ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয় সরকারের সামগ্রিক ব্যর্থতা ॥ ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২৩:৫৭, ৫ অক্টোবর ২০২২

জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয় সরকারের সামগ্রিক ব্যর্থতা ॥ ফখরুল

জাতীয় গ্রিড বিপর্যয়ে সারাদেশ

সরকারের ব্যর্থতার কারণে মঙ্গলবার জাতীয় গ্রিড বিপর্যয়ে সারাদেশ অন্ধকারাচ্ছন্ন ছিল বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, উন্নয়নের নামে ক্ষমতাসীন সরকারের দুর্নীতির কারণে জনগণকে এভাবে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বুধবার দুপুরে রাজধানীর আসাদগেটে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর বাসায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ অভিযোগ করেন।
ফখরুল বলেন, এ সরকারের কোন জবাবদিহিতা নেই। জনগণের প্রতি তাদের কোন দায় নেই, দায়িত্বশীলতার ব্যাপার নেই। জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয় তারই একটা প্রমাণ। এ সরকার এখন একটা বোঝা হয়ে দাঁড়িয়ে গেছে। এই সরকারকে না সরালে এই জাতির অস্তিত্ব টিকে থাকা মুশকিল হবে। এখান থেকে মুক্তি পাওয়ার একটাই রাস্তা, এ সরকারের পদত্যাগ ও কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে একটা নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। এছাড়া কোন বিকল্প পথ নেই।
ফখরুল বলেন, আমরা মনে করি যে, জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয় সরকারের সামগ্রিক ব্যর্থতা। মঙ্গলবারের গ্রিড বিপর্যয়ে দীর্ঘ সময় বিদ্যুত না থাকায় ব্যাপক সমস্যা হয়েছে। এ কারণে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ থাকে, বিদ্যুতের মাধ্যমে যেসব কল-কারখানা চলে তা বন্ধ হয়ে যায়। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় ব্যাঘাত ঘটে, কৃষি জমিতে সেচের ব্যবস্থা বন্ধ থাকে, সবমিলিয়ে জাতি অসহনীয় পরিস্থিতি অনুভব করেছে। সড়কে যানজটের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, এমন অবস্থা হয়েছে যে, টঙ্গী থেকে উত্তরা পর্যন্ত আসতে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা সময় লাগে। যানজট একটা ভয়াবহ সমস্যা হয়ে গেছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বর্তমান সরকার উন্নয়নের নামে চিৎকার-চেঁচামেচি করছে অনেক বেশি। বলা হচ্ছে আমরা নাকি বিদ্যুতে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে গেছি। প্রয়োজনের তুলনায় বিদ্যুতের উৎপাদন বেশি। আর মঙ্গলবারের বিদ্যুত না থাকার বিষয়টি হচ্ছে অস্বাভাবিক একটি ব্যাপার।

কিন্তু কি করে হঠাৎ করে সারাদেশের বেশিরভাগ এলাকায় বিদ্যুত চলে যায় ? কি করে প্রায় ৮ ঘণ্টা লোডশেডিং চলে। এর মাধ্যমে বোঝা যায় সরকার বিদ্যুত উৎপাদনের নাম করে বহু প্রজেক্ট করে টাকা-পয়সা বানিয়েছে। কিন্তু দেশের মানুষকে দুর্ভোগ থেকে মুক্ত করতে পারেনি।
ফখরুল বলেন, বিদ্যুত উৎপাদনের নামে সরকার টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিয়েছে। এ খাতে এতগুলো প্রজেক্ট নেয়ার মূল উদ্দেশ্য ছিল দুর্নীতি। এ কারণে জনগণের দুর্ভোগ লাঘব হয়নি। এ ছাড়া সরকার অপরিকল্পিতভাবে পাওয়ার স্টেশন করেছে। এ কারণে ভবিষ্যতে আবারও বিপর্যয় হবে। এ কারণে জনগণের দুর্ভোগ বাড়বে।
দেশের মানুষকে তথ্য পাওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, তথ্য না দেয়ার ব্যাপারে যে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে সেটি একটি ভয়াবহ ব্যাপার। আমরা বলছি, সরকার কর্তৃত্ববাদী এটা তার বহির্প্রকাশ। এ সরকার দেশের মানুষকে আরও নিয়ন্ত্রণের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। তারা এভাবে দেশকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করবে, দেশের মানুষকে তথ্য থেকে বঞ্চিত করবে।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।
সাবেক বিদ্যুত প্রতিমন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু জানান, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে বিদ্যুত খাত একবারে প্রাইভেটাইজেশন করা যাবে না। করলে সাধারণ মানুষের জন্য প্রাইজ ঠিক করা কঠিন হয়ে যাবে। আমরা মিক্সড করব। আমাদের যে পলিসি ছিল ৩০ ভাগ বেসরকারী এবং ৬০ ভাগ সরকারের থাকবে, এভাবে আমরা বিদ্যুতের উন্নয়ন করব। এই উন্নয়নের সঙ্গে ট্রান্সমিশন ও ডিসট্রিবিউশনটাও সমন্বয় করব। যাতে কোন সমস্যা না হয়।
নেতাকর্মীদের ওপর এত নির্যাতন নিপীড়নের পরও বিএনপি জেগে উঠছে- রিজভী ॥ সরকার নেতাকর্মীদের ওপর এত নির্যাতন নিপীড়নের পরও বিএনপি জেগে উঠছে বলে জানিয়েছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বুধবার দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ‘বিশ্ব শিক্ষক দিবস’ উপলক্ষে ‘শিক্ষক কর্মচারী ঐক্য জোট’ আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এ কথা জানান।
রিজভী বলেন, বিএনপির বিরুদ্ধে সরকার প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে পড়েছে অভিযোগ করে রিজভী বলেন, এ বিএনপিকে কবরে পাঠাতে চাচ্ছে কিন্তু তারপরও বিএনপি জেগে উঠছে। তিনি বলেন, দেশের কিছু বুদ্ধিজীবীও বিএনপির বিরুদ্ধে তাদের মতো করে কোরাস গাইছেন। এখন দেখছি সরকারের পক্ষে ছাফাই গাইছেন সুলতানা কামালের মতো একজন মানবাধিকার কর্মী। বিদেশী একটি পত্রিকায় তিনি সাক্ষাতকার দিয়েছেন। সরকারের প্রশংসা সুলতানা কামাল ও মুনতাসির মামুন ছাড়া আর কারও কণ্ঠ থাকবে না।
আয়োজক সংগঠনের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ সেলিম ভূইয়ার সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু প্রমুখ।
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সমাবেশ ৮ অক্টোবর ॥ ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির পল্লবী জোনের সমাবেশ কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হবে ৮ অক্টোবর শনিবার। বিএনপি কার্যালয় থেকে জানানো হয়, পূর্বনির্ধারিত এ সমাবেশটি হওয়ার কথা ছিল ১৫ সেপ্টেম্বর। পরে তা পিছিয়ে প্রথমে ১ অক্টোবর ও পরে ৬ অক্টোবর করা হয়। কিন্তু আজ ৬ অক্টোবর বিকেল ৩টায় নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে পূর্বনির্ধারিত শোক র‌্যালি কর্মসূচী থাকার কারণে পল্লবী জোনের বিএনপির সমাবেশ ৮ অক্টোবর করার সিদ্ধান্ত হয়।

×