনের বোঝা বহন করতে না পারায় কাতালান জায়ান্টরা মেসিকে ধরে রাখতে পারেনি। সেই মেসিকে ফ্রি এজেন্ট হিসেবে পেয়ে লুফে নেয় পিএসজি। দুই বছরের চুক্তি স্বাক্ষর হয় উভয়পক্ষের মধ্যে। তবে সেই চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে চলতি বছরের জুনে।

কাতার বিশ্বকাপ শেষে সবাই ধরেই নিয়েছিল, পিএসজিতেই থাকবেন মেসি। ক্লাবটির পক্ষ থেকে নতুন চুক্তি স্বাক্ষরের ইঙ্গিত মিলছিল। কিন্তু এখন আর কোনো কিছুই নিশ্চিত নয়। বার্সেলোনা বিশেষজ্ঞ জেরার্দ রোমেরো জানিয়েছেন, পিএসজিতে থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন সাতবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী তারকা। রোমেরোর দাবি, ফ্রান্স তো বটেই, ইউরোপের ফুটবলকেই বিদায় বলতে যাচ্ছেন লিও।

কিছুদিন আগেও মুন্ডো দেপোর্তিভো দাবি করেছিল সৌদির ক্লাব আল হিলাল মেসিকে কেনার জন্য বিশাল অঙ্কের (বছরে ৩৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) প্রস্তাব দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। শেষ পর্যন্ত কী দাঁড়ায় ভক্ত-অনুরাগীদের অপেক্ষা এখন সেটাই দেখার। তবে সৌদিতে গেলে অবশ্য আবারও দেখা মিলবে মেসি-রোনাল্ডোর দ্বৈরথ! ভক্ত-অনুরাগীদের জন্য যা নিঃসন্দেহে হবে বাড়তি পাওনা।

×