
ছবি: সংগৃহীত।
“আন্দোলনের পুরো ক্রেডিট এককভাবে নেওয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, যেটা এক ধরনের ‘হাসিনাগিরি’”—এমন মন্তব্য করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
জোনায়েদ সাকি বলেন, “বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন একটি গণ-অভ্যুত্থানে পরিণত হয়। সেখানে হাজার হাজার শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, রাজনৈতিক দল, সামাজিক শক্তি সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছে। অথচ এখন দেখা যাচ্ছে—কয়েকজন মুখমাত্রই সব কৃতিত্বের দাবিদার হয়ে উঠছে। তারা জনগণের ত্যাগ, রক্ত এবং আত্মাহুতি ‘মনোপলাইজ’ করতে চাইছে।”
তিনি অভিযোগ করেন, “এই ‘ক্রেডিট ক্লেইম’ করার প্রবণতা আসলে এক ধরনের ‘হাসিনাগিরি’। অর্থাৎ ক্ষমতাকেন্দ্রিক, আত্মপ্রচারমূলক এবং কর্তৃত্ববাদী মনোভাব—যা এই অভ্যুত্থানের মূল চেতনার বিপরীত।”
জোনায়েদ সাকি বলেন, “অনেকেই এখন বলছে, এই অভ্যুত্থান একদল নেতা তৈরি করেছে, তারাই সরকারের বৈধতা দিচ্ছে, উপদেষ্টা নিয়োগ করছে, অথচ এটি ছিল জনগণের আন্দোলন। এর নেতৃত্ব, বৈধতা বা সাফল্য কাউকে মনোনয়ন দিয়ে হয়নি, এটি এসেছে জনগণের সম্মিলিত প্রতিরোধ থেকে।”
তিনি আরও বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক ‘পারসেপশন গ্যাপ’ আছে। অনেকে ধারণার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, বাস্তবতাকে উপেক্ষা করে। এর ফলে একটি 'ইগো লড়াই' তৈরি হচ্ছে, যেটা বিভাজন তৈরি করছে।”
সাকি বলেন, “আমরা শিক্ষার্থীদের সামনে এনেছি গুরুত্বসহকারে, কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে, কেবল শিক্ষার্থী নেতারাই আন্দোলনের মালিক। এটা জনগণের অভ্যুত্থান, কাউকে হিরো বানিয়ে সেই ইতিহাস বিকৃত করা যাবে না।”
জোনায়েদ সাকি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “এই আন্দোলনের চেতনা ছিল অংশগ্রহণমূলক, গণতান্ত্রিক ও নেতৃত্ব বিকেন্দ্রিক। একে ব্যক্তিকেন্দ্রিক করে তুললে সেটা হবে আরেকটি ‘হাসিনাগিরি’। আমরা সেই রাজনীতির বিরুদ্ধে লড়তেই আন্দোলনে নেমেছিলাম।”
নুসরাত