
প্রতীকী ছবি
মাছ ও মুরগির সমন্বিত ঘেরের কর্মচারিকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তার ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে হাত ও মুখ বেঁধে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে । এই ঘটনায় রবিবার (১৮ মে) রাতে সাতক্ষীরা সদর থানায় মামলা হয়েছে। ঘেরের কর্মচারীর নির্যাতিতা নারী (৪০) বাদী হয়ে তিন জনের নাম উল্লেখসহ আরও একজনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে সাতক্ষীরা সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নম্বর ৩৪/২০২৫। শুক্রবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে সাতক্ষীরা সদরের পায়রাডাঙা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। সোমবার বেলা ১১টায় পুলিশ এজাহার ভুক্ত একজন আসামি কে গ্রেফতার করেছে বলে নিশ্চিত করেছেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি শামিনুল হক ।
মামলার তথ্যানুযায়ী, খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার বরাতিয়া গ্রামের বাসিন্দা নিপীড়িত নারী জানান, তিনি একজন ধর্মান্তরিত নারী। বাপের বাড়ি পার্শ্ববর্তী জিয়েলতলা গ্রামে। বিয়ে করার পর স্বামীর সঙ্গে তিনি সাতক্ষীরা সদরের পায়রাডাঙা গ্রামের একটি মাছের ও সোনালী মুরগির সমন্বিত ঘেরে বাসা বানিয়ে কর্মচারি হিসেবে দু’জনে মাসিক ১৫হাজার টাকা বেতনে প্রায় সাত বছর যাবৎ বসবাস করে আসছেন। তার স্বামী ওই মাছের ঘেরের পাহারাদার। স্থানীয় কয়েকজন তাদেরকে বিনা টাকায় মুরগি দেওয়ার জন্য বিভিন্ন সময়ে চাপ সৃষ্টি করতো।
অন্তঃস্বতা ওই নারী আরও জানান, শুক্রবার রাতে তিনি ও তার স্বামী ঘেরের বাসায় শুয়েছিলেন। দিবাগত রাত দুটোর দিকে চারজনের একদল সন্ত্রাসী হাতে রাম দা নিয়ে তাদের ঘরে ঢোকে। এ সময় তার স্বামীর হাত, পা ও মুখ বেঁধে ফেলে তারা। এ সময় তারা বাক্সে রাখা তাদের বেতনের ৩৭হাজার টাকা, ১১আনা ওজনের এক জোড়া কানের সোনার দুল, ১০আনা ওজনের একটি সোনার আংটি ও খামারে ব্যবহৃত দুটি দা লুট করে।
পরে সন্ত্রাসীরা তাকে রান্না ঘরের দরজা খুলতে বাধ্য করে পালাক্রমে চারজন ধর্ষণ করে। এদের মধ্যে তিনি পায়রাডাঙা গ্রামের তৈয়ব আলীর ছেলে মনিরুল ইসলাম, রুহুল আমিনের ছেলে দেলোয়ার হোসেন ও লুৎফর রহমানের ছেলে শরিফুল ইসলামকে চিনতে পেরেছেন। চলে যাওয়ার আগে বিষয়টি কাউকে জানালে হত্যার হুমকি দিয়ে চলে যায়।
সাতক্ষীরা সদরের কাশেমপুরের রবিউল ইসলাম জানান, ঘেরের পাহারাদার ও এলাকাবাসীর মাধ্যমে ফোনে খবর পেয়ে তিনি পাহারাদারের স্ত্রীকে স্থানীয়দের সহায়তায় উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। নিপীড়িত নারী সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ ঘটনার খবর পেয়ে সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহীনুর চৌধুরী, থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শামিনুল হক, পুলিশ পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এদিকে পুলিশ সুপারসহ অন্যান্য আইন-শৃংখলা বাহিনীর কাছে দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের মাধ্যমে শাস্তির জোর দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী ও অসহায় ভুক্তভোগী পরিবার।
মুমু