
ছবি : সংগৃহীত
ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের অবৈধ অভিবাসনবিরোধী কঠোর অবস্থানের মধ্যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত ভারতীয় নাগরিকদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতা জারি করেছে ভারতে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস। দূতাবাস জানিয়েছে, মার্কিন ভিসার অনুমোদিত মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর যদি কেউ দেশটিতে অবস্থান করেন, তবে তাকে দেশে ফেরত পাঠানো হতে পারে এবং ভবিষ্যতে মার্কিন ভ্রমণে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন হতে পারেন।
দূতাবাসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে:
"যদি আপনি যুক্তরাষ্ট্রে আপনার অনুমোদিত অবস্থানকাল অতিক্রম করেন, তবে আপনাকে ফেরত পাঠানো হতে পারে এবং ভবিষ্যতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণের ক্ষেত্রে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন হতে পারেন।"
এই সতর্কতা মূলত সেই ভারতীয়দের জন্য প্রযোজ্য, যারা কাজের ভিসা, ছাত্র ভিসা, পর্যটক ভিসাসহ বিভিন্ন সীমিত মেয়াদের ভিসায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করছেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের অন্যতম আলোচিত ও বিতর্কিত নীতি হচ্ছে অভিবাসন বিরোধী কৌশল। তিনি তার প্রথম দিনেই একটি নির্বাহী আদেশ জারি করে ১৪তম সংশোধনীর ‘সিটিজেনশিপ ক্লজ’-এর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়েছিলেন, যা যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারী প্রায় সকলকেই স্বয়ংক্রিয় নাগরিকত্ব প্রদান করে। যদিও তার এই আদেশ বর্তমানে আইনি প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়েছে, তবুও প্রশাসন অবৈধ অভিবাসীদের আটক, ফেরত পাঠানো এবং স্বেচ্ছা-প্রত্যাবাসনের প্রতি উৎসাহিত করছে।
নতুন অভিবাসন আইন অনুযায়ী, এখন থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ৩০ দিনের বেশি অবস্থানকারী সকল বিদেশিকে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে নিবন্ধন করতে হবে।
সম্প্রতি দুটি ভারতীয় নাগরিককে ঘিরে ঘটে যাওয়া বিতাড়নের ঘটনা সংবাদ শিরোনাম হয়েছে।
প্রথমটি, রঞ্জনী শ্রীনিবাসন, যিনি কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন পিএইচডি ছাত্রী ছিলেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি একটি ফিলিস্তিন-পন্থী প্রতিবাদে অংশগ্রহণ করেছিলেন, যদিও তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেন। তার ভিসা বাতিল করা হলে তিনি কানাডায় পালিয়ে যান। মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ তাকে একটি উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেছে, কিভাবে গ্রেফতার এড়াতে ‘স্বেচ্ছা-প্রত্যাবাসন’ করা উচিত।
দ্বিতীয় ঘটনা বাদর খান সুরি, জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন গবেষক। তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল হামাসের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে, কারণ তার স্ত্রী হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়ার সাবেক উপদেষ্টা আহমেদ ইউসুফের কন্যা। তবে আদালত তার মুক্তি দেয়, কারণ ট্রাম্প প্রশাসন প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয় যে খান সুরি জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি।
এই সব পদক্ষেপ স্পষ্ট করে যে, ট্রাম্প প্রশাসন অবৈধ অভিবাসন মোকাবেলায় কঠোর অবস্থান নিচ্ছে এবং বিদেশি নাগরিকদের উদ্দেশ্যে স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে, নিয়ম না মানলে কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।
আঁখি