ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০৫ মে ২০২৫, ২২ বৈশাখ ১৪৩২

মঙ্গলে রহস্যময় পাহাড় আবিষ্কার: যা জানালো নাসা

প্রকাশিত: ১৭:৫৭, ৫ মে ২০২৫

মঙ্গলে রহস্যময় পাহাড় আবিষ্কার: যা জানালো নাসা

ছবি: নাসা

মঙ্গলের গেইল ক্রেটারে চলমান নাসার কিউরিওসিটি রোভার সম্প্রতি এমন এক ভূ-গঠনের দিকে অগ্রসর হয়েছে, যেটি বিজ্ঞানীদের দৃষ্টি কেড়েছেএটি হলোবক্সওয়ার্কগঠন। রোভারটির লেফট ন্যাভিগেশন ক্যামেরা থেকে তোলা একটি ছবি দেখিয়েছেপশ্চিম দিকের দিকে বিস্তৃত এক এলাকা যেখানে কিছুটা মসৃণ ভূপৃষ্ঠের উপর জালির মতো দাগ বা রিজ দেখা যাচ্ছে, যা বক্সওয়ার্ক গঠনের নির্দেশনা দেয়। এই দৃশ্যটি ধারণ করা হয়েছে ৩০ এপ্রিল ২০২৫, যা মঙ্গলের ৪৫২৬তম দিন বাসোলহিসেবে বিবেচিত।

এই 'বক্সওয়ার্ক' এলাকাটি পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত এবং দূর থেকে মসৃণ মনে হলেও ক্রিসক্রস করে থাকা উঁচু-নিচু রেখা বা রিজ রয়েছে যা এটিকে জালের মতো আকৃতি দিয়েছে। মিশনের বিজ্ঞানীরা বলছেন, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূতাত্ত্বিক কাঠামো, যা প্রাচীন জলপ্রবাহ বা বায়ু ক্ষয়ের মাধ্যমে গঠিত হয়ে থাকতে পারে।

রোভার মিশন টিম জানিয়েছে, বর্তমানে তারা আবার তাদের সাধারণটাচ অ্যান্ড গোপরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করছে। এই পরিকল্পনায় সকালের দিকে স্পর্শ করে নমুনা সংগ্রহ করা হয়, দুপুরে দূরবর্তী বিশ্লেষণ (রিমোট সায়েন্স), আর বিকেলে আবার হাতের (রোবটিক আর্ম) মাধ্যমে বিশ্লেষণ চালানো হয়।

এই সোলের (মঙ্গলের দিন) প্রধান লক্ষ্য ছিলট্যামার্যাক ভ্যালিনামক একটি পাথুরে এলাকা যেখানে রোভার তার DRT (Dust Removal Tool) দিয়ে ধুলো ঝেড়ে APXS যন্ত্র দিয়ে রাসায়নিক বিশ্লেষণ করে। এরপর Mastcam ব্যবহার করে ৭৬টি ছবির একটি স্টেরিও মোজাইক তৈরি করা হয় বক্সওয়ার্ক গঠনের একটি বিস্তৃত দৃশ্য ধারণের জন্য। ChemCam যন্ত্র তখন ঠান্ডা হচ্ছিল যাতে এটি পরে লেজার ইন্ডিউসড ব্রেকডাউন স্পেকট্রোস্কোপি (LIBS) ব্যবহার করতে পারে।

পরে ChemCam “আগুয়াঙ্গানামের আরেকটি কঠিন পাথরে লেজার প্রয়োগ করে এবং Mastcam মোজাইকে অন্তর্ভুক্ত বক্সওয়ার্ক কাঠামোর একটি দূরবর্তী ছবি তোলে RMI ক্যামেরার মাধ্যমে। দুপুর ২টার দিকে MAHLI ক্যামেরা বিভিন্ন দূরত্ব থেকে ছবি তোলেট্যামার্যাক ভ্যালির। এরপর শুরু হয় রোভারটির প্রায় ৩০ মিটার বা ৯৮ ফুটের যাত্রা বক্সওয়ার্ক কাঠামোর আরও কাছে যাওয়ার জন্য।

পরের দিন, রোভার কিছু হালকা কাজ করেছে—Navcam দিয়ে ধূলিঝড় পর্যবেক্ষণ, দিগন্তে দেখা বিশ্লেষণ এবং নতুন অবস্থানে পৌঁছানোর পর নিজস্ব সিদ্ধান্ত অনুযায়ী LIBS পরীক্ষা শুরু করার প্রস্তুতি।

এই ধরণের পরিকল্পনা এবং অগ্রগতি মঙ্গলের অতীত পরিবেশ, জলপ্রবাহ এবং ভূতাত্ত্বিক গঠনের রহস্য উন্মোচনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

 

সূত্র: নাসা

রবিউল হাসান

×