
শট খেলছেন নাজমুল হোসেন শান্ত
ইনজুরির কারণে এবারের এশিয়া কাপের গ্রুপ পর্ব খেলে ছিটকে যান নাজমুল হোসেন শান্ত। হ্যামস্ট্রিং ইনজুরি কাটিয়ে অবশেষে ৩ সপ্তাহ বাইরে থেকে মঙ্গলবার নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডেতে ফিরেছেন তিনি। প্রথমবার অধিনায়ক হিসেবে এদিন যাত্রাও শুরু করেছেন। সেই ম্যাচেই করেছেন রেকর্ড। ওয়ানডেতে বাংলাদেশের ১৬তম অধিনায়ক হিসেবে যাত্রা শুরু করেছেন তিনি এদিন এবং তিনে নেমে করেছেন ৮৪ বলে ৭৬ রান। অধিনায়ক হিসেবে বাংলাদেশের পক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস খেলার অনন্য কীর্তি গড়েছেন তিনি। তবে বাকিদের চরম ব্যর্থতায় ডুবেছে বাংলাদেশ। কারণ বাকি ১০ জনে করেছেন মাত্র ৮৫ রান।
তাই মঙ্গলবার সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৩৪.৩ ওভারে ১৭১ রানেই গুটিয়ে গেছে বাংলাদেশের ইনিংস। আগের ম্যাচে ধসের মূলে ছিলেন লেগস্পিনার ইশ সোধি। এবার গত দুই ম্যাচ না খেলা ডানহাতি পেসার এডাম মিলনেই বড় ক্ষতিটা করেছেন। সাড়ে ৪ মাস পর ওয়ানডে খেলতে নেমে এই পেসার ক্যারিয়ারসেরা বোলিং করে নিয়েছেন ৪ উইকেট।
অধিনায়ক হিসেবে প্রথম ম্যাচেই টস জিতেছেন শান্ত এবং ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ওয়ানডেতে বাংলাদেশের ১৪৭তম ক্রিকেটার হিসেবে অভিষেক হয়েছে বাঁহাতি ওপেনার জাকির হাসানের। সবমিলিয়ে বেশ কিছু পরিবর্তন নিয়েই এদিন নেমেছে বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ড দলেও একাধিক পরিবর্তন ঘটে এবং ডিন ফক্সক্রফট পান অভিষেক ক্যাপ। শুরুটা এদিনও ভালো হয়নি বাংলাদেশের। কিউই পেসারদের দুর্ধর্ষ বোলিংয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়ে বাংলাদেশ দল। দ্বিতীয় ওভারের তৃতীয় বলেই জাকিরকে (০) বোল্ড করেছেন তিনি। পরের ওভারে তানজিদ হাসান তামিমকে (৫) সাজঘরে ফেরান ট্রেন্ট বোল্ট। তবে শান্ত ওয়ানডাউনে নেমে বেশ ভালো ব্যাটিং করেছেন।
দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন তিনি। কিন্তু তাওহিদ হৃদয়ও ভালো খেলতে খেলতে ১৭ বলে ৩ চারে ১৮ রান করে সাজঘরে ফেরেন মিলনের দ্বিতীয় শিকার হয়ে। ২৭ রানের জুটি ভেঙে যায়। এরপর শান্ত ও মুশফিকুর রহিম চতুর্থ উইকেটে ৫৩ রানের দুর্দান্ত এক জুটি গড়েন। তবে মুশফিকও ফিরে গেছেন ২৫ বলে ২ ছক্কায় ১৮ রান করে। অভিজ্ঞ মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ এসে বিপদ কাটানোর মতো দৃঢ়তা নিয়েই ব্যাট চালিয়েছেন। এর মধ্যে ক্যারিয়ারের পঞ্চম ফিফটি পেয়ে যান শান্ত। এ নিয়ে টানা তৃতীয় ম্যাচে তিনি অর্ধশতাধিক রানের ইনিংস খেললেন। তবে মাহমুদুল্লাহর সঙ্গেও তার জুটি ৪৯ রানেই ভেঙেছে। মাহমুদুল্লাহ ২৭ বলে ২ চারে সাজঘরে ফেরেন মিলনের তৃতীয় শিকার হয়ে।
এরপর লড়াই যা করার শান্তই করেছেন। অন্য ব্যাটাররা রান তুলতে হিমশিম খেলেও তিনি ছিলেন সাবলীল এবং দ্রুতই রান করেছেন। শেষ পর্যন্ত তিনিও সাজঘরে ফিরেছেন ৮৪ বলে ১০ বাউন্ডারিতে ৭৬ রান করে। এরপর বেশিক্ষণ টেকেনি বাংলাদেশ দল। শেষ ৫টি উইকেটের পতন ঘটেছে মাত্র ১৫ রানে। ফলে ১৫.৩ ওভার বাকি থাকতেই গুটিয়ে গেছে ১৭১ রানে। ক্যারিয়ারসেরা বোলিংয়ে মিলনে ৩৪ রানে ৪ উইকেট নেন। তবে শান্ত অধিনায়ক হিসেবে বাংলাদেশের পক্ষে প্রথম ম্যাচে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলেন। এর আগে ১৯৯৮ সালে অধিনায়ক হিসেবে ১ম ওয়ানডেতে আমিনুল ইসলাম বুলবুল ১৯৯৮ সালে মোহালিতে ভারতের বিপক্ষে ৭০, ২০০৪ সালে হারারেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হাবিবুল বাশার সুমন ৬১ ও ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সাকিব আল হাসান ৫৪ রান করেন ডমিনিকায়।