
ছবি: সংগৃহীত
রাশিয়ার একটি গোপন গোয়েন্দা অভিযানের তথ্য ফাঁস করার চেষ্টা করার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (এফবিআই) এক সাবেক এজেন্ট। তিনি বর্তমানে ১ লাখ ডলারের বিনিময়ে জামিনে মুক্ত আছেন। অভিযুক্ত এফবিআই এজেন্ট রাশিয়ার গোয়েন্দা তৎপরতা শনাক্তে বিশেষভাবে দক্ষ ছিলেন এবং প্রায় দুই দশক ধরে দেশের জন্য কাজ করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রে সক্রিয় স্লিপার সেল (গোপনে চালানো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড) ও ভুয়া তথ্য প্রচারকারী নেটওয়ার্ক উন্মোচনে তার প্রশংসনীয় ভূমিকা ছিল।
আইনি নথি ও অভ্যন্তরীণ সূত্র অনুযায়ী, তিনি রুশ সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা GRU-এর একটি অভিযান সম্পর্কে তথ্য পান, যেখানে দাবি করা হয়—তারা মার্কিন প্রযুক্তি জগতের দুই প্রধান ব্যক্তিত্ব ইলন মাস্ক এবং পিটার থিয়েলকে প্রভাবিত করার গোপন চেষ্টা চালিয়েছে।
তবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে না দেখায়, এফবিআই এজেন্ট নিজেই অপ্রাতিষ্ঠানিকভাবে তথ্য প্রকাশের চেষ্টা করেন। মার্কিন বিচার বিভাগ একে ‘গোপন নথি বেআইনিভাবে ফাঁস’ বলে অভিযোগ আনে।
এই ঘটনায় স্বচ্ছতা ও জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত মহলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের সতর্ক সংকেত দমন করা হলে, বিদেশি প্রভাব বিস্তারের পথ আরও প্রশস্ত হয়—যা এফবিআই-এর মূল দায়িত্বের পরিপন্থী।
মাস্ক-পুতিন সম্পর্ক নিয়ে বিতর্ক
জার্মান টিভি চ্যানেল ‘ZDF’ সম্প্রতি এক প্রামাণ্যচিত্রে দাবি করে, মাস্ক ২০২২ সাল থেকেই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রাখছেন। মার্কিন গোয়েন্দা সূত্রে উদ্বেগ রয়েছে যে, এই যোগাযোগ কেবল ব্যবসায়িক সীমায় থেমে নেই—বরং এতে ভূ-রাজনৈতিক সমন্বয়ের আভাস থাকতে পারে, বিশেষ করে মাস্কের মালিকানাধীন স্টারলিঙ্কের মতো গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামোর উপর ভিত্তি করে।
মাস্কের প্রভাব দেশের অভ্যন্তরেও বাড়তে থাকে, বিশেষ করে ২০২৪ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রচারে ২৭৭ মিলিয়ন ডলারের অনুদানের পর, যা যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় একক রাজনৈতিক অনুদান। ট্রাম্প পুনরায় নির্বাচিত হওয়ার পর, মাস্ককে ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি (DOGE)’-এর প্রধান করা হয়।
পিটার থিয়েলও নজরে
এফবিআই এজেন্টের নথিতে সিলিকন ভ্যালির প্রভাবশালী এক বিলিয়নিয়ার পিটার থিয়েলের নামও রয়েছে, যিনি ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ ও প্রযুক্তি বিনিয়োগে সক্রিয় এক ধনকুবের। যদিও তার বিরুদ্ধে কোনো সরাসরি প্রমাণ এখনো প্রকাশ হয়নি, তবে বিদেশি প্রযুক্তি প্রকল্পে তার সম্পৃক্ততা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিশ্লেষকদের মতে, নিরাপত্তা হুমকির উৎস এখন শুধু বিদেশি হ্যাকার বা গুপ্তচর নয়—বরং কিছু প্রভাবশালী প্রযুক্তি ধনকুবের ও স্বৈরতান্ত্রিক রাষ্ট্রের মধ্যে বেড়ে ওঠা সম্পর্কও সমান উদ্বেগের কারণ।
সূত্র: কিয়েভ ইনসাইডার
রাকিব