ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

জাপা (জাফর) ও এলডিপির সঙ্গে সংলাপ

খালেদার নেতৃত্বেই হবে যুগপৎ আন্দোলন ॥ ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২৩:৩৯, ৩ অক্টোবর ২০২২

খালেদার নেতৃত্বেই হবে যুগপৎ আন্দোলন ॥ ফখরুল

ফখরুল ইসলাম আলমগীর

বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বেই সরকারবিরোধী যুগপৎ আন্দোলন হবে বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, এ আন্দোলনের মাধ্যমেই বর্তমান সরকারকে হটিয়ে দেশে সত্যিকারের গণতান্ত্রিক ও জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা হবে। সোমবার দুপুরে বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে ২০ দলীয় জোটের শরিক দল জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) সঙ্গে দ্বিতীয় দফা সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এ কথা জানান।
ফখরুল জানান, আমাদের আন্দোলন চলা অবস্থাতেই সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সরকারবিরোধী সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে দ্বিতীয় দফা সংলাপ শেষ করে বিএনপি যুগপৎ আন্দোলন শুরু করবে। যুগপৎ আন্দোলনের জন্য আমাদের নেতা আগেই ঘোষণা করেছি, বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াই আমাদের নেত্রী। তার অবর্তমানে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আমাদের নেতা।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা গণআন্দোলনের রূপরেখা নির্ধারণ করার বিষয় নিয়ে দ্বিতীয় দফায় মোস্তফা জামাল হায়দারের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির সঙ্গে আলোচনা করেছি। আমাদের দাবিনামার মধ্যে যেটা কমন সেটা হচ্ছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এই সরকারের পদত্যাগ, বর্তমান সংসদ বাতিল করতে হবে এবং একটা তত্ত্বাবধায়ক সরকার বা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের হাতে তাদের ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।

এর পর একটা নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের পর ওই কমিশনের অধীনে একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান ও  খালেদা জিয়াসহ নেতাকর্মীদের মুক্তি। এসব দাবি আদায়ের জন্য আন্দোলন করার বিষয়ে সংলাপে আমরা একমত হয়েছি। তাই এই দাবিগুলোতে আমরা যুগপৎ আন্দোলন শুরু করব। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শেষ করেই আমরা আন্দোলন শুরু করব।

সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে আন্দোলনের আগে সবাইকে একত্রিত করা। আমরা সেই পথে অনেকখানি অগ্রসর হয়েছি। আমরা আওয়ামী লীগবিরোধী সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনায় সফল হয়েছি। আমি বিশ্বাস করি, সকলের ঐক্যবদ্ধ এই আন্দোলন-সংগ্রামে আমরা জয়যুক্ত হবই।
দ্বিতীয় দফা সংলাপে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দারের নেতৃত্বে দলটির ৯ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নেন। প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন- ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব আহসান হাবিব লিঙ্কন, প্রেসিডিয়াম সদস্য নওয়াব আলী আব্বাস, মাওলানা রুহুল আমীন, সেলিম মাস্টার, কেন্দ্রীয় নেতা হান্নান আহমেদ খান, এএসএম শামীম, কাজী মোঃ নজরুল ও গোলাম মোস্তফা। আর বিএনপির পক্ষে ছিলেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও  দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলম খান।
এদিকে সোমবার সন্ধ্যায় এলডিপির চেয়ারম্যান অলি আহমেদের সঙ্গে সংলাপ করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল। এর আগে দ্বিতীয় দফা সংলাপের প্রথম দিন রবিবার বিকেলে ২০ দলীয় জোটের শরিক দল কল্যাণ পার্টির সঙ্গে সংলাপ করে বিএনপি। এর আগে গত ২৪মে সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রথম দফা সংলাপ শুরু করে বিএনপি। প্রথম দফায় ২৩টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে দলের সিনিয়র নেতারা।  
বিভাগীয় নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় ॥ পূর্বঘোষিত গণসমাবেশ কর্মসূচী সফল করতে দ্বিতীয় দিনের মতো বিভাগীয় নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সোমবার বিকেলে বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে রাজশাহী, রংপুর ও কুমিল্লা বিভাগের বিএনপি নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিনি। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

এ ছাড়া বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক, সহ-সাংগঠনিক ও সংশ্লিষ্ট মহানগর ও জেলা পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এর আগে শনিবার খুলনা ও চট্টগ্রাম বিভাগের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আওয়ামী লীগ বিরোধী দলে থাকলে গণতন্ত্রের কথা বলে- রিজভী ॥ আওয়ামী লীগ যখন বিরোধী দলে থাকে তখন গণতন্ত্রের কথা বলে কিন্তু যখন ক্ষমতায় আসে তখন তা ভুলে যায় বলে মন্তব্য করেছেন, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। সোমবার দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ইডেন কলেজসহ সারাদেশে নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে মহিলা দল আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রিজভী বলেন, অনেকেই বলেন, আগের আওয়ামী লীগ আর নেই। কিন্তু ১৯৭২ থেকে ’৭৫ সাল পর্যন্ত আমরা দেখেছি লাল বাহিনী, নীল বাহিনী, সবুজ বাহিনী, রক্ষী বাহিনী।  আর এখন আমরা দেখছি নানা বাহিনী, যেমন-ছাত্রলীগ বাহিনী, যুবলীগ বাহিনী। সঙ্গে আছে পুলিশ বাহিনী ও র‌্যাব বাহিনী। তিনি বলেন, দেশকে এক ভয়াবহ অন্ধকারে নিমজ্জিত করেছে বর্তমান সরকার। এর পরিণাম যে কি ভয়াবহ হবে তারা টের পাচ্ছেন না।
মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, মহিলা দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান প্রমুখ।

×