
ছবি : সংগৃহীত
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনএসপি) যুগ্ম আহ্বায়ক তাজনূভা জাবীন নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন ব্যবস্থায় সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন। তিনি বর্তমান ৫০টি সংরক্ষিত নারী আসন বৃদ্ধি করে ১০০টিতে উন্নীত করার পক্ষে তার দৃঢ় অবস্থান ব্যক্ত করেন, তবে শর্ত দেন যে এসব আসনে নারী প্রার্থীদের সরাসরি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হতে হবে। তার প্রস্তাব অনুযায়ী, এই ১০০টি আসনে শুধুমাত্র নারী প্রার্থীরা নিজেদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন এবং জনগণ ভোট দিয়ে তাদের পছন্দের প্রতিনিধি নির্বাচন করবেন।
জাবীন তার বক্তব্যে তীব্র ভাষায় বাংলাদেশের সংরক্ষিত নারী আসন ব্যবস্থার সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, "স্বাধীনতার পর থেকে এই সংরক্ষিত আসনগুলোকে সবসময় অলংকার হিসেবে দেখা হয়েছে। সংখ্যাগরিষ্ঠ দলই এসব আসনে তাদের পছন্দের নারীদের বসিয়েছে, যা মূলত পুরুষ-প্রধান সংসদ দ্বারা নারী সংসদ নির্বাচনের নামান্তর।" তিনি এটাকে একটি সুগভীর বৈষম্যমূলক ব্যবস্থা হিসেবে চিহ্নিত করেন যা বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকে চলে আসছে।
বিএনপির অবস্থানকে তিনি দ্বিমুখী বলে অভিহিত করেন। তার মতে, "বিএনপি মুখে নারী ক্ষমতায়নের কথা বললেও কাজে তারা এর বিরোধিতা করছে। ৫৩ বছর পরও, এত রক্ত ও আত্মত্যাগের পরও তারা নারীর সরাসরি ভোটে নির্বাচনের প্রস্তাবের বিরোধিতা করছে।" জাবীন বলেন, বর্তমান ব্যবস্থায় সংরক্ষিত আসনগুলোতে সাধারণত রাজনৈতিক নেতাদের আত্মীয়-স্বজন, স্ত্রী বা কন্যাকেই বসানো হয়, যা প্রকৃত নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করে না।
চট্টগ্রাম অঞ্চলের নারীদের অবস্থান তুলে ধরে তিনি বলেন, "চট্টগ্রামের মেয়েরা খুবই রক্ষণশীল পরিবার থেকে উঠে আসে। যতই তারা শিক্ষিত হোক, মেধাবী হোক, তাদের হাত-পায়ে সবসময় একটা অদৃশ্য শিকল পরানো থাকে।" তিনি সমাজের এই চাপ থেকে নারীদের মুক্তির আহ্বান জানান এবং বলেন, "আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, এখান থেকে ভবিষ্যতের অনেক নারী নেতৃত্ব উঠে আসবে, যদি আমরা তাদের পায়ের শিকল খুলে দিতে পারি।"
তাজনূভা জাবীন তার বক্তব্যে নারীদের রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের জন্য একটি সত্যিকারের পরিবর্তনের ডাক দেন। তার মতে, সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত নারী প্রতিনিধিরাই কেবল নারীদের প্রকৃত সমস্যা বুঝতে এবং সমাধান দিতে সক্ষম হবেন। তিনি নারীদের মাতৃত্বকালীন সুবিধা, সহিংসতা প্রতিরোধ এবং অন্যান্য মৌলিক অধিকার নিয়ে কাজ করার জন্য সরাসরি ভোটে নির্বাচিত নারী প্রতিনিধিদের ওপর আস্থা প্রকাশ করেন।
আঁখি