ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৯ মে ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

যুদ্ধ নাকি মানবতার বিপর্যয়

সাবরিনা নিশি

প্রকাশিত: ২০:০০, ১৬ মে ২০২৫

যুদ্ধ নাকি মানবতার বিপর্যয়

যুদ্ধ মানে ধ্বংস, যুদ্ধ মানে কান্না, যুদ্ধ মানেই অর্থনৈতিক মন্দা। যুদ্ধ মানে বেসামরিক মানুষের কষ্ট, আহাজারি এবং অকাল মৃত্যু। যুদ্ধ মানেই ফোঁটার আগে ঝরে যাওয়া হাজারো ফুল। যুদ্ধ মানেই মানবতার বিপর্যয়।
বর্তমান পৃথিবীতে তাকালেই চারদিকে শুধু যুদ্ধের দামামা দেখা যাচ্ছে। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ প্রায় ৪ বছর ধরে চলছে। ফিলিস্তিন-ইসরাইল যুদ্ধ প্রায় ২ বছর হতে যাচ্ছে। সম্প্রতি ইন্ডিয়া-পাকিস্তান বিশ্বের ২টা পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে হামলা-পাল্টাহামলা চলছে। ইরান-আমেরিকার মধ্যে সম্পর্ক একদম শেষ পর্যায় দারায় আছে, যে কোনো সময় হামলা হতে পারে ইরানে। এত সংকটের মধ্য দিয়ে চলতেছে পৃথিবী। যার ফলে মুদ্রাস্ফীতি বেড়েই চলছে, বেড়ে যাচ্ছে দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর মূল্য। যার ফলে সমস্যায় পড়তেছে নিম্ন আয়ের মানুষ।  
গৃহযুদ্ধে জর্জরিত সিরিয়া-মিয়ানমারের কথা না বললেই নয়। বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী অবস্থান করছেন, যাদের বেশির ভাগই ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের কারণে পালিয়ে এসেছেন। এই সময়ে প্রায় ৭,৫০,০০০ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেন ।এর আগে থেকেই প্রায় ৩,০০,০০০ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অবস্থান করছিলেন, ফলে মোট সংখ্যা ১০ লাখেরও বেশি হয়েছে। এই শরণার্থীদের অধিকাংশ কক্সবাজার জেলার ৩৩টি ঘনবসতিপূর্ণ ক্যাম্পে বসবাস করছেন, যার মধ্যে কুতুপালং ক্যাম্প বিশ্বের বৃহত্তম শরণার্থী শিবির হিসেবে পরিচিত।
এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সরকার ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো মানবিক সহায়তা প্রদান করে যাচ্ছে, তবে দীর্ঘমেয়াদে এই সংকটের সমাধান এখনও অনিশ্চিত।
ইসরাইল-ফিলিস্তিন যুদ্ধে দখলদার ইসরাইলের নির্মম গণহত্যা কথা আলাদা ভাবে না বললেই নয়। ইতিহাসে নির্মম গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরাইল যাকে নিরলসভাবে সমর্থন এবং সব ধরনের অস্ত্র সহায়তা দিয়ে আসতেছে মানবতার ফেরিওয়ালা খ্যাত আমেরিকাসহ পশ্চিমা কিছু দেশ। ৫৩,০০০ হাজারও অধিক মানুষের মৃত্যু ১,৫০০০০ হাজারও অধিক মানুষ আহত। খাদ্য, পানি বিদ্যুৎসহ সকল ধরনের সুবিধা পৌঁছাতে না দেয়া। হাসপাতালগুলোতো নির্মম বিমান হামলা যা ইতিহাস বিরল।
পৃথিবীতে এত সংকটের মধ্যেও কিছু দেশ শান্তি প্রতিষ্ঠার বিপরীতে, যুদ্ধে বিভিন্ন ভাবে ইন্ধন যোগাচ্ছে নিজস্ব সার্থ হাসিলের জন্য। অস্ত্র ব্যবসা জমজমাট করতে উস্কানি দিচ্ছে যুদ্ধে জড়িয়ে যাচ্ছে পরোক্ষ-প্রত্যক্ষভাবে। যার ফলে পৃথিবী পড়তেছে হুমকির মুখে। পৃথিবীতে সৃষ্টি হচ্ছে মানবতার বিপর্যয়।
বর্তমান বিশ্বে মানবাধিকার ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের কথা যতই বলা হোক না কেন, যুদ্ধ যেন এক ভয়ংকর দানবের মতো ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাই প্রয়োজন এখনই যুদ্ধের ভাষা ভুলে মানবতার পক্ষে দাঁড়ানো। সংলাপ, আলোচনার মাধ্যমে বিরোধ মেটানোর সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে।
শেষ কথায় বলা যায়, যুদ্ধ কোনো সমাধান নয় এটি মানবতারই পরাজয়। পৃথিবীকে বাসযোগ্য করে তোলার জন্য আমাদের দরকার শান্তি, সহনশীলতা ও মানবিক চেতনার জয়।
ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট
ইসলামিক ইউনিভার্সিটি কুষ্টিয়া ও
সদস্য, বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরাম ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা

প্যানেল

×