ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৬ জুলাই ২০২৫, ২২ আষাঢ় ১৪৩২

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়

‘নির্বাচন আটকানোর শক্তি কারো নেই’

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২০:৩২, ৫ জুলাই ২০২৫

‘নির্বাচন আটকানোর শক্তি কারো নেই’

ছবি: সংগৃহীত।

“সংসদ নির্বাচন আটকানোর শক্তি কারো নেই”—এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

শনিবার বিকেলে ঢাকার কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়ার শুভাঢ্যা গার্লস স্কুল প্রাঙ্গণে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ বিএনপির উদ্যোগে 'যথাসময়ে সংস্কার ও দ্রুত নির্বাচনের' দাবিতে আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এ বক্তব্য দেন।

গয়েশ্বর বলেন, “নির্বাচন করতেই হবে... নির্বাচন আটকানোর শক্তি কারো হাতে নাই—যদি আমরা নামি। যারা বলে ১৬ বছর আমরা কিছু করতে পারিনি, তাদের বলব—এখন ১৬ দিনেই দেখিয়ে দিতে পারব। তবে আমরা সেটা দেখাতে চাই না।”

তিনি বলেন, “একজন ভদ্রলোক প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তিনি যথাসময়ে নির্বাচন দেবেন—এই প্রত্যাশায় আমরা ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করছি।”

জামায়াতে ইসলামীর সমালোচনা করে গয়েশ্বর বলেন, “শিক্ষা ও স্বাস্থ্য—এই দুটি খাত জামায়াত দখল করে রেখেছে। সেখানে অন্য কারো কোনো জায়গা নেই। আবার অনেকে বলে ভারতের দালাল। আসল দালাল তো তারাই, যারা ভারতের দালালি করে। যারা সংস্কার সংস্কার বলে আওয়ামী লীগের খারাপ লোকদের নিজের দলে ভেড়াচ্ছে, তারা জানে না জামায়াত কীভাবে ভিতরে ভিতরে তাদের নিয়ন্ত্রণ করছে।”

তিনি আরও বলেন, “এই পরাগ মণ্ডলকে অপহরণ করেছে যে, সে এখন জামায়াতের নেতা। জামায়াত কী ভয়ংকর—এটা সবাই চিনে রাখুন।”

গয়েশ্বর কেরানীগঞ্জকে মাদক ও অস্ত্রমুক্ত করতে একটি 'বৃহৎ উন্নয়ন পরিকল্পনা' নেওয়ার কথাও জানান।

সমাবেশে বক্তারা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৩ আসনে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে বিজয়ী করার আহ্বান জানান।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “আমরা শপথ নিয়েছি শহীদদের রক্তের শপথে, গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার শপথে—এই বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক, স্বাধীন ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত করব। ইনশাআল্লাহ নেতৃত্ব দেবেন তারেক রহমান।”

তিনি বলেন, “ঐক্যই আমাদের শক্তি। এই ঐক্যকে সমুন্নত রাখতে হবে। এই ঐক্যের মাধ্যমে আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়ব—যেখানে আমাদের নীতি হবে ‘বাংলাদেশ সবার আগে’।”

তিনি আরও বলেন, “আমাদের মধ্যে যেন কোনো বিভাজন না আসে। আমরা দ্বিমত করতে পারি, কিন্তু শেষ পর্যন্ত সবাইকে একটি লক্ষ্যে এগোতে হবে—আর তা হচ্ছে স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র রক্ষার পথ।”

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল বলেন, “গত ১৬ বছর বিএনপি সমাবেশ করলেই পাশেই আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ হতো। সেখানে শান্তি চাইত না কেউ—যেতো এলাকার বড় গুন্ডা, মাস্তানরা। খটখট শব্দ আসতো অস্ত্রের। শেখ হাসিনার শাসনে শান্তির মা’কেও দাফন করে দেওয়া হয়েছে।”

তিনি বলেন, “এখন অনেকে প্রশ্ন করে বিএনপি কী করেছে? আমরা বলছি—জনগণ এখন প্রধান উপদেষ্টার দিকে তাকিয়ে আছে। যদি নির্বাচনে কোনো টালবাহানা হয়, আমরা আবারো রাজপথে নামব।”

বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ বলেন, “লন্ডনে তারেক রহমান ও ড. ইউনূসের মধ্যে দেড় ঘণ্টার বৈঠক হয়েছে—এটা স্বাভাবিক। দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক দলের নেতার সঙ্গে বৈঠক হবে—এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এই বৈঠকে অনেকের গা জ্বলছে। কোনো লাভ নেই।”

বিএনপির তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল বলেন, “জামায়াত এখন নির্বাচন আটকানোর কথা বলছে, অথচ তারাই ’৮৬ সালে স্বৈরাচারের সঙ্গে নির্বাচনে গিয়েছিল, ’৯৬ সালে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত করেছিল। তারা বলছে বিএনপি দখলবাজি করেছে—কিন্তু ৫ আগস্টের পর ব্যাংক ডাকাতি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হামলা সব করেছে জামায়াত।”

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ বিএনপির সভাপতি নিপুণ রায় চৌধুরী বলেন, “জনগণ নির্বাচন চায়, ভোটের অধিকার চায়। এটা এখন দাবি নয়, এটা আদায়ের বিষয়। নির্বাচন নিয়ে গড়িমশি করা হলে আমরা মানব না।”

সমাবেশটি পরিচালনা করেন দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোজাদ্দেদ আলী বাবু।

নুসরাত

×