
ছবি: সংগৃহীত
গাজার যুদ্ধবিধ্বস্ত ফিলিস্তিনিদের স্থায়ীভাবে লিবিয়ায় স্থানান্তরের পরিকল্পনা নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের উদ্যোগের খবরটি 'ভুয়া' বলে জানিয়েছে ত্রিপোলিতে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস। গত রোববার (১৮ মে) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (পূর্বে টুইটার) এক পোস্টে দূতাবাস জানায়, "গাজাবাসীদের লিবিয়ায় স্থানান্তরের কথিত পরিকল্পনা নিয়ে যে খবর প্রকাশিত হয়েছে, তা সত্য নয়।"
এর আগে, শুক্রবার (১৬ মে) এনবিসি নিউজ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে, যাতে বলা হয়, ট্রাম্প প্রশাসন গাজার প্রায় ১০ লাখ ফিলিস্তিনিকে স্থায়ীভাবে লিবিয়ায় সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে। প্রতিবেদনটি পাঁচটি সূত্রের বরাতে প্রকাশিত হয়, যাদের মধ্যে দুজন সরাসরি বিষয়টি জানেন এবং একজন সাবেক মার্কিন কর্মকর্তা রয়েছেন।
এদিকে, ত্রিপোলিভিত্তিক লিবিয়ার আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত জাতীয় ঐক্যের সরকার (GNU) এখনও এই প্রতিবেদন নিয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
গত জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর ট্রাম্প গাজার ফিলিস্তিনিদের অন্য দেশে সরিয়ে নেওয়ার একটি পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিলেন। তিনি মিশর ও জর্ডানের প্রতি গাজার বাসিন্দাদের আশ্রয় দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন, তবে দেশ দুটি এই আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে। পরবর্তীতে, মার্চে ট্রাম্প বলেছিলেন, "গাজা থেকে কোনো ফিলিস্তিনিকে কেউ সরিয়ে নেবে না।" তবে, পরের মাসে এপ্রিলে তিনি আবার ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে গাজা খালি করার কথা বলেন।
এই পরিকল্পনা নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। মিসর, জর্ডান, হামাসসহ বিভিন্ন পক্ষ এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে। তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যে, গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে নেওয়া হলে তাদের ফিরে আসার অধিকার হরণ করা হতে পারে। এছাড়া, জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা এই প্রস্তাবকে মানবাধিকার লঙ্ঘন হিসেবে বিবেচনা করছে।
এদিকে, ট্রাম্পের এই পরিকল্পনা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। বিশ্ব নেতারা এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। তারা গাজার জনগণের জোরপূর্বক স্থানান্তরের বিরোধিতা করে শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গাজা উপত্যকা দীর্ঘদিন ধরে ইসরাইলি অবরোধের অধীনে রয়েছে এবং সেখানে মানবিক সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। এমতাবস্থায়, ফিলিস্তিনিদের ভবিষ্যৎ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে উদ্বেগ ও আলোচনা অব্যাহত রয়েছে।
এসইউ