ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

বিএনপিকে ভুলপথ থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান কৃষিমন্ত্রীর

আন্দোলনে সরকার পতন করা যাবে না

বিশেষ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২৩:৪২, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩

আন্দোলনে সরকার পতন করা যাবে না

ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক

আন্দোলন-সংগ্রাম, বিক্ষোভ-অবরোধ, অবস্থান কর্মসূচি পালন করে বর্তমান সরকারের পতন করা যাবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। বিএনপির উদ্দেশে তিনি বলেছেন, এগুলো করে আপনারা ব্যর্থ হবেন। আপনারা এ ভুল পথ থেকে বেরিয়ে আসুন। সোমবার আইডিইবিতে (ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ) ‘কৃষি বিপ্লব ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরাম ও আইডিইবি যৌথভাবে এ সেমিনারের আয়োজন করে। 
কৃষিমন্ত্রী বলেন, বিএনপি বলছে আগামী ১৫ দিন তারা প্রতিদিনই বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচি অব্যাহত রাখবে। এ হুমকিও দিচ্ছে, ঢাকা শহরে তারা অবস্থান নেবে এবং রাজধানীকে সারাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেবে।
সরকার পতনে গত ১৪ বছর বিএনপি সফল হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আপনারা আবার ব্যর্থ হবেন, আবারও চরম হতাশায় নিমজ্জিত হবেন। আমি বিনীতভাবে বলছি, আপনারা এ ভুল পথ থেকে বেরিয়ে আসুন। আন্দোলন, সংগ্রাম, বিক্ষোভ, অবরোধ, অবস্থান করে এ সরকারের পতন করতে পারবেন না।’ 
তিনি বলেন, গত ১৪ বছরে পারেননি, আগামী এক-দেড় মাসেও পারবেন না। আপনারা ব্যর্থ হবেন। ব্যর্থতার গ্লানি নেওয়ার চেয়ে আমার মনে হয় আপনাদের উচিত হবে নির্বাচনে আসা এবং জনগণের রায় মাথা পেতে মেনে নেওয়া।’
তিনি বলেন, আমরা চাই বাংলাদেশে একটি অত্যন্ত সক্ষম বিরোধী দল থাকুক। এটা যে কোনো দেশের সরকারের জবাবদিহিতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, সারা পৃথিবীতে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রেফারেন্স কান্ট্রি, উন্নয়নের রোল মডেল। ক্লিনটন (সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট) থেকে শুরু করে যত প্রেসিডেন্ট আছে,  সবাই বাংলাদেশকে রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করে, সকল ফোরামে বাংলাদেশ প্রশংসিত। আমরা উন্নয়নের মহাড়কে, সেটিকে আরও গতিময় করতে চাই। এরজন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা লাগবে। দেশে একটি শান্তিময় পরিবেশ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
বর্তমানে সরকারের আমলে কৃষি উৎপাদনে বিরাট পরিবর্তন এসেছে জানিয়ে মন্ত্রী জানান, কৃষিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেশ পরিচালনা করা হচ্ছে। সার্বিক উন্নয়নে আগামীতেও কৃষি অনেক গুরুত্ব রাখবে। 
সেমিনারে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেন, এ দেশের দিন বদলের মূল নায়ক কৃষক। কৃষি আমাদের রক্ষাকবচ। উন্নত বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে কৃষি ভূমিকা পালন করছে। কৃষি সাফল্য না দেখালে আজকে মূল্যস্ফীতি আরও অনেক বাড়ত।
বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরামের সভাপতি কাওসার রহমানের সঞ্চালনায় সেমিনারে স্বাগত বক্তব্যে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন বলেন, জলবায়ুর প্রভাবে সংকট দেখা দিয়েছে। এটা কীভাবে উত্তরণ করা যায়, আমরা সেদিকে জোর দিতে চাই।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন আইডিইবির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি প্রকৌশলী মো. ফজলুর রহমান খান। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক (ডিজি) ড. মো. শাহজাহান কবীর বলেন, আমরা ৫২ বছরে ১১৩টি ধানের জাত উদ্ভাবন করেছি। ২০১০ থেকে এ পর্যন্ত দেশে ৪০ লাখ টন খাদ্যশস্য উৎপাদন বেড়েছে। খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়ায় কমছে দারিদ্র্য। তিনি বলেন, গ্রীন হাউস গ্যাস নিয়ে ভ্রান্ত ধারণা আছে। কৃষি গ্রীন হাউস গ্যাস নিঃসরণ করার চেয়ে অনেক বেশি শোষণ করে।
এতে আরও বক্তব্য রাখেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) কৃষিবিদ তাজুল ইসলাম পাটোয়ারী, বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. মো. ইকরাম-উল-হক, এফএও’র কৃষি বিশেষজ্ঞ মঈন উস সালাম, ক্লাইমেট স্মার্ট এগ্রিকালচার অ্যান্ড ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট প্রকল্পের পরিচালক খন্দকার মু. রাশেদ ইফতেখার, ক্লাইমেট স্মার্ট প্রযুক্তির মাধ্যমে খুলনা কৃষি অঞ্চলের জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন প্রকল্পের পরিচালক শেখ ফজলুল হক মনি, বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হক। সেমিনার শেষে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন আইডিইবির সাধারণ সম্পাদক মো.শামসুর রহমান।

×