ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

রাজনীতির ‘রহস্য পুরুষ’ সিরাজুল আলমের শারীরিক অবস্থার অবনতি

প্রকাশিত: ২১:৪৪, ৪ জুন ২০২৩

রাজনীতির ‘রহস্য পুরুষ’ সিরাজুল আলমের শারীরিক অবস্থার অবনতি

সিরাজুল আলম খান।

বাংলাদেশের রাজনীতির ‘রহস্য পুরুষ’ হিসেবে পরিচিত সিরাজুল আলম খানের (দাদাভাই) শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নিবির পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

রবিবার (৪ জুন) সন্ধ্যায় আইসিইউ'র সামনে কথা হয় তার ব্যক্তিগত সহকারী মো. রুবেল এ তথ্য জানান।

তিনি জানান, গত বৃহস্পতিবার বিকেলে তাকে নতুন ভবনের কেবিন থেকে আইসিইউতে স্থানান্তর করেন চিকিৎসকরা। আইসিইউ'তে আনার পর একদিন তাকে লাইফ সাপোর্ট দিয়ে রাখা হয়। তবে এখন লাইফ সাপোর্ট ছাড়াই রাখা হয়েছে।

রুবেল জানান, কথা বলতে পারছেন না তিনি। ইশারায় ইঙ্গিতে বুঝাচ্ছেন। মুখে খাবারও খেতে পারছেন না। নাক দিয়ে রাইস টিউব দিয়ে তাকে তরল খাবার খাওয়ানো হচ্ছে।

ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক জানান, চারদিন আগে তাকে হাসপাতালের পুরাতন ভবনের ৪র্থ তলায় জেনারেল আইসিইউ'তে নেওয়া হয়েছে। তার চিকিৎসার জন্য যেই মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে সেই বোর্ডের চিকিৎসকরা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষনে রাখছেন। তবে তার শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত।

এর আগে গত ২০ মে বার্ধক্যজনিত কারণে ঢাকা মেডিকেলর নতুন ভবনের কেবিনে ভর্তি করা হয় তাকে।

৮০ বছর বয়সী সিরাজুল আলম খান উচ্চ রক্তচাপসহ দীর্ঘদিন ধরে নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। এর আগে তার হার্টের অপারেশন হয়েছিল। এ ছাড়া কোমর ভেঙে যাওয়ায় হিপ ট্রান্সপ্লান্ট করতে হয়েছে। দীর্ঘদিন যুক্তরাষ্ট্রে কাটিয়ে আসা চিরকুমার সিরাজুল আলম খান রাজধানীর কলাবাগানে স্বজনদের সঙ্গে বসবাস করছেন।

ষাটের দশকে স্বাধীন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ছাত্রলীগের যে ‘নিউক্লিয়াস’ আলোচনায় আসে, তার উদ্যোক্তা ছিলেন সিরাজুল আলম খান। তাকে সবাই ‘দাদা ভাই’ নামেই ডাকত। স্বাধীনতার পর আওয়ামী লীগ ভেঙে জাসদ গঠনের উদ্যোক্তাও ছিলেন সিরাজুল আলম খান। সিরাজুল আলম খান কখনও জনসম্মুখে আসেন না এবং বক্তৃতা-বিবৃতি দেন না। আড়ালে থেকেই তৎপরতার জন্য তাকে ঘিরে রহস্যের সৃষ্টি হয়।

১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর আন্দোলন-সংগ্রামের রূপ ও চরিত্র বদলে যায়। গড়ে ওঠে একমাত্র বিরোধী দল জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ। ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরে অনুষ্ঠিত 'অভ্যুত্থান’ বাংলাদেশের জাতীয় ইতিহাসে এক ঘটনা। জাসদ গঠন এবং ‘অভ্যুত্থান’ এর নেপথ্য পরিকল্পনাকারী ছিলেন সিরাজুল আলম খান।

সিরাজুল আলম খান ভিন্ন ভিন্ন তিন মেয়াদে প্রায় সাত বছর কারাভোগ করেন। কনভোকেশন মুভমেন্টের কারণে ১৯৬৩ সালের শেষদিকে গ্রেপ্তার হন। ১৯৭৬ সালে জিয়ার আমলে আবার গ্রেপ্তার এবং ১৯৭৯ সালে মুক্তি পান। ১৯৯২ সালে বিদেশ যাবার প্রাক্কালে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে ২৪ মার্চ সিরাজুল আলম খানকে গ্রেপ্তার করা হলে ৪ মাস পর হাইকোর্টের রায়ে মুক্তি পান।

এমএইচ

×