
ছবি: সংগৃহীত।
ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত কোরবানি। এটি শুধু একটি ধর্মীয় আচার নয়, বরং আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সা.)-এর প্রতি শর্তহীন আনুগত্য, আত্মত্যাগ ও বিসর্জনের বাস্তব শিক্ষা। তবে কোরবানির পশুর সব অংশ খাওয়া বৈধ নয়। কিছু অংশ হারাম এবং কিছু অংশ মাকরুহ হিসেবে নির্ধারিত হয়েছে ইসলামি শরিয়তে।
সম্প্রতি একটি ভিডিওতে কোরবানির পশুর হারাম ও মাকরুহ অংশ নিয়ে বিশদ ব্যাখ্যা দিয়েছেন দেশের প্রখ্যাত ইসলামি চিন্তাবিদ ও আলোচক শায়খ আহমাদুল্লাহ।
শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, “হালাল পশুর প্রবাহমান রক্ত খাওয়া সুস্পষ্টভাবে হারাম। কোরআনে কারিমে আল্লাহ তা'আলা হারাম জিনিসগুলোর তালিকায় ‘দামে মাসফুহ’ অর্থাৎ প্রবাহমান রক্তের কথা উল্লেখ করেছেন।"
তিনি ব্যাখ্যা করেন, “জবাই করার সময় পশুর শিরা-উপশিরা দিয়ে যে রক্ত বের হয়, সেটি পান বা খাওয়া সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। তবে গোশতের গায়ে লেগে থাকা রক্ত বা বারবার ধোয়ার পরেও পানিতে যে লালচে ভাব থাকে, সেটি প্রবাহমান নয়—তাই তা খাওয়া হারাম নয়।”
শায়খ আহমাদুল্লাহ আরও বলেন, “হালাল পশুর কিছু অঙ্গ আছে যেগুলোকে অধিকাংশ ফুকাহা (ইসলামি আইনজ্ঞ) মাকরুহ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে:
-
মূত্রথলি
-
যৌনাঙ্গ (গুপ্তাঙ্গ)
-
পিত্তথলি
-
গোশত ও চামড়ার মধ্যবর্তী গ্রন্থি
-
অণ্ডকোষ
তিনি জানান, “পূর্বে আমরা অণ্ডকোষ খাওয়াকে ব্যক্তি রুচির ওপর নির্ভর করে জায়েজ বললেও, বর্তমানে অধিকাংশ ফুকাহার অভিমতের ভিত্তিতে এটিকে ‘মাকরুহ’ বলা অধিক গ্রহণযোগ্য। যদিও কিছু আরব আলেম এটিকে জায়েজ বলেছেন, তবে মাকরুহ বলার দিকটাই অধিকতর শক্তিশালী।”
কেন মাকরুহ?
তিনি আরও ব্যাখ্যা করেন, “হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে, রাসূল (সা.) সাতটি অঙ্গ খেতে অপছন্দ করতেন। যদিও কিছু মুহাদ্দিস এর সনদ নিয়ে আপত্তি তুলেছেন, তবে কোরআনে আল্লাহ নিষিদ্ধ করেছেন 'খাবায়িস' অর্থাৎ নোংরা ও ঘৃণিত জিনিস খেতে। যেসব অঙ্গ মানুষের সাধারণ রুচিতে বেমানান, সেগুলোকে ফুকাহারা সেই আলোকে মাকরুহ বলে উল্লেখ করেছেন।”
শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, “কোরবানির বরকত ও পবিত্রতা রক্ষার জন্য আমাদের উচিত এই মাকরুহ অঙ্গগুলো থেকে বিরত থাকা এবং শরিয়তের আলোকে সচেতনভাবে ইবাদত পালন করা।”
নুসরাত