ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০৭ জুলাই ২০২৫, ২৩ আষাঢ় ১৪৩২

চরমোনাই পীরের দরবারে জামায়াত আমির

ইসলামী জোট গঠনে ঐক্যের হাওয়া

জনকণ্ঠ রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০০:০২, ২২ জানুয়ারি ২০২৫

ইসলামী জোট গঠনে ঐক্যের হাওয়া

ইসলামী জোট গঠনে ঐক্যের হাওয়া

ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকেই দেশের রাজনীতিতে ইসলামিক জোট গঠনের তৎপরতা চালায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। নির্বাচনকে সামনে রেখে ইসলামী দলগুলোর একটি ঐক্য প্রচেষ্টার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। জামায়াতের ডাকে সাড়া দিয়ে বেশ কয়েকটি ইসলামিক রাজনৈতিক দল বৈঠকও করেছে। দেশে বড় ইসলামিক রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ধারণা করা হয় জামায়াতের পরই ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের অবস্থান।

একইসঙ্গে ভোটের রাজনীতিতে রয়েছে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত মজলিস, ফরায়েজি আন্দোলন, জাকের পার্টি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশসহ ইসলামী ঐক্যজোটের (একাংশ)সহ বেশ কয়েকটি ইসলামিক দল। 
জামায়াতের সঙ্গে ঐক্যের বিষয়টি কোনো দল এখনো স্পষ্ট না করলেও ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার ইঙ্গিত দিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম। 
রাজনীতিক মতাদর্শের কারণে দু’দলের নেতারা পরস্পর বিরোধী বক্তব্য দিলেও অনেক বিষয়ে ঐক্যমত পোষণ করেছেন। 
মঙ্গলবার বরিশালের চরমোনাই পীরের দরবারে  ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীমের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করনে ডা. শফিকুর রহমান। সাক্ষাতের সময় চরমোনাই পীরের মাদ্রাসা পর্যবেক্ষণ করেন তিনি। পরে চরমোনাই মসজিদে জোহরের নামাজ আদায় শেষে জামায়াত নেতাদের নিয়ে রেজাউল করীমের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেন ডা. শফিকুর রহমান। 
এ সময় মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেন, বাংলাদেশ আজ ৫৪ বছরে পদার্পণ করেছে। ৫৩ বছরের স্বাধীনতার মধ্যে যারা দেশ পরিচালনা করেছেন, তাদের মাধ্যমে জনগণের যে আশা-আকাক্সক্ষা ছিল তা পূর্ণ হয়নি। আমাদের কাজ আল্লাহর নির্দেশে দেশের কল্যাণে কাজ করা। আল্লাহ যেন আমাদের তৌফিক দান করেন এবং দেশের উন্নতির জন্য আমরা সবাই একসঙ্গে দোয়া করি।

জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমি আজকের এই মঞ্চ থেকে বলতে চাই, আমরা শুধু আল্লাহর জন্যই একত্রিত হয়ে কাজ করছি এবং ভবিষ্যতেও তা করে যাব। আমাদের দেশে ১৮ কোটি মানুষের মধ্যে ৯০% মানুষ নিজেদের মুসলমান হিসেবে পরিচয় দেয়। তবে, বাকি ১০% বা তার কমবেশি যারা আছেন তারাও এই দেশের মানুষ।
জামায়াতের আমির আরও বলেন, ৫৪ বছরেও বাংলাদেশের মানুষ তাদের সঠিক মর্যাদা পায়নি। এর প্রধান দুটি কারণ হলো, এক হচ্ছে দুর্নীতি এবং দুই হচ্ছে দুঃশাসন। যেখানে আল্লাহর বিধান থাকবে না, সেখানে দুর্নীতি ও দুঃশাসন থাকবে।
তিনি বলেন, দুর্নীতি ও দুঃশাসন থেকে মুক্তির একমাত্র পথ হলো আল্লাহর রাস্তায় চলা। আমরা সারা দেশবাসীর সহযোগিতা চাই। যদি কেউ প্রশ্ন করেন, অমুসলিমদের কী হবে, তবে আমি বলব, মদিনায় যেভাবে বিধান ছিল, সেভাবে বাংলাদেশেও বিধান হবে। সব ধর্মের মানুষ তাদের নিরাপত্তা ও অধিকার ফিরে পাবে। এখানে মুসলিম-অমুসলিমের প্রশ্ন নয়, প্রশ্ন হলো রাষ্ট্রের সঙ্গে যদি কেউ বেইমানি বা গাদ্দারি করে, তাহলে ইসলামে তার জন্য কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে।
চরমোনাই পীরের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি রফিকুল ইসলাম খান, ঢাকা মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ছেলে মাসুদ সাঈদী ও স্থানীয় জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতারা।

×