ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২

যে সূরাকে কোরআনের হৃৎপিণ্ড বলা হয়

প্রকাশিত: ০৬:১৬, ১২ জুলাই ২০২৫

যে সূরাকে কোরআনের হৃৎপিণ্ড বলা হয়

ছবি: সংগৃহীত

পবিত্র কোরআন মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে মানবজাতির জন্য প্রেরিত সর্বশ্রেষ্ঠ পথনির্দেশিকা। এর ১১৪টি সূরার মধ্যে অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ একটি সূরা হলো সূরা ইয়াসিন, যাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোরআনের “হৃদয়” বলে আখ্যায়িত করেছেন।

রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: প্রত্যেক বস্তুর একটি হৃদয় আছে। কোরআনের হৃদয় হলো সূরা ইয়াসিন। যে ব্যক্তি একবার এটি পাঠ করে, সে ১০ বার পুরো কোরআন পাঠের সওয়াব লাভ করবে।

সূরা ইয়াসিনের বৈশিষ্ট্য ও মাহাত্ম্য
এটি কোরআনের ৩৬তম সূরা।

সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে।

এতে রয়েছে ৫টি রুকু ও ৮৩টি আয়াত।

এটি চার ভাগে বিভক্ত: প্রারম্ভিকা, অতীত ইতিহাস, বর্তমান নিদর্শন এবং ভবিষ্যতের পরিণতি।

এই সূরায় কিয়ামত, জান্নাত ও জাহান্নামের বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে। মূলত মানুষের পুনরুত্থান, পরকাল এবং আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাতের প্রস্তুতির শিক্ষা দেয় এই সূরা।

মৃত ও জীবিত—উভয়ের জন্য উপকারী
বিপদ-আপদে, মৃত্যুযন্ত্রণায়, কিংবা মৃতের কবরের পাশে সূরা ইয়াসিন তেলাওয়াতের কথা হাদীসে এসেছে।

এটি মৃতের রূহের শান্তি এবং জীবিতের আত্মশুদ্ধির উপায়।

নিয়মিত পাঠ করলে, হাদীস অনুযায়ী, জান্নাতের ৮টি দরজা পাঠকের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

আল্লাহ তা'আলা পাঠকারীর অতীত জীবনের সকল গুনাহ ক্ষমা করে দিবেন বলেও বর্ণিত হয়েছে।

কিয়ামতের দিন সুপারিশকারী
হযরত ইবনে ইয়াসার (রাঃ) বর্ণনা করেছেন, সূরা ইয়াসিন কিয়ামতের দিনে বিপুল সংখ্যক মানুষের জন্য সুপারিশ করবে এবং আল্লাহ তা কবুল করবেন।

শিক্ষা ও আত্মজিজ্ঞাসা
সূরার মূল শিক্ষা হলো পরকালের ভয় ও জবাবদিহিতার অনুভূতি জাগিয়ে মানুষকে সৎ পথে পরিচালিত করা। এটি অবৈধ, অন্যায় ও হারাম কাজ থেকে দূরে রাখে এবং পরিশুদ্ধ জীবনের দিকে আহ্বান জানায়।

সূরা ইয়াসিন কেবল একটি সূরাই নয়, এটি একজন মুমিনের অন্তরের শক্তি, আত্মার আলো, ও ভবিষ্যতের অনন্ত জীবনের প্রস্তুতির এক চিরন্তন অনুশীলন।


শেখ ফরিদ

×