
রাজধানীর চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে শহীদ পরিবারের সম্মাননা অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া
জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদদের অধিকার, রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি এবং দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা নিশ্চিতে যে কোনো মূল্যে জাতীয় ঐক্য বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যে কোনো মূল্যে এই রক্ত স্রোত, মায়ের অশ্রু ধারা যেন বৃথা না যায় তা নিশ্চিত করতে হবে। ঐক্য বজায় রাখতে হবে।
মঙ্গলবার বিকেলে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ‘গণঅভ্যুত্থান-২০২৪ জাতীয় ঐক্য ও গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও শহীদদের পরিবারের সম্মানে বিএনপি আয়োজিত বিশেষ অনুষ্ঠানে গুলশানের বাসা থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
খালেদা জিয়া বলেন, দীর্ঘ ষোলো বছর নির্মম অত্যাচার, নির্যাতন গ্রেপ্তার, গুম-খুন করে গণতন্ত্রকে হত্যা করে একদলীয় শাসন ব্যবস্থাকে চিরস্থায়ী করতে চেয়েছিল আওয়ামী লীগ শাসকগোষ্ঠী। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে। নতুন করে বাংলাদেশকে গড়ার নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এই আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের জানাই আন্তরিক শ্রদ্ধা। তাদের এই আত্মত্যাগ জাতি চিরকাল মনে রাখবে।
তিনি বলেন, গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকা-ের যারা শিকার হয়েছেন তাদের তালিকা প্রস্তুত করতে হবে। দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি নিশ্চিত করতে হবে। ক্ষতিগ্রস্ত শহীদ পরিবারের নিরাপদ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে হবে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার নতুন যে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে তা আমাদের দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে। কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে। জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। সর্বোপরি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করতে হবে। এ সময় সবাইকে বাংলাদেশ নির্মাণে শহীদ জিয়ার স্বপ্নকে বাস্তবায়নের আহ্বান জানান বিএনপি চেয়ারপারসন।
সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন উপযোগী কি না ভেবে দেখতে হবে : তারেক রহমান ॥
লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ইতিহাসে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। যেভাবে জাতি ১৯৭১ সালের মুক্তিযোদ্ধাদের ভুলে যায়নি, ঠিক একইভাবে ’২৪-এর বীর শহীদদেরও কখনো ভুলবে না।
তারেক রহমান বলেন, ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট পলায়নের পর জাতি আরেকটি বিজয় দেখেছে। সেই বিজয়ে যারা প্রাণ দিয়েছেন, তারা শুধু পরিবারের সদস্য নয় তারা গোটা জাতির গৌরব। এ সময় তিনি জানান, শহীদদের নাম স্মরণীয় করতে ভবিষ্যতে বিভিন্ন স্থাপনা তাদের নামে নামকরণের পরিকল্পনা রয়েছে বিএনপির।
দেড় দশকের আন্দোলনে গুম-খুন, অপহরণ, নির্যাতনের শিকার হয়েছেন হাজারো মানুষ। শুধুমাত্র ২০২৪ সালের আন্দোলনেই বিএনপির ৪২২ জনসহ প্রায় দেড় হাজার মানুষ শহীদ হয়েছেন, আহত হয়েছেন ৩০ হাজারের বেশি। বিএনপি ক্ষমতায় এলে জনগণের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত, জবাবদিহিমূলক সরকার গঠন এবং রাষ্ট্রকাঠামো পুনর্গঠনে ৩১ দফার রূপরেখা বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। তিনি বলেন, আমরা জাতীয় সরকার গঠনের মাধ্যমে জনগণের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে চাই। রাজনৈতিক দুর্নীতি ও দুঃশাসন রোধে জাতীয় ঐক্য অপরিহার্য।
সংস্কারের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, একটি ইস্যুকে সঙ্গে নিয়ে আরেকটি ইস্যুকে শর্তের বেড়াজালে আবদ্ধ না করে ফেলা মুক্তিকামি গণতান্ত্রিক জনগণ মনে করে। অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কার্যক্রমে রাজনৈতিক দলগুলো চিন্তা-ভাবনা করেই প্রস্তাব দিচ্ছে ও সবাই জনগণের কথা চিন্তা করেই উত্তম প্রস্তাব দিচ্ছে। প্রত্যেক প্রস্তাব বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে উত্তম কি না সেটি বিবেচনা করা দরকার। কোনো কোনো রাজনৈতিক দল সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবি তুলেছেন। বিশ্বের কোনো কোনো দেশে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতি রয়েছে। বাংলাদেশের বিদ্যমান বাস্তবতায় ভৌগোলিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে এই পদ্ধতি কতটা উপযোগী তা সকলকে ভেবে দেখার অনুরোধ করছি।
সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনের আড়ালে পুনরায় দেশের রাজনীতিতে নিজেদের অজান্তে পতিত স্বৈরাচারের পুনর্বাসনের সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে কি না তাও ভেবে দেখতে হবে। আমি মনে করি প্রতিদিন নিত্যনতুন কিছু সামনে নিয়ে আসি ষড়যন্ত্রকারীরা আবারও সুযোগ দেবে। অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিদিন জনগণের সকল সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়। জনগণের সমস্যার কথা তাদের কাছে পৌঁছানোর কোনো মাধ্যম নেই। সুতরাং সংস্কারের ইস্যু নিয়ে সরকারকে ব্যস্ত রাখি তা হলে হয়তো জনগণের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অধিকার থেকে বঞ্চিত রাখতে পারে।
সংস্কারের কথা সবার আগে আমরাই বলেছি : মির্জা ফখরুল ॥ বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা একসঙ্গে যেসব দল দীর্ঘদিন আন্দোলন করেছি, তাদের নিয়ে সংস্কারের কথা সবার আগে আমরাই বলেছি।
তিনি বলেন, আজকে সংস্কারের যে কথাগুলো আসছে সেসব কথা ২০১৬ সালে বেগম খালেদা জিয়া ভিশন ২০২৬-এ বলেছিলেন। আমরা তখন যেসব রাজনৈতিক দল একসঙ্গে আন্দোলন করেছিলাম তারা সবাই মিলে ২০২২ সালে ২৭ দফা দিয়েছিলাম। যা পরবর্তীতে ৩১ দফায় রূপান্তর হয়। সুতরাং সংস্কারের কথা তো সবার আগে আমরাই বলেছিলাম।
বিএনপির বিরুদ্ধে অপপ্রচার চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, এখন অত্যন্ত সুচতুরভাবে একটা প্রপাগা-া চালানো হচ্ছে যে, বিএনপি নাকি সংস্কার মানছে না এ জন্য সংস্কার হচ্ছে না। মিডিয়ায় ক্যাম্পেইন হচ্ছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্যাম্পেইন হচ্ছে যে, বিএনপি সংস্কার মানছে না। আমি তাদের অত্যন্ত আন্তরিকভাবে বলতে চাই, দয়া করে আমাদের দফাগুলো একটু ভালো করে দেখেন। আমাদের ৩১ দফায় কী ছিল, আমাদের টিম ঐকমত্য কমিশনের কাছে গিয়ে কী বলছে, মতামত দিচ্ছে। এটা জানা দরকার, না হলে ভুল বোঝাবুঝি হবে।
অনেকগুলো ব্যাপারে ঐকমত্য হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রী ১০ বছর থাকার ব্যাপারে একমত হয়েছি, আমরা বলেছি দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট হবে। আমরা রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য, বিচার ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণভাবে স্বাধীন করা, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও সংস্কার আনার কথাও বলেছি। সেই বিষয়গুলোকে সেভাবে বিচার না করুন, ব্যাখ্যা করুন। শুধু যেহেতু বিএনপি বড় দল, সেহেতু শুধু বিএনপিকেই দোষারোপ করে কথা বললে সেটা সংস্কারের জন্য সহায়ক হবে না।
কাঁদলেন তারেক রহমান ॥ গুম হওয়া ছাত্রদল নেতা পারভেজ হোসেনের কিশোরী মেয়ে বাবাকে দেখেন না দীর্ঘ বছর। তার ছোট্ট ভাইটিও বাবাকে দেখতে পায়নি। এখন তার একটাই প্রশ্ন ‘আমি আর আমার ভাই বাবাকে কি কোনোদিন জড়িয়ে ধরতে পারবো না’? এ প্রশ্নে আসলে থমকে যায় পুরো পৃথিবী। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানও সেই প্রশ্নে থমকে যান, চোখ থেকে জল ফেলে কষ্ট ভাগাভাগি করেন সেই কিশোরীর সঙ্গে। বাবাকে জড়িয়ে ধরতে কিশোরীর আকুতি শুনে এ সময় কেঁদে ফেলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। জায়ান্ট স্ক্রিনে দেখা যায় চশমার ফাঁক দিয়ে বারবার চোখ মুছছেন তিনি।
সভায় সারাদেশ থেকে আসা নির্যাতিত ব্যক্তি ও তাদের স্বজনরা কষ্ট ও ভোগান্তির গল্পগুলো তুলে ধরেন। জানান স্বজন হারানোর বেদনার সঙ্গে আর্থিক টানাপোড়েন, সন্তান আর তার ভবিষ্যতের চিন্তা তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে ভুক্তভোগীদের। অনুষ্ঠানে জুলাই আন্দোলনে চট্টগ্রামের প্রথম শহীদ ওয়াসিম আকরামের বাবা শুধু নিজের সন্তানের কথাই বলেননি, তুলে ধরেন অন্য শহীদদের অভিভাবকের কষ্টও। রাষ্ট্রের কাছে শহীদ পরিবারগুলোর দাবি, বিচারের মুখোমুখি করা হোক নৃশংস হত্যাকা-ে জড়িতদের।
উপস্থাপক নিয়ে তীব্র ক্ষোভ ॥ প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে বিএনপির অনুষ্ঠানের একজন উপস্থাপককে নিয়ে তীব্র সমালোচনা হয়েছে। এহসান মাহমুদ নামে একজনকে অনুষ্ঠান মঞ্চে উপস্থাপনা করতে দেখে ক্ষোভ প্রকাশ থাকেন উপস্থিত নেতা-কর্মী সমর্থকরা। তারা এহসান মাহমুদকে স্বৈরাচারের দোসর আখ্যা দিয়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মতো অনুষ্ঠানে উপস্থাপনার আপত্তি জানান। পরে তাকে আর মঞ্চে উঠতে দেননি আয়োজকরা।
অনুষ্ঠানের শুরুর দিকে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ঘোষণা করেন তিনজন অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করবেন। যার মধ্যে একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, একজন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিকা, আরেকজন এহসান মাহমুদ। অনুষ্ঠানে কুরআন তেলাওয়াত ও দোয়া করেন ওলামা দলের সদস্য সচিব আবুল হোসেন। এরপর ডায়াসের সামনে এসে এহসান মাহমুদ এক মিনিট নিরবতার ঘোষণা দেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এহসান মাহমুদ মঞ্চে উঠে কথা বলতেই সামনে থেকে উপস্থিত নেতা-কর্মী-সমর্থকরা সমস্বরে ফ্যাসিস্ট, ফ্যাসিস্ট বলে আপত্তি জানান এবং ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এ সময় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন। পরে আপত্তির কথা শুনে মির্জা ফখরুল, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীসহ অন্য নেতারা দাঁড়িয়ে যান। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কানেও চিৎকার পৌঁছায়। এরপর এহসান মাহমুদকে উপস্থাপনা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। অবশ্য উপস্থাপনাতে জায়গা পাওয়া বাকি দুজনের বিরুদ্ধেও স্বৈরাচারের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ তুলেছেন কেউ কেউ।
অনুষ্ঠানে শহীদ পরিবারের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন পুলিশের গুলিতে নিহত আবু সাঈদের ভাই রমজান আলী, মীর মুগ্ধের বাবা মীর মোস্তাফিজুর রহমান, ওয়াসীমের বাবা শফিউল আলম, ইয়ামিনের বাবা মহিউদ্দিন, ফারহান ফাইয়াজের ছোট বোন ফারিন, আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ, পুরান ঢাকার বিশ্বজিৎ দাশের বাবা আনন্দ দাস, আবদুল্লাহ বিন জাহিদের মা ফাতেমাতুজ জোহরা, নুরুজ্জামান জনির ছোট ভাই মনিরুজ্জামান হীরা, পারভেজ হোসেনের মেয়ে আবিদা ইসলাম হৃদি, কাজী ফাহমীম জাফরের মা কাজী ফাহিম, গুম থেকে বেঁচে যাওয়া বিএনপি গণশিক্ষা বিষয়ক সহ-সম্পাদক আনিসুর রহমান তালুকার খোকন, ‘মায়ের ডাক’-এর আহ্বায়ক সানজিদা ইসলাম তুলি, জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের গুলিবিদ্ধ হয়ে পঙ্গু নাভিল, পুলিশের গুলিতে চোখ নষ্ট হয়ে যাওয়া রেদোয়ান হোসেন রিয়াদ এবং ফ্যাসিবাদ সরকারের আমলে নির্যাতনের শিকার চিকিৎসক সাখাওয়াত হোসেন সায়ান্থ।
জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের শোক ও বিজয়ের প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ৩৬ দিনের কর্মসূচির প্রথম দিনের এ কর্মসূচিতে শহীদ পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। ব্যানারে জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে পুলিশের গুলিতে শহীদ আবু সাঈদসহ কয়েকজন শহীদ এবং ‘এক দফা এক দাবি’ এবং ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক’ ব্যানার হাতে ছাত্র-জনতার গ্রাফিতি চিত্র স্থান পায়।
জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ইতোমধ্যে বিএনপি ৩৬ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। কর্মসূচির মধ্যে আছে, বিজয় মিছিল, মৌন মিছিল, ছাত্র সমাবেশ, আলোচনা সভা, সেমিনার, রক্তদান, গ্রাফিতি অঙ্কন, পথনাটক, ফুটবল টুর্নামেন্ট, শিশু অধিকারবিষয়ক অনুষ্ঠান, ডেঙ্গু ও করোনা প্রতিরোধে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রমসহ অন্তত ২২টি ভিন্নধর্মী আয়োজন।
মঙ্গলবার প্রথম প্রহরে রাত ১২টা ১ মিনিটে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মোমবাতি প্রজ্বালনে ‘আলোয় আলোয় স্মৃতি সমুজ্জ্বল’ কর্মসূচি পালনের জুলাই-আগস্টে বিএনপির কর্মসূচি শুরু হয়।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও ‘জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান, শোক ও বিজয়ের বর্ষপূর্তি পালন কমিটির আহ্বায়ক রুহুল কবির রিজভীর সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন কমিটির সদস্য সচিব ও বিএনপির গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান। আরও বক্তব্য রাখেন স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, সালাহউদ্দিন আহমদ, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান ও ১২ দলীয় জোটের প্রধান মোস্তফা জামাল হায়দার, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকী, এনপিপির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, এলডিপির মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ, জাতীয় গণফ্রন্টের সমন্বয়ক টিপু বিশ্বাস, গণফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব আরিফুল ইসলাম আদিব, এনডিএমের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ, হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগরীর সভাপতি মাওলানা জোনায়েদ আল হাবিব, জমিয়তে ওলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দি, বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, খেলাফত মজলিশের নায়েবে আমির আহমদ আলী কাসেমি, গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ রাশেদ খান, পিপলস পার্টির বিলকিস খন্দকার।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. নাহরীন খানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, কেন্দ্রীয় নেতা নিতাই রায় চৌধুরী, আমানউল্লাহ আমান, আব্দুস সালাম, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন প্রমুখ , অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, ইসমাইল জবিহউল্লাহ, এম এ মালিক, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, খায়রুল কবির খোকন, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, আব্দুস সালাম আজাদ, ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন আহমেদ অসীম, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, মীর সরাফত আলী সপু, নজরুল ইসলাম আজাদ, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, ব্যারিস্টার মীর হেলাল, মিফতাহ সিদ্দিকী, নিলোফার চৌধুরী মনি, মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক ডা. মওদুদ আলমগীর পাভেল, ড. মাহাদী আমিনসহ সারাদেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আহত ব্যক্তি, শহীদ পরিবার ও এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।